কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও মহানগর কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কমিটির পদবঞ্চিতরা। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে ওই কার্যালয়ের সামনে নানা স্লোগান দিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন দেয় তারা। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়,  কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা কান্দিরপাড়ে মিছিল বের করে। পরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ‘অবৈধ কমিটি মানি না, মানবো না; জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো; অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেয় পদবঞ্চিত ছাত্রনেতারা। এ সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, বিগত ১৭ বছরে যারা আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে তা আমরা মানি না। কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের সমন্বয় করে নতুন কমিটি দেওয়া হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।

ছাত্রদলের নেতারা বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে কাজী জোবায়ের আলম জিলানীকে সভাপতি ও এমদাদুল হক ধীমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল এবং নাহিদ রানাকে সভাপতি ও ফায়াজ রশিদ প্রিমুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রদলের আংশিক ওই দুটি কমিটি করা হয়। ওই রাতেই দুই কমিটিতে পদবঞ্চিতরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এবং নগরীর কান্দিরপাড়ে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা পূবালী চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে। তারা সদ্যঘোষিত কমিটির বিলুপ্তির দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিক্ষোভ মিছিল বের করে। 

কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্যবিদায়ী সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেন, কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করছে। এরই মাঝে পদপ্রাপ্ত এবং পদবঞ্চিতদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে বিএনপি কার্যালয়ে কারা আগুন দিয়েছে তা আমার জানা নেই। 

কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। সম্প্রতি আমরা এ অফিস সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। ভেতরে কারা আগুন দিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারিনি।
 
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ এবং কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারপরও বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে- তা জানা যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল কম ট আগ ন আগ ন দ য় ছ পদবঞ চ ত ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় সাংবাদিকের ওপর হামলা

কুমিল্লা নগরে ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় এক সাংবাদিকের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। হামলাকারীরা ওই সাংবাদিককে কিল-ঘুষি মারার পাশাপাশি তাঁর পায়ে ছুরিকাঘাত করেন।

বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে নগরের কান্দিরপাড় এলাকার পূবালী চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

হামলার শিকার বাহার রায়হান সময় টিভিতে কর্মরত। তাঁর ডান হাঁটুর ওপরের অংশে ছুরিকাঘাত করা হয়। তাঁকে কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। চিকিৎসকেরা জানান, ছুরিকাঘাতের জায়গায় তিনটি সেলাই দিতে হয়েছে। ছুরিকাঘাতের কারণে বেশ রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত।

বাহার রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীরা রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ মিছিলের ছবি ও ফুটেজ সংগ্রহকালে তাঁর ওপর হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশের একজন কর্মকর্তা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা সরে যায়। তিনি বলেন, হামলাকারীদের পরিচয় তিনি জানেন না। তবে তাঁরা ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মী।

বাহার রায়হান বলেন, ‘পূবালী চত্বরে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতা–কর্মীদের বিক্ষোভের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। সেখানে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সও আটকে পড়ে। তখন আমি কথার কথায় বলেছি আপনারা পদবঞ্চিত হয়েছেন, রাস্তা অবরোধ না করে নেতার বাড়ির সামনে অবরোধ করেন। এ কথা বলতেই আমার ওপর হামলা চালায় তারা।’

ছাত্রদল সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের নতুন কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত পৃথক চিঠিতে দুটি আংশিক কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। এর মধ্যে মহানগর ছাত্রদলের কমিটি ১৩ সদস্যের এবং কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটির ৬ সদস্যের। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন কাজী জোবায়ের আলম (জিলানী) এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন এমদাদুল হক (ধীমান)। কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি হয়েছেন নাহিদ রানা এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ফায়াজ রশিদ (প্রিমু)।

বৃহস্পতিবার রাতে কমিটিকে স্বাগত জানিয়ে প্রথম আনন্দ মিছিল বের করা হয়। এরপরই বিক্ষোভ মিছিল বের করেন পদবঞ্চিতরা।

কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্য সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম (মিঠু) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছি। রাতে মহানগর ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার পদবঞ্চিতরা কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ করেছেন। সেখানে সাংবাদিক বাহার রায়হানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হামলাকারীরা বাহার রায়হানকে চড়থাপ্পড় দেওয়ার মধ্যেই ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আমরা হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি এ ঘটনা লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় এবার বিএনপির অব্যবহৃত কার্যালয়ে আগুন দিলেন ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা
  • কুমিল্লায় বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ
  • কুমিল্লায় পদবঞ্চিত ছাত্রদল নেতাদের বিক্ষোভ, বিএনপি কার্যালয়ে আগুন
  • কুমিল্লায় বিএনপি কার্যালয়ে আগুন
  • কুমিল্লায় সময় টিভির সাংবাদিকের ওপর হামলা
  • জামালপুরে ছাত্রদলের কমিটি নিয়ে অসন্তোষ, সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
  • কুমিল্লায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় সাংবাদিককে ছুরিকাঘাত
  • কুমিল্লায় ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভের সময় সাংবাদিকের ওপর হামলা