শিক্ষার্থীদের প্রাত্যহিক সমাবেশে পাঠযোগ্য শপথবাক্যে নতুন করে পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে শপথের আগের রূপ ফিরিয়ে আনা হয়েছে, যেখানে নব্বই দশক ও একুশ শতকের শুরুর দিকে প্রচলিত ভাষা পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। তবে এবার নতুনভাবে শপথে যুক্ত হয়েছে ‘অন্যায় ও দুর্নীতি করব না’ এবং ‘অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেব না’– এ দুটি অঙ্গীকার।

এর ফলে আওয়ামী লীগের শাসনামলে শপথবাক্যে যুক্ত হওয়া ‘মুক্তিযুদ্ধ’, ‘শেখ মুজিবুর রহমান’ ও ‘শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে না দেওয়ার’ প্রত্যয়ের অংশগুলো বাদ পড়েছে।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম ও নৈতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে এই নতুন শপথ পাঠের নির্দেশনা দেওয়া হলো।

নতুন শপথবাক্যটি হলো– ‘আমি শপথ করিতেছি যে, মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখিব। দেশের প্রতি অনুগত থাকিব। দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকিব। অন্যায় ও দুর্নীতি করিব না এবং অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিব না। হে মহান আল্লাহ/মহান সৃষ্টিকর্তা, আমাকে শক্তি দিন, আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করিতে পারি এবং বাংলাদেশকে একটি আদর্শ, বৈষম্যহীন ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়িয়া তুলিতে পারি। আমিন।’

প্রজ্ঞাপনে ইউজিসি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি), জেলা শিক্ষা অফিসসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে ২০২১ সালের ২৮ ডিসেম্বর, আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে শপথবাক্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ এবং শহীদদের আত্মত্যাগের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখনকার শপথবাক্য ছিল– ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা। আমি দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।

দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন।’

গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর ২০ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পিটিআই পর্যায়ে আগের শপথ ফেরানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। নতুন সংযোজনসহ বর্তমান শপথবাক্যটি এখন থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন জাতীয় সংগীতের পর পাঠ করানো হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শপথগ রহণ শপথ

এছাড়াও পড়ুন:

এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশের নতুন শপথবাক্য

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পর এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের আওতাধীন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও প্রাত্যহিক সমাবেশে শপথবাক্য পরিবর্তনের সিদ্ধান্তের কথা জানাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক আদেশে এ কথা জানানো হয়।

নতুন শপথবাক্য হলো, ‘আমি শপথ করিতেছি যে মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখিব। দেশের প্রতি অনুগত থাকিব। দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকব। অন্যায় ও দুর্নীতি করিব না এবং অন্যায় ও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিব না। হে মহান আল্লাহ/মহান সৃষ্টিকর্তা, আমাকে শক্তি দিন, আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করতে পারি এবং বাংলাদেশকে একটি আদর্শ, বৈষম্যহীন ও শক্তিশালী রাষ্ট্র হিসেবে গড়িয়া তুলিতে পারি। আমিন।’

আরও পড়ুনপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশের শপথবাক্যে পরিবর্তন২০ আগস্ট ২০২৪

এর আগে গত বছরের আগস্টে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে (পিটিআই) প্রাত্যহিক সমাবেশকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর নতুন শপথবাক্য পাঠ করানোর নির্দেশ দিয়েছিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। এর আগে ২০২২ সালে সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পিটিআইয়ের প্রাত্যহিক সমাবেশকালে নতুন শপথ পাঠের নির্দেশনা দিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার। সেই শপথবাক্য ছিল, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা। আমি দৃপ্ত কণ্ঠে শপথ করছি যে শহীদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রাত্যহিক সমাবেশের নতুন শপথবাক্য