মাইকিং করে গরুকে মেয়াদোত্তীর্ণ টিকা প্রদান, দুজনকে কারাদণ্ড
Published: 22nd, May 2025 GMT
গ্রামের মসজিদের মাইকে প্রচার চালানো হয় গরুকে ল্যাম্পি স্কিন রোগের টিকা দেওয়া হবে। অনেকেই বাড়ির গরু নিয়ে গ্রামের এক জায়গায় জড়ো হন। গরুপ্রতি ২০ টাকা করে নিয়ে ৩৭টি গরুকে টিকা দেওয়া হয়। পরে লোকজন বুঝতে পারেন, ওই টিকা মেয়াদোত্তীর্ণ; যে দুজন টিকা দিতে এসেছেন, তাঁরা পশু চিকিৎসক নন। শুরু হয় গরুর মালিকদের সঙ্গে টিকা দেওয়া কথিত দুই পশু চিকিৎসকের বাগ্বিতণ্ডা। খবর পেয়ে পুলিশ ওই দুজনকে আটক করে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের তাঁদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
এ ঘটনা রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার চতরা ইউনিয়ন পরিষদের পলিপাড়া গ্রামের। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই দুজন গরুকে মেয়াদোত্তীর্ণ টিকা দিচ্ছিলেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন পীরগঞ্জ উপজেলার আলমপুর ইউনিয়ন পরিষদের খয়রুল্লা গ্রামের মাহফুজ হোসেন (২৪) ও শফিকুল ইসলাম (৩১)। এর মধ্যে মাহফুজকে চার মাসের ও শফিকুল ইসলামকে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ইউএনও খাদিজা বেগম।
পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালতে কথিত ওই দুই পশু চিকিৎসককে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গতকালই তাঁদের রংপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ফজলুল কবীর বলেন, কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ওই দুই ব্যক্তি পশু চিকিৎসক নন। তাঁদের কাছে পাওয়া টিকা ছিল সরকারি; তবে মেয়াদ উত্তীর্ণ। কীভাবে এসব টিকা তাঁদের হাতে গেল, সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ