শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত
Published: 7th, June 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া মাঠে প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৯টায় ঈদুল আজহার এ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির কারণে মাঠের অনেক জায়গা কর্দমাক্ত থাকলেও আজ জামাতের সময় বৃষ্টি ছিল না, বরং রোদ উঠেছিল। ফলে মুসল্লিরা স্বস্তিতে নামাজ আদায় করেছেন।
জামাতে ইমামতি করেন বড় বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি আবুল খায়ের মোহাম্মদ ছাইফুল্লাহ। ঈদুল ফিতরের জামাতে কিশোরগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ৫ লাখের বেশি মুসল্লি আসলেও এবারের ঈদের জামাতে মুসল্লির সমাগম তুলনামূলক কম।
শোলাকিয়ার সুদীর্ঘকালের ঐতিহ্য অনুসারে জামাত শুরুর ৫ মিনিট আগে তিনটি, ৩ মিনিট আগে দু’টি ও ১ মিনিট আগে একটি শর্টগানের গুলি ফুটিয়ে নামাজ শুরুর সংকেত দেওয়া হয়। গুলি ছোঁড়া উদ্বোধন করেন ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ কাজেম উদ্দীন। এরপর জেলা প্রশাসনের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিজাবে রহমত ও পুলিশ সুপার কাজেম উদ্দীন মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
ঈদুল ফিতরের মতো এবারের ঈদেও দূরবর্তী মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য আজ সকালে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জে ‘শোলাকিয়া এক্সপ্রেস’ নামে দু’টি ঈদ স্পেশাল ট্রেন আসে। জামাত শেষে মুসল্লিদের নিয়ে ট্রেন দু’টি আবার গন্তব্যে ফিরে যায়। মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তায় ৬ শতাধিক পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্য, র্যাব ও বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়।
ঈদগাহ এলাকাকে কেন্দ্র করে ৬৪টি সিসি ক্যামেরা, ৭টি ড্রোন ক্যামেরা, ৭টি ভিডিও ক্যামেরা, ৫০টি মেটাল ডিটেক্টর, ৮টি আর্চওয়ে এবং চারটি ওয়াচ টাওয়ার স্থাপন করা হয়। এছাড়া ছিল র্যাব ও পুলিশের কন্ট্রোলরুম, মেডিক্যাল ক্যাম্প ও ফায়ার সার্ভিস ইউনিট।
নামাজ শেষে ইমাম মুফতি ছাইফুল্লাহ তার মোনাজাতে বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। বায়ান্ন, একাত্তর ও চব্বিশের নিহতদের শহীদি মর্যাদার জন্য দোয়া করেন। এছাড়া সাম্রাজ্যবাদের কবল থেকে মুসলিম বিশ্বের হেফাজতের জন্য ও বিপদগ্রস্ত ফিলিস্তিনিদের হেফাজতের জন্য দোয়া কামনা করা হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ ঈদ ল আজহ র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ