চ্যাম্পিয়নস লিগ নিয়ম পরিবর্তন, লিগ পর্বে ভালো করলে নকআউট পর্বে ‘বাড়তি সুবিধা’
Published: 2nd, June 2025 GMT
লিগ পর্বে পয়েন্ট তালিকার ওপরে থাকা দলগুলো নকআউট পর্বে ‘হোম অ্যাডভান্টেজ’ মানে ঘরে খেলার ‘বাড়তি সুবিধা’ দিতে চায় উয়েফা। চ্যাম্পিয়নস লিগের আগামী মৌসুমে এ নিয়ম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে ইএসপিএন। এবার সেমিফাইনাল থেকে আর্সেনাল ও বার্সেলোনার বিদায়ের পর উয়েফা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যমটি।
৩৬ দল নিয়ে এবার (২০২৪-২৫) প্রথম আয়োজিত হলো চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন সংস্করণ, যেখানে গত শনিবার রাতে ফাইনালে ইন্টার মিলানকে ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে পিএসজি। লিগ পর্বে এবারের মৌসুমে শীর্ষ আটে থেকে সরাসরি শেষ ষোলোয় ওঠার দলগুলোকে এই রাউন্ডে ফিরতি লেগ বা দ্বিতীয় লেগ ঘরের মাঠে খেলার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল আগেই। কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে উন্মুক্ত লটারির মাধ্যমে ঠিক করা হয় কারা কোন লেগ কোথায় খেলবে।
এবারের মৌসুমে সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে আর্সেনাল ও পিএসজি এবং ইন্টার মিলান ও বার্সেলোনা। লিগ পর্বে পিএসজি হয়েছিল ১৫তম আর আর্সেনাল তৃতীয়। ওদিকে ইন্টার মিলান হয়েছিল চতুর্থ আর বার্সেলোনা দ্বিতীয়। কিন্তু সেমিফাইনালে ফিরতি লেগ ঘরের মাঠে খেলেছে ইন্টার ও পিএসজি, যদিও লিগ পর্বে নিজ নিজ প্রতিপক্ষের তুলনায় অবস্থানে পিছিয়ে ছিল দুই দলই। শেষ পর্যন্ত পিএসজি এবং ইন্টারই উঠেছে ফাইনালে।
আরও পড়ুনইন্টারের জন্য বিমানবন্দরে মাত্র একজন সমর্থক, বললেন, ‘আমিই একমাত্র আহম্মক’২ ঘণ্টা আগেসেমিফাইনালে আর্সেনালের মাঠে প্রথম লেগ ১-০ গোলে জয়ের পর ঘরের মাঠে ফিরতি লেগ ২-১ গোলে জেতে পিএসজি। অপর সেমিফাইনালের প্রথম লেগে বার্সেলোনার মাঠে ৩-৩ গোলে ড্রয়ের পর ঘরের মাঠে ফিরতি লেগ ৪-৩ গোলে জেতে ইন্টার।
ইএসপিএন জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়নস লিগের আগামী মৌসুম থেকে লিগ পর্বে যে দলগুলো সবচেয়ে ভালো অবস্থানে থাকবে নকআউট পর্বে, তারা ফিরতি লেগ খেলবে ঘরের মাঠে।
কোয়ার্টার ফাইনালে অবশ্য পিএসজি অ্যাস্টন ভিলার মাঠে ফিরতি লেগ খেলেছে। লিগ পর্বে ফরাসি ক্লাবটির তুলনায় শ্রেয়তর অবস্থানে ছিল ভিলা (৮ম)। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদ (১১তম) লিগ পর্বে আর্সেনালের তুলনায় বাজে অবস্থানে থেকেও ফিরতি লেগ খেলেছে ঘরের মাঠে। কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সেলোনা-বরুসিয়া ডর্টমুন্ড ম্যাচেও তাই হয়েছে—লিগ পর্বে ডর্টমুন্ডের (১০) চেয়ে শ্রেয়তর অবস্থানে থাকা বার্সা (২) ফিরতি লেগ খেলেছে ডর্টমুন্ডের মাঠে।
আরও পড়ুনহাত দিয়ে গোলের ব্যাখ্যায় নেইমার যা বললেন১ ঘণ্টা আগেইএসপিএন জানিয়েছে, গত শনিবার চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের আগে উয়েফার ক্লাব কম্পিটিশন কমিটি এক বৈঠকে নিয়মটি পরিবর্তনের বিষয়ে সম্মত হন। ২০২৫-২৬ মৌসুমের নিয়মনীতি এরই মধ্যে জানিয়ে দিয়েছে উয়েফা। ক্লাব কমপিটিশন কমিটির এই সিদ্ধান্ত উয়েফার নির্বাহী কমিটি অনুমোদনের পর কার্যকর হবে। ইএসপিএন জানিয়েছে, আগামী ২৮ আগস্ট লিগ পর্বের ড্র অনুষ্ঠিত হওয়ার আগেই এক ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ বিষয়ে অনুমোদন দেবে উয়েফার নির্বাহী কমিটি।
সুইজারল্যান্ডের নিওনে উয়েফার সদরদপ্তর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ য ম প য়নস ল গ স ম ফ ইন ল ঘর র ম ঠ ল গ পর ব আর স ন ল অবস থ ন ইন ট র প এসজ
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি