পৃথিবীর আরও অনেক দেশের মতো আমাদের দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘মা দিবস’। এই বিশেষ দিনটিকে সামনে রেখে, মাভক্ত তরুণদের জন্য হাজির করা হলো মাকে নিয়ে বানানো সর্বকালের সেরা পাঁচটি সিনেমা। অনলাইন অবলম্বনে হাজির করলেন ইমাম হোসেন মানিক
ম্যাক্সিম গোর্কির উপন্যাস অবলম্বনে
মাদার
কিংবদন্তি রাশিয়ান সাহিত্যিক ম্যাক্সিম গোর্কির বিখ্যাত উপন্যাস ‘মাদার’ বা ‘মা’ অবলম্বনে ১৯২৬ সালে একই শিরোনামে সিনেমাটি নির্মাণ করেন রাশিয়ান ফিল্মমেকার ভসেভোলোদ পুদোভকিন। জার শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ১৯০৫ সালে সংঘটিত রুশ বিপ্লবের প্রেক্ষাপটে এগিয়েছে এর কাহিনি। শ্রমিক ধর্মঘটকে ঘিরে পিতা ও পুত্র পরস্পরবিরোধী অবস্থান গ্রহণ করলে সংসার, সন্তান ও আদর্শ নিয়ে লড়াইরত এক মায়ের মহাকাব্যিক রূপায়ণ করা হয়েছে। উপন্যাসটি যাদের পড়া আছে, সিনেমাটি তাদের জন্য অনেক বেশি উপভোগ্য ও ভাবনা-জাগানিয়া হয়ে উঠতে পারে। বলে রাখি, সিনেমাটিতে মা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছেন কিংবদন্তি রাশিয়ান অভিনেত্রী ভেরা বারানোভস্কায়া।
অলিভ হিগিংসের উপন্যাস অবলম্বনে
স্টেলা ডালাস
আমেরিকান সাহিত্যিক অলিভ হিগিংস প্রাউটির ‘স্টেলা ডালাস’ উপন্যাস অবলম্বনে একই শিরোনামে ১৯৩৭ সালে এই ক্ল্যাসিক সিনেমাটি নির্মাণ করেন আমেরিকান ফিল্মমেকার কিং ভাইডোর। নাটকীয়তা ও রোমান্সে ভরপুর এই সিনেমাটি স্টেলাকে কেন্দ্র করে।
কেন্দ্রীয় চরিত্রের অধিকারিনী অনেকটা
পাগলাটে। এতে নাম ভূমিকায় প্রখ্যাত অভিনেত্রী বারবারা স্ট্যানউইকের অভিনয় এতটাই প্রাণবন্ত ছিল যে, প্রতিটি দৃশ্যে তাঁর আবেগকে মনে হয়েছে বাস্তব।
যারা ফিল্মপোকা, তারা পিসিতে হাইস্পিড ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে টরেন্ট
বা অন্যান্য মুভি ডাউনলোডের ওয়েবসাইট
থেকে ডাউনলোড করে এ সিনেমাটি দেখে
নিতে পারেন।
রাউল রুইজ পরিচালিত
কমেডি অব ইনোসেন্স
এ ছবির শুরুটাও নাটকীয়তা দিয়ে। সিনেমাজুড়ে একটি ছেলেকে নিয়ে দুই মায়ের কাড়াকাড়ি চলতে থাকে। দু’জনই ভালোবাসে ছেলেটিকে। পরবর্তী সময়ে ছেলেটি তার বন্ধুর সিদ্ধান্তে এক মায়ের ঘরে যায়। কেন সে বন্ধুর সিদ্ধান্ত বেছে নেয় এক মাকে? বন্ধুর সিদ্ধান্তটা তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ কি আর কোন মায়ের ঘরে যায়? আর অন্যমা-ই বা কী দোষ করলেন? যেই মায়ের ঘরে গেলো ছেলেটি সেই মাকে দেখতে চাইলে দেখে নিন ফরাসি এ সিনেমা। চিলিয়ান ফিল্মমেকার রাউল রুইজ পরিচালিত ছবিটি মুক্তি পায় ২০০০ সালে। এতে মা চরিত্রে ফরাসি অভিনেত্রী ইজাবেল হাইপারের অভিনয় অনেক দিন মনে রাখার মতো। আরেক মা চরিত্রে জ্যান বালিবাও করেছেন অনবদ্য অভিনয়।
প্যাট্রিক ডেনিসের উপন্যাস অবলম্বনে
আন্টি মাম
আমেরিকান সাহিত্যিক প্যাট্রিক ডেনিসের
বেস্টসেলিং উপন্যাস সিরিজ ‘আন্টি মাম’ অবলম্বনে একই শিরোনামে ১৯৫৮ সালে এই কমেডি ফিল্মটি নির্মাণ করেন আমেরিকান ফিল্মমেকার মরটন ডিকস্টা। এতে অনাথ ভাতিজাকে ঘিরে মাতৃত্ব উথলে ওঠে এক মায়ের। তার প্রতি যে মমত্ব থাকে এই আন্টি মায়ের, তা যে কোনো কল্পকাহিনিকেও হার মানাবে। কিন্তু বাবা ছেলের প্রতি আন্টির ভালোবাসা দেখে শেষ পর্যন্ত কি নিজের কাছে ধরে রাখতে পেরেছেন ছেলেকে? আন্টি মামের কাছে কি এমন জাদুর কাঠি; যা দিয়ে সব কাবু করতে থাকেন তিনি? জানতে হলে দেখুন সিনেমাটি। সিনেমাটিতে আন্টি মামের চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছেন আমেরিকান মঞ্চ ও চরচ্চিত্র অভিনেত্রী রোজালিন্ড রাসেল। এর জন্য অস্কার পুরস্কারে মনোনয়নও পান তিনি।
পেদ্রো আলমোদোভার
অল অ্যাবাউট মাই মাদার
সময়ের অন্যতম আলোচিত স্প্যানিশ-ফ্রেঞ্চ সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন স্প্যানিশ
ফিল্মমেকার পেদ্রো আলমোদোভার। এর কাহিনিও তাঁরই লেখা।
আধুনিক জীবনের ব্যক্তি স্বাধীনতার নানা
বিষয়আশয়কে ঘিরে এগিয়েছে এ সিনেমা। এর মা চরিত্রটি একজন সিঙ্গেল মাদার। একটি হাসপাতালে কাজ করেন তিনি। দেখভাল করেন লেখক হতে চাওয়া তাঁর কিশোর ছেলের। এক সময় নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে ছেলেটি। ফলে বাড়ে নানাবিধ ঝামেলা। তা ধরেই এগোতে থাকে সিনেমাটির কাহিনি।
১৯৯৯ সালে মুক্তি পাওয়া এ সিনেমায় মা চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছেন আর্জেন্টিনার অভিনেত্রী সিসিলা রথ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র ম ণ কর আম র ক ন চর ত র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি