চ্যাম্পিয়ন্স লিগটা জিতলে নিশ্চিত ভাবেই পুরস্কারটি চলে যেতো বার্সার তরুণ তারকা উইঙ্গার লামিনে ইয়ামালের হাতে। কিন্তু ইউরোপের ক্লাব শ্রেষ্ঠত্বে মুকুট যে পরেছে এবার পিএসজি। আর সেই দলের তারকা ফুটবলার উসমান ডেম্বেলেই এখন পুরস্কারটি জেতার জোরাল দাবিদার। যিনি কিনা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে গোল করেছেন ৮ টি, লিগ ওয়ানে গোল ২১ টি। 

সেখানে ইয়ামালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ৫টি  আর লিগসহ বাকি টুর্নামেন্ট মিলিয়ে ১৮ গোল। আজ রাত বাংলাদেশ সময় রাত একটায় (টেন স্পোর্টস ওয়ান দেখা যাবে ম্যাচ) নেশন্স লিগের স্পেন বনাম ফ্রান্সের সেমিফাইনালেই ঠিক হয়ে যেতে পারে কার হাতে উঠবে এবারে ব্যালন ডি’অর। 

যদিও দু’জনের কারো হাতেই পুরস্কারের ব্যাপারটি নেই। সারা বিশ্বের ক্রীড়া সাংবাদিক ও জাতীয় দলের কোচ- অধিনায়কের ভোটেই নির্বাচিত হবে ব্যালন ডি’অর বিজয়ী। 

তারপরেও ইয়ামালকে এক বৃটিশ ক্রীড়া সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেছিলেন তাঁর আর ডেম্বেলের এই লড়াইয়ের ব্যাপারে কিছু বলতে। উত্তরে সেই সাংবাদিককেই পাল্টা প্রশ্ন করেন ইয়ামাল, ‘আপনি কাকে ভোট দেবেন? যে সারা মৌসুম ভালো খেলেছে তাকে নাকি যে এই ম্যাচটি জিতবে তাকে?’ 

সাংবাদিক সেই উত্তর দিতে না পারলেও ইয়ামাল নিজেই তা দিয়ে দিয়েছেন। ‘আমি তাকেই ভোট দিতাম যে কিনা সারা বছর ভালো খেলে গেছে। তবে এটা যার যার নিজস্ব ব্যাপার। কেউ অন্য কিছু ভাবতেই পারে। আমি এই ম্যাচটি জিততে আশাবাদী। তবে তা ওই ভোটের কারণে নয়।’

বছর সতেরোর ইয়ামাল বার্সার হয়ে এই মৌসুমে ঘরোয়া তিনটি ট্রফি জিতেছে। তবে পিএসজির ফরাসি স্ট্রাইকার ডেম্বেলেও কম যাননি। লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ ট্রেবল জয়ের সাক্ষী হয়েছেন তিনি। যেহেতু এ বছর ইউরো কিংবা বিশ্বকাপ ফুটবল নেই অনেকেই মনে করছেন ব্যালন ডি’অরের ভোট ক্লাব পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করেই দেওয়া হবে। 

তবে নেশন্স লিগে দুই তারকা মুখোমুখি হয়ে যাওয়ায়, ম্যাচটির ফলাফলও হয়ত বিবেচনায় আসতে পারে সাংবাদিকদের কাছে। সেজন্য অবশ্য শুধু সেমিফাইনালে নয় স্পেন ও ফ্রান্সের কোন এক দলকে জিততে হবে পর্তুগালের বিপক্ষে ফাইনালেও। সেপ্টম্বরে প্যারিসে ব্যালন ডি’অর দেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উসম ন ড ম ব ল প এসজ

এছাড়াও পড়ুন:

উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী

আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।

রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।

মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।

মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’

আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।

বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’

বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ