ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে পরাজিত করতে এবং গাজায় অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাপক আক্রমণ শুরুর ঘোষণা দিয়েছে। শনিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী তাদের হিব্রু এক্স অ্যাকাউন্টে এ তথ্য জানিয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ‘অপারেশন গিডিয়নস রথ’ এর জন্য সেনাদের জড়ো করেছে যাতে উপত্যকার ‘কৌশলগত এলাকা’ দখল করা যায়।

হামাস পরিচালিত বেসামরিক প্রতিরক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের ইংরেজি ভাষার এক্স অ্যাকাউন্টে বলেছে, “হামাস আর হুমকি না হওয়া এবং আমাদের জিম্মিদের বাড়িতে না পাওয়া পর্যন্ত” অভিযান বন্ধ করা হবে না এবং ২৪ ঘন্টার মধ্যে “গাজা উপত্যকাজুড়ে ১৫০ টিরও বেশি সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে।”

যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করার এবং অবরোধ অবসানের জন্য ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজায় বোমাবর্ষণ তীব্র করেছে এবং সীমান্তে সাঁজোয়া বাহিনী গড়ে তুলেছে। 

টাইমস অফ ইসরায়েল জানিয়েছে, ‘গিডিয়নের রথ’ - একজন বাইবেলীয় যোদ্ধা। তার নাম অনুসারে এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে। এই অভিযানে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী আইডিএফকে অঞ্চল দখল ও নিয়ন্ত্রণ করতে, বেসামরিক লোকদের উপত্যকার দক্ষিণে স্থানান্তর করতে, হামাসকে আক্রমণ করতে এবং সাহায্য সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ নিতে বাধা দিতে দেখা যাবে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু চলতি মাসের শুরুতে বলেছিলেন, ইসরায়েল অঞ্চল দখল এবং ধরে রাখার জন্য ‘গাজায় তীব্র প্রবেশের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক উত্তেজনা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।

তিনি বলেছেন, “বোমার এই সর্বশেষ হামলা, তীব্র আক্রমণের হুমকির মধ্যে মানুষকে স্থানান্তরিত করতে বাধ্য করা, আশেপাশের এলাকাগুলোতে পদ্ধতিগত ধ্বংসযজ্ঞ এবং মানবিক সহায়তা প্রদানে অস্বীকৃতি জানানো ইঙ্গিত দেয় যে, গাজায় স্থায়ী জনসংখ্যাগত পরিবর্তনের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে যা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং জাতিগত নির্মূলের সমতুল্য।”

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ