আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) পরিচালিত ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গাজার উপকূলে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ইতালি থেকে রওনা হওয়া জাহাজটি গাজার ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য ত্রাণ নিয়ে যাচ্ছে। খবর আল জাজিরার

সুইডেনের পরিবেশবিষয়ক আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ গাজায় ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো কয়েকজন মানবাধিকারকর্মী ওই জাহাজে আছেন।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ফরাসি ফিলিস্তিনি সদস্য রিমা হাসান আজ রোববার ইনস্টাগ্রামে বলেন, ‘আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আমরা অবৈধভাবে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ ও দখলে রাখা ফিলিস্তিন উপকূলে পৌঁছাব।’

জার্মানির মানবাধিকারকর্মী ইয়াসেমিন আচার বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘এখন আমরা মিসরের উপকূলে আছি। আমরা সবাই ভালো আছি।’

জাহাজে থাকা লাইভ ট্র্যাকারের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল রাত ১টা ৩৯ মিনিটে ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটি মিসরের উপকূলীয় শহর রোসেতার উত্তরে অবস্থান করছিল।

জাহাজে থাকা রিমা হাসান সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলার নিরাপদ পথচলা নিশ্চিত করতে হবে।’

গত ২ মার্চ থেকে গাজা উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশ পুরোপুরি বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। এমন অবস্থায় অনাহারে ভুগে বেশ কয়েকটি শিশু মারা যায়। ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ‘ম্যাডলিন’ নামের এ জাহাজ ১ জুন ইতালির সিসিলির কাতানিয়া শহর থেকে যাত্রা শুরু করে।

বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থার হিসাব অনুসারে, গাজার ২৩ লাখের বেশি বাসিন্দার মধ্যে ৯০ শতাংশের বেশি মানুষ তীব্রমাত্রায় খাদ্যসংকটে ভুগছেন।

গাজার প্রথম ও একমাত্র নারী মৎস্যশিকারির নামানুসারে ‘ম্যাডলিন’ জাহাজটির নামকরণ করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী বলেছে, তারা ত্রাণবাহী জাহাজটিকে নিজেদের জলসীমায় প্রবেশ করতে দেবে না।

ফ্রি ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, গাজার মানুষের জন্য অত্যন্ত জরুরি ভিত্তিতে যেসব সহায়তা দরকার, সেগুলো বহন করছে জাহাজটি। এর মধ্যে আছে চিকিৎসার সরঞ্জাম, ময়দা, চাল, শিশুদের দুধ (বেবি ফর্মুলা), ডায়াপার, নারীদের স্যানিটারি পণ্য, পানি বিশুদ্ধকরণ কিট, ক্রাচ ও শিশুদের কৃত্রিম অঙ্গ।

‘ম্যাডলিন’ জাহাজে মোট ১২ জন মানবাধিকারকর্মী আছেন। তারা হলেন সুইডেনের পরিবেশবিষয়ক আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ, ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত ফরাসি নাগরিক ও ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য রিমা হাসান, জার্মানির ইয়াসেমিন আচার, ফ্রান্সের ব্যাপতিস্ত আন্দ্রে, ব্রাজিলের থিয়াগো আভিলা, ফ্রান্সের ওমর ফায়াদ, পাস্কাল মৌরিয়েরাস, ইয়ানিস মোহামদি, তুরস্কের সুলাইব ওর্দু, স্পেনের সার্জিও তোরিবিও, নেদারল্যান্ডসের মার্কো ফন রেনেস ও ফ্রান্সের রিভা ভিয়া।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল জ হ জট উপক ল

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ