কুমিল্লায় বিএনপি অফিসে আগুন দিল ছাত্রদলের পদবঞ্চিতরা
Published: 17th, May 2025 GMT
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও মহানগর কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে ছাত্রদলের সদ্যঘোষিত দক্ষিণ জেলা ও মহানগর কমিটির পদবঞ্চিতরা। শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নগরীর কান্দিরপাড় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে ওই কার্যালয়ের সামনে নানা স্লোগান দিয়ে আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন দেয় তারা। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের ব্যানারে শনিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারীরা কান্দিরপাড়ে মিছিল বের করে। পরে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ‘অবৈধ কমিটি মানি না, মানবো না; জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো; অ্যাকশন টু অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ স্লোগান দেয় পদবঞ্চিত ছাত্রনেতারা। এ সময় আসবাবপত্র ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় তারা।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, বিগত ১৭ বছরে যারা আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্যাতন ও হামলা-মামলার শিকার হয়েছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে যে কমিটি করা হয়েছে তা আমরা মানি না। কমিটি বাতিল করে ত্যাগী নেতাদের সমন্বয় করে নতুন কমিটি দেওয়া হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
ছাত্রদলের নেতারা বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর পর গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটিতে কাজী জোবায়ের আলম জিলানীকে সভাপতি ও এমদাদুল হক ধীমানকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ জেলা ছাত্রদল এবং নাহিদ রানাকে সভাপতি ও ফায়াজ রশিদ প্রিমুকে সাধারণ সম্পাদক করে মহানগর ছাত্রদলের আংশিক ওই দুটি কমিটি করা হয়। ওই রাতেই দুই কমিটিতে পদবঞ্চিতরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠে এবং নগরীর কান্দিরপাড়ে কয়েক দফা বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা পূবালী চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধ করে। তারা সদ্যঘোষিত কমিটির বিলুপ্তির দাবিতে শনিবার সন্ধ্যায় ফের বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সদ্যবিদায়ী সভাপতি ফখরুল ইসলাম মিঠু বলেন, কমিটি ঘোষণার পর থেকেই দক্ষিণ জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা গত তিন দিন ধরে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করছে। এরই মাঝে পদপ্রাপ্ত এবং পদবঞ্চিতদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে বিএনপি কার্যালয়ে কারা আগুন দিয়েছে তা আমার জানা নেই।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, কার্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। সম্প্রতি আমরা এ অফিস সংস্কারের উদ্যোগ নিয়ে ছিলাম। ভেতরে কারা আগুন দিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারিনি।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মহিনুল ইসলাম বলেন, বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ এবং কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের বিষয়টি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তারপরও বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কে বা কারা আগুন দিয়েছে- তা জানা যায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ছ ত রদল কম ট আগ ন আগ ন দ য় ছ পদবঞ চ ত ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি