কক্সবাজারের যে স্থান থেকে একসঙ্গে দেখা যায় পাহাড়-সাগর আর ঝরনা
Published: 22nd, May 2025 GMT
সাগরের পাশে বিশাল পাহাড়। সেই পাহাড়ের বুক চিরে বেরিয়েছে শীতল পানির ঝরনা। পাহাড়-ঝরনার নাম—হিমছড়ি। তবে পাহাড়টি আগে পরিচিত ছিল ‘হিমপরির পাহাড়’ নামে। স্থানীয় মানুষের কাছে প্রচলিত গল্প অনুযায়ী, একসময় উঁচু পাহাড়টির চূড়ায় সময় কাটাতেন সাগর থেকে উঠে আসা পরিরা। কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে টেকনাফের দিকে ১২ কিলোমিটার এগোলোই দেখা মেলে এই পাহাড়ের। এলাকাটির নামই এখন হিমছড়ি। এলাকায় অবস্থিত সমুদ্রসৈকতও পরিচিত হিমছড়ি সৈকত নামে।
প্রায় ২৮০ ফুট উঁচু হিমছড়ি পাহাড়ের চূড়ায় বসে দেখা যায় চারপাশের নয়নাভিরাম দৃশ্য। উপভোগ করা যায় সমুদ্রের গর্জন। ঝরনার শীতল জলে শরীর ভিজিয়ে নেওয়ার সুযোগ তো আছেই।
সড়কপথে হিমছড়ি পৌঁছানোর পরই চোখে পড়ে দুপাশে শতাধিক দোকানপাট। সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, জিপ-মাইক্রোবাসসহ নানা যানবাহনের ভিড়। অনেক পর্যটকের কাছে অস্বস্তিকর ঠেকে এই দৃশ্য। তবে হিমছড়িতে পাহাড়-সাগর আর ঝরনার দৃশ্য দেখার আনন্দ যেন এসব ভুলিয়ে দেয়।
দেখা যায় ঝরনার আশপাশে কয়েকটি বিশ্রামাগার। ঝরনায় যাতায়াতের রাস্তাতে বসানো হয়েছে রকমারি পণ্য বেচাবিক্রির ২০ থেকে ২৫টি দোকান। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ পর্যটকেরা বিশ্রামাগারে বসে কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিচ্ছেন। কেউ দোকানে গিয়ে সেরে নিচ্ছেন কেনাকাটা। শামুক-ঝিনুক দিয়ে তৈরি রকমারি পণ্য, ফলমূল, আচার, ডাব, চিনাবাদামসহ নানা খাবারদাবার রয়েছে এসব দোকানে। ঝরনার আশপাশে ১০ থেকে ১২ জন ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রীকে ছবি তোলার জন্য পর্যটকদের পিছু নিতে দেখা যায়।গত শুক্রবার সকাল ১০টা। সরেজমিনে দেখা যায় হিমছড়ি ইকো-ট্যুরিজম কেন্দ্রে শতাধিক নারী-পুরুষের ভিড়। কাউন্টার থেকে টিকিট কেটে পর্যটকেরা ভেতরে ঢুকছেন। টিকিটের মূল্য জনপ্রতি ৩৫ টাকা। এক টিকিটেই ঝরনা দেখা ও পাহাড়চূড়ায় ওঠার সুযোগ। ভেতরে ঢুকেই দেখা গেল, পর্যটকদের বেশির ভাগ ছুটছেন ঝরনার দিকে। কেউ ঝরনার হিমশীতল পানিতে গা ভাসাচ্ছেন। কেউ ছবি তোলায় ব্যস্ত। কয়েকজন তরুণকে হিমছড়ি ঝরনায় পানি কম থাকা নিয়ে আক্ষেপ করতে দেখা যায়।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে ঝরনা দেখতে এসেছেন শিক্ষক কামরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় স্ত্রী-সন্তানেরা বলে রাখেন, কক্সবাজার পৌঁছে সমুদ্রসৈকতের লোনাপানিতে গোসল সেরে তাঁদের হিমছড়ির ঝরনা দেখাতে নিয়ে যেতে হবে। তাই ঝরনায় নিয়ে এলাম।’ কামরুল ইসলাম আরও বলেন, ১১ বছর আগে তিনি প্রথমবার যে হিমছড়ি ঝরনা দেখে গেছেন, এখন যেন তার অনেক কিছুই নেই। পাহাড়ের ওপর থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে খুবই কম। তাঁর দাবি, অযত্নে-অবহেলায় এই পাহাড়-ঝরনা সৌন্দর্য হারাচ্ছে।
কক্সবাজারের হিমছড়ির ঝরণা। অযত্ন-অবহেলায় ম্লান পানিপ্রবাহ। সম্প্রতি তোলা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১৪৩ রানের ইনিংস বৈভব সূর্যবংশীর, একসঙ্গে ৩ রেকর্ড
বিস্ময়বালক বৈভব সূর্যবংশীর ব্যাটের ঝলক চলছেই। একের পর এক রেকর্ডও গড়ে চলেছেন ভারতের ১৪ বছর বয়সী ক্রিকেটার। আজ উস্টারের নিউ রোডে কাউন্টি গ্রাউন্ডে তিনি ঝড় তুলেছেন ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব–১৯ দলের বিপক্ষে ভারতের অনূর্ধ্ব–১৯ দলের যুব ওয়ানডে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে।
আরও পড়ুনএবার ২০ বলে ফিফটি সূর্যবংশীর, ৯ ছক্কায় নতুন রেকর্ড ০২ জুলাই ২০২৫টসে হেরে ভারতের হয়ে আইয়ুশ মাহাত্রের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে ৭৮ বলে ১৪৩ রান করেছেন বৈভব। এই ইনিংসটি খেলে তিনি একই সঙ্গে ভেঙেছেন যুব ওয়ানডের তিনটি রেকর্ড। ১৪৩ রান করার পথে সেঞ্চুরি ছুঁয়েই জোড়া রেকর্ড গড়ে ফেলেন বৈভব।
যুব ওয়ানডেতে ভারতের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হয়েছেন বৈভব। তিনি ভেঙেছেন সরফরাজ খানের এক দশকের পুরোনো রেকর্ড। ২০১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব–১৯ দলের বিপক্ষে ১৫ বছর ৩৩৮ দিন বয়সে সেঞ্চুরি করেছিলেন সরফরাজ। বৈভব সেঞ্চুরি করলেন ১৪ বছর ১০০ দিন বয়সে।
এটা তাঁকে পুরো বিশ্ব মিলিয়েই যুব ওয়ানডের সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান বানিয়ে দিয়েছে। যে রেকর্ডটি এত দিন ছিল বাংলাদেশের নাজমুল হোসেনের। ২০১৩ সালে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন ১৪ বছর ২৪১ দিন বয়সে।
আরও পড়ুনইংল্যান্ডে কোহলির ‘১৮’ পরে প্রথম ম্যাচেই সূর্যবংশীর বেধড়ক পিটুনি২৮ জুন ২০২৫১৩ চার ও ১০ ছক্কায় ৭৮ বলের ইনিংসটি খেলার পথে বৈভব সেঞ্চুরি করেছেন ৫২ বলে। ভেঙে ফেলেছেন তিনি যুব ওয়ানডের দ্রুততম সেঞ্চুরি রেকর্ড, যেটি এর আগে ছিল পাকিস্তানের কামরান গুলামের। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব–১৯ দলের বিপক্ষে তিনি সেঞ্চুরি করেছিলেন ৫৩ বলে।
এর আগে ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব–১৯ দলের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচেও একটি রেকর্ড গড়েছিলেন বৈভব। সেই ম্যাচে ২০ বলে ফিফটি করা বৈভব খেলেছিলেন ৩১ বলে ৮৬ রানের ইনিংস। মেরেছিলেন ৯টি ছক্কা, যেটা যুব ওয়ানডেতে এক ম্যাচে ভারতের কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ছক্কা।