নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদকে (২৪) দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি শামসুল হুদা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার আলম ও সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী এ সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী (২০) নেত্রকোনা শহরের বাসিন্দা। তাঁর সঙ্গে কলমাকান্দা উপজেলার এক ছাত্রের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি উভয়ের পরিবারের সিদ্ধান্তে তাঁদের বিয়ের দিনতারিখ ঠিক হয়। তাঁরা দুজন গত সোমবার দুর্গাপুরে ঘুরতে যান। ওই ছাত্রের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদের বন্ধুত্ব ছিল। তাঁর কথামতো তাঁরা সেখানে একটি হোটেলে ওঠেন। গতকাল বিকেলে ওই ছাত্র হোটেল থেকে বের হয়ে খাবার কিনতে যান। এ সময় তাঁর হবু স্ত্রী হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগে ফয়সাল তাঁর বন্ধু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশকে জানিয়ে দ্রুত তাঁকে গ্রেপ্তার করতে অনুরোধ জানান। পরে ফয়সাল ওই ছাত্রীর কক্ষে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। মেয়েটি বাধা দিলে তাঁকে মারধর করা হয়। পুলিশ ওই ছাত্রকে আটক করলে তিনি জানান, তাঁর হবু স্ত্রী হোটেলে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। পরে পুলিশ তাঁকে নিয়ে হোটেলের কক্ষে যায়। সেখান থেকে ওই মেয়েকে উদ্ধার এবং ফয়সালকে আটক করা হয়।

এ ঘটনায় সন্ধ্যায় মেয়েটি বাদী হয়ে ধর্ষণের অভিযোগে ফয়সালের বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে জানান দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান।

ওসি মাহমুদুল হাসান আজ বুধবার সকালে বলেন, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ছাত্রদল নেতা ফয়সালকে আদালতে নেওয়া হচ্ছে। মেয়েটির শারীরিক পরীক্ষার জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

এদিকে এ ঘটনার পর দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ এনে ফয়সালকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে দলের নেতা-কর্মীদের তাঁর সঙ্গে কোনো রকম সম্পর্ক না রাখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’

এর আগে গত ২৯ মার্চ দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পারভেজ মোশারফ এবং পৌর ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল রহমানের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক শৃঙ্খলাভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকায় দলীয় পদ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ওই ছ ত র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ