এই দেশে আর আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে না: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 27th, May 2025 GMT
এই দেশে আর আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট এলাকায় পথসভা কর্মসূচিতে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা বেঁচে থাকতে, আমাদের গায়ে এক বিন্দু রক্ত থাকতে এই দেশে আর আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হবে না। এই দেশে হাসিনার পুনর্বাসন হবে না। আওয়ামী রক্ত আছে, এমন কারও পুনর্বাসন হবে না। আওয়ামী সংবিধানকে চিরদিনের মতো এই বাংলাদেশে আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করব। নতুন সংবিধানের জন্য আমরা লড়াই করব। নতুন বাংলাদেশের জন্য আমরা লড়াই করব। ইনসাফের জন্য লড়াই করব।’
গত রোববার চট্টগ্রামে পথসভা ও প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দক্ষিণ জেলা, উত্তর জেলা ঘুরে আজ নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেছেন হাসনাত আবদুল্লাহ, দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, চট্টগ্রামের তত্ত্বাবধায়ক জোবাইরুল আরিফ, যুগ্ম মুখ্য সংগঠন ইমন সৈয়দসহ নেতা-কর্মীরা। মিনিট্রাকে ঘুরে ঘুরে এনসিপির নেতা-কর্মীরা প্রচারপত্র বিলি করেছেন।
বহদ্দারহাটের পথসভায় হাসনাত আবদুল্লাহ পুলিশের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘পুলিশ ভাইয়েরা এখন অমাদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। পুলিশ ভাইদের ওপর আমাদের অনেক রাগ, অনেক ক্ষোভ, তাই না? আপনারা এই রাগ আর ক্ষোভ রাইখেন না। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে পুলিশকে ব্যবহার করা হয়েছে। অতীতে এই পুলিশকে লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। সরকার তার নিজের প্রয়োজনে পুলিশকে লীগ বানিয়েছে।’
প্রশাসনের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যাঁরা প্রশাসনে আছেন, আমরা আপনাদের সহযোগিতা করতে চাই। ছাত্র-জনতা আপনাদের বিপক্ষে নয়, প্রতিযোগী নয়, আপনাদের সহযোগী। যতক্ষণ পর্যন্ত আপনারা দেশের পক্ষে থাকবেন, ততক্ষণ আপনাদের এই ইউনিফর্মকে আমরা সম্মান জানাই। প্রশাসকদের, সরকারি চাকরিজীবীদের আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু যখনই আপনারা জনগণের বিপক্ষে গিয়ে কোনো ফ্যাসিবাদকে সেবা করা শুরু করবেন, তখনই আপনারা জনবিরোধী অবস্থান নেবেন। যখনই জনবিরোধী অবস্থান নেবেন, তখনই ছাত্র-জনতা আপনাদের প্রতিরোধ করবে।’
শহীদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে অতীতের শাসনব্যবস্থা এই বাংলাদেশে চলতে দিতে পারি না—এমন মন্তব্য করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যে আওয়ামী সংবিধান বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে, দাড়িওয়ালা ধর্মভীরু মানুষদের জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মধ্য দিয়ে হত্যা করেছে, সেই আওয়ামী সংবিধান বাংলাদেশে থাকতে পারে না।
তাসনিম জারা তরুণদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যে স্বপ্ন নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতেই হবে। দেশটা সাধারণ নাগরিকের জন্য। দেশটা সব জনগণের। শুধু নির্দিষ্ট কোনো দলের বা গোষ্ঠীর জন্য এ দেশ নয়।’
‘আমাদের ভোট দিয়েন না’
চকবাজারে পথসভায় হাসনাত আবদুল্লাহ চট্টগ্রামবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব থাকবেন। ক্ষমতাকে প্রশ্ন করবেন। যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।’
গত বছর নির্বাচনে একটা ভোটের দাম কত ছিল, এমন প্রশ্ন রেখে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘কত ছিল দুই হাজার? এবার কত করে নেবেন? আমাদের দেশের নেতারা রাস্তার টাকা খেয়ে ফেলেন, টেন্ডারবাজি করেন, গরিবের সম্পদ লুণ্ঠন করেন। আর আমাদের দেশের ভোটাররা ভোট বিক্রি করে দেয়। আমাদের দেশের ভোটাররা ভোটের আগের রাতে ভোট বিক্রি করে দেয়।’
যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের আগে আগে যোগ্য ভোটার হওয়া উচিত বলে মনে করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, ‘আমরা কি টাকার বিনিময়ে ভোট বিক্রি করব? এখানে যাঁরা শিক্ষার্থী রয়েছেন, আপনাদের মা-বাবা ও পরিবার যদি ভোট বিক্রি করতে চায়, তাহলে প্রতিবাদ করেন।’
এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘আগের রাতে যদি ভোট বিক্রি করে দিই, তাহলে পাঁচ বছর আমার নেতা আমাকে জুলুম ও নির্যাতন করবে। আমরা কিছু বলতে পারব না। সে জন্য আগে নিজেদের সৎ হতে হবে। আগামী নির্বাচনে যারা যোগ্য নেতৃত্ব, তাদের ভোট দেবেন। যদি দেখেন এনসিপি থেকে কোনো যোগ্য নেতৃত্ব নাই, তবে আপনাদের ভোট দেওয়ার প্রয়োজন নাই। মার্কা দেখে ভোট দেওয়ার প্রয়োজন নাই। যে আপনার সেবা করবে, তাকে আপনারা ভোট দেবেন। যে জাতি ও দেশের কাছে কমিটমেন্ট করেছে, আপনারা তাদের ভোট দেবেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আপন দ র র জন য এই দ শ আম দ র আওয় ম আপন র এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত
নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।
কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।
১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)
আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)
ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।
৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)
ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।
৪. ঋণের মেয়াদ
কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।
৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)
শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।
৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)
ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।
৭. প্রসেসিং ফি
আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।
৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)
বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।
৯. জামানত (কোলেটারাল)
ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।
১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও
আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।