সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজ হার এড়ানোর ম্যাচে টস হেরেছেন লিটন দাস। আজও শুরুতে ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ। আগের দুই ম্যাচেও টস হেরে ব্যাটিং পেয়েছিলেন লিটনরা। 

বাংলাদেশ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ এই ম্যাচের একাদশে ওপেনার পারভেজ ইমনকে ফিরিয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে নাজমুল শান্তকে। এছাড়া শেখ মাহেদী ও হাসান মাহমুদকে নেওয়া হয়েছে একাদশে। 

বাংলাদেশ একাদশ: পারভেজ ইমন, তানজিদ তামিম, লিটন দাস, তাওহীদ হৃদয়, জাকের আলী, শামীম পাটোয়ারি, শেখ মেহেদী, রিশাদ হোসেন, তানজিম সাকিব, শরিফুল ইসলাম ও হাসান মাহমুদ।  
 


 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

কলম্বোয় স্বস্তির জয়ে খুশি মিরাজ

ইংল্যান্ডে চিকিৎসা নিতে যাওয়া প্রধান কোচ ফিল সিমেন্স নিশ্চয়ই কলম্বোয় খোঁজখবর রেখেছেন। নিজের ডেপুটি মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের সঙ্গে একাদশ এবং গেম প্ল্যান নিয়ে আলোচনা হয়তো করেছেন ভিডিও কলে। তিনি এসব না করে থাকলেও আজ সুখী মানুষের একজন সিমন্স। কারণ গত নভেম্বর থেকে একের পর এক ম্যাচ হেরে আইসিসির ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে অবনমিত হচ্ছিল দলটি। সেখান থেকে উত্তরণের পথ দেখছিলেন না কোচ। 

বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার কাছে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং কলাপসের ঘটনায় সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমর্থকরাও হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য একটি জয় খুব প্রয়োজন ছিল। কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে আরাধ্য জয়ের দেখা পেল বাংলাদেশ। যেখানে ১১ জনের কম-বেশি ভূমিকা থাকলেও জয়ের নায়ক বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম। কুশল মেন্ডিসকে ঠিক সময়ে আউট করা এবং ম্যাচে ৫ উইকেট শিকার দারুণ প্রাপ্তি। স্লগে মুস্তাফিজুর রহমানের বোলিংকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। সেদিক থেকে দেখলে মেহেদী হাসান মিরাজের টস জয়, আগে ব্যাটিং করা, পারভেজ হোসেন ইমন ও তাওহীদ হৃদয়ের হাফ সেঞ্চুরিতে ২৪৮ রানের সংগ্রহ এবং এই রান ডিফেন্ড করতে বোলারদের প্রাণান্ত চেষ্টার ফসল ১৬ রানের জয়। 

এর আগে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম বলেছিলেন, কলম্বোয় দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে ক্যান্ডিতে যেতে চান। সিরিজ ১-১ ব্যবধান করা সম্ভব হলে ক্যান্ডিতে সিরিজ জয়ের সুযোগ থাকবে। সেই রোমাঞ্চকর জায়গায় এখন বাংলাদেশ। অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ আশাবাদী কলম্বোর জয় পাল্লেকেলের শেষ ম্যাচে ভালো খেলতে আত্মবিশ্বাস জোগাবে, ‘সিরিজে সমতা আসায় সবারই ভালো করার তাড়না থাকবে। আমরা কিছু কিছু জায়গায় উন্নতি দেখাতে পারলে ভালো একটি ম্যাচ হবে আশা করি।’ 

প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের উইকেটে রান তাড়া করা কঠিন। পিচে ফাটল ধরায় দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনারদের জন্য সুবিধা থাকে। প্রথম ম্যাচে ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ও কামিন্দু মেন্ডিস ৭ উইকেট নিয়ে সেটা প্রমাণ করেছেন। গতকাল বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম ৫ উইকেট শিকার করে সেই দাবিকে জোরালো করেন। কুশল মেন্ডিসকে দিয়ে ব্রেকথ্রু দেন তানভীর। মূল্যবান এই উইকেট পতনের পরই বাংলাদেশের হাতে চলে আসে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। এক এক করে ব্যাটারদের সাজঘরে ফেরান বাঁহাতি এ স্পিনার। 

ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই ৫ উইকেট প্রাপ্তিতে সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তানভীর বলেন, ‘আমি বয়সভিত্তিক দলে খেলিনি। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে উঠেছি। আমি জানি বোলিং ভালো করলে সুযোগ আসবে। চেষ্টা করেছি নিজের সেরাটা দিয়ে বোলিং করতে। আলহামদুলিল্লাহ ৫ উইকেট পেয়েছি।’ 

বিপিএলে ভালো বোলিং করায় টি২০ দলে নেওয়া হয়েছিল তাঁকে। আবার আমিরাত ও পাকিস্তান সফরে গিয়ে নিজের বোলিং অ্যাকশন পরিবর্তন করে ছন্দ হারিয়েছিলেন। পরে তাওহীদ হৃদয়ের পরামর্শে পুরোনো অ্যাকশনে বোলিং করে কলম্বোর ওয়ানডে ম্যাচে সফল হলেন।

প্রথম দুই ওভারে ২২ রান দিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিলেন তানভীর। রক্ষণাত্মক বোলিং কৌশল নেওয়ার চিন্তা করায় অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ হাত খুলে বোলিং করতে বলেন, ‘ওই সময় ক্যাপ্টেন আমাকে বলেছেন, তানভীর তুমি পারবে, উইকেটের জন্য বল করো; যা হওয়ার হবে। অধিনায়কের পরিকল্পনা মতো বোলিং করে সফল হয়েছি।’ 

গতকাল জিতলেও ব্যাটিং নিয়ে খুশি হতে পারেননি মিরাজ, ‘আমরা ভালো খেলায় ম্যাচটি জিতেছি। বোলিং খুবই ভালো হয়েছে। তবে ব্যাটিংয়ে আরও উন্নতি করতে হবে। আজ ইমন যেভাবে খেলেছে, হৃদয় মাঝে জুটি করেছে, শামীম পাটোয়ারি ভালো করেছে। বিশেষ করে, শেষদিকে তানজিম সাকিব যেভাবে হাসারাঙ্গাকে দুটি চার মেরেছে, তা প্রশংসা পাওয়ার মতো।’ 

১৭০ রানে ৮ উইকেট শিকারের পর বাংলাদেশের জয়টা মনে হচ্ছিল সময়ের ব্যাপার। সেখান থেকেই ম্যাচটি কঠিন করে দেন লঙ্কান জানিথ লিয়ানাগে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে। মুস্তফিজ তাঁকে আউট করায় শেষদিকে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ। পরে চামিরাকে আউট করে সাকিব জয়ের খুশি কেনেন। নিজেদের বোলিং বিশ্লেষণ করতে গিয়ে মিরাজ বলেন, ‘বোলিংটা ভালো হয়েছে। মাঝে শামীম ও তানভীর ৯ ওভার  খুবই ভালো করেছে। শামীম যে উইকেটটি নিয়েছে আসালঙ্কার সেটি মহামূল্যবান ছিল। অনেক দিন পরে দলে ফিরে শামীম যেভাবে খেলেছে, তাকে কৃতিত্ব দিতে হবে। এই ধারাবাহিকতা রেখে পরের ম্যাচগুলোতে উন্নতি করতে হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ