হাতির ভয়ে আধা পাকা ধান নিয়ে বড় বিপদে আছেন নালিতাবাড়ীর কৃষকেরা
Published: 28th, April 2025 GMT
‘আত্তি (হাতি) তিন দিন ধইরা জঙ্গলে আছে। দিনের বেলায় এক টিলা থাইকা আরেক টিলায় খাওনের খোঁজে ঘুইরা বেড়ায়। সইন্ধ্যা নামুনের লগে লগে ধান খাইতে খেতে নামবার চেষ্টা করে। ধান পাকতে আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগত। কিন্তু অহন আধা পাহা ধান না কাটলে সব তো হাতির পেডে যাইবো।’
গতকাল রোববার বিকেলে বন্য হাতির ভয়ে আধা পাকা ধান কাটার সময় আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বুরুঙ্গা গ্রামের কৃষক আবদুল কাদির (৬৫)। ৭৫ শতাংশ জমির আধা পাকা ধান ৫-৬ জন শ্রমিক নিয়ে কেটে বাড়ি নিয়ে গেছেন তিনি।
বন্য হাতির ভয়ে ফসল রক্ষায় আবদুল কাদিরের মতো উপজেলার সীমান্তবর্তী বুরুঙ্গা, কালাপানি ও বাতকুচি গ্রামের অর্ধশতাধিক কৃষক গত দুই দিনে খেতের অধিকাংশ আধা পাকা ফসল কেটে বাড়িতে নিয়ে গেছেন। খেতে কাঁচা ধান থাকায় অনেক কৃষক ফসল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন। তাঁরা ফসল রক্ষায় হাতি পাহারায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
বন বিভাগ, কৃষক ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী বাতকুচি, বুরুঙ্গা, কালাপানি গ্রামের ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা পাহাড়ের ঢালে প্রায় ২০০ একর জমিতে দেড় শতাধিক কৃষক বোরো ধান আবাদ করেছেন। ওই এলাকায় ধান পাকতে আরও এক-দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। কিন্তু গ্রামগুলোর সীমান্তবর্তী পাহাড়ি জঙ্গলে গত শুক্রবার থেকে ৩০-৩৫টি বন্য হাতির একটি দল অবস্থান করছে। শনি ও রোববার রাতে জঙ্গল থেকে হাতির দলটি ধান খাওয়ার জন্য সমতলে নেমে আসে। এ সময় এলাকাবাসী মশাল জ্বালিয়ে হইহুল্লোড় করে হাতির দলকে প্রতিরোধ করেন। পরে হাতির পালটি আবার জঙ্গলে চলে যায়।
বন্য হাতির ভয়ে ফসল রক্ষায় পাহারা দিচ্ছেন স্থানীয় একজন কৃষক। গতকাল বিকেলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী বুরুঙ্গা গ্রামে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র স ম ন তবর ত বন য হ ত র হ ত র ভয়
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।