সূর্যের বাইরের স্তরের নাম করোনা। এই স্তর মহাকাশে লাখ লাখ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত। রহস্যজনকভাবে এই এলাকা বেশি উষ্ণতা প্রদর্শন করে। একে বিজ্ঞানীরা করোনাল তাপ সমস্যা নামে অভিহিত করেন। বিজ্ঞানীরা করোনার আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের সময় বৃষ্টিপাতের মতো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন।

উন্নত ভূমিভিত্তিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর অত্যাশ্চর্য দৃশ্য ধারণ করেন। গভীর চিত্র তৈরি করতে অপটিকসের বিশেষ একটি কৌশল ব্যবহার করছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সোলার অবজারভেটরির বিজ্ঞানীরা সূর্যের করোনার ভিন্ন ধরনের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। সূর্যের বাইরের স্তর করোনার তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশে এই ছবি তোলা হয়েছে। করোনা অঞ্চলটি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সূর্যের করোনাল ভর নির্গমনের অন্যতম উৎস। পৃথিবীর চৌম্বকমণ্ডলের সঙ্গে করোনার শক্তি মিথস্ক্রিয়া হলে অরোরা ও ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের সূত্রপাত হয়।

সাধারণভাবে সূর্যের করোনা পর্যবেক্ষণ করা চ্যালেঞ্জিং। সূর্যের পৃষ্ঠের তুলনায় এই অঞ্চলের আলো বেশ অস্পষ্ট। পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় বা গ্রহণ অনুকরণকারী মহাকাশভিত্তিক করোনাগ্রাফের মাধ্যমে এই এলাকা দৃশ্যমান হয়। গবেষকেরা এখন পৃথিবী থেকে করোনা অধ্যয়নের জন্য অ্যাডাপটিভ অপটিকস নামের একটি কৌশল ব্যবহার করেছেন। বায়ুমণ্ডলীয় বাধা প্রতিরোধ করে কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিষ্কার চিত্র তৈরি করা হচ্ছে এই কৌশলের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সোলার অবজারভেটরি ও নিউ জার্সি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একটি দল ১ দশমিক ৬ মিটারের গুড সোলার টেলিস্কোপের মাধ্যমে ছবি তুলছেন। এই টেলিস্কোপ করোনার সূক্ষ্ম কাঠামোর সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণে সক্ষম।

সূর্যের করোনার সূক্ষ্ম কাঠামোসংক্রান্ত সমস্যার তথ্য জানার মাধ্যমে সূর্যের অগ্ন্যুৎপাত ও করোনার উত্তাপের অনেক তথ্য জানার সুযোগ আছে। বিজ্ঞানীরা করোনাল অ্যাডাপটিভ অপটিকসের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করছি। ১ দশমিক ৬ মিটারের টেলিস্কোপের মাধ্যমে সূক্ষ্ম করোনালের বিশদ তথ্য জানা যাচ্ছে।

বিজ্ঞানী ডার্ক শ্মিট বলেন, বায়ুমণ্ডলের অস্থিরতার কারণে মহাকাশে কোনো বস্তুর ছবি তোলার সময় মারাত্মকভাবে ক্ষতি দেখা যায়। সূর্যকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখার সময় বাধা আসে। নতুন একটি যন্ত্র তৈরি করে সূর্যকে ভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। সূর্যের করোনাল বৃষ্টির মতো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা গেছে। এ ঘটনা তখন ঘটে যখন করোনাল প্লাজমার স্ট্র্যান্ড ঠান্ডা হয়ে সূর্যের পৃষ্ঠে ফিরে আসে। জ্যোতির্বিজ্ঞানী থমাস শ্যাড বলেন, সূর্যের করোনায় বৃষ্টিপাত ২০ কিলোমিটারেরও বেশি সংকীর্ণ হতে পারে।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র য র কর ন কর ন ল কর ন র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে মার্কিন অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর চেষ্টা সিনেটে ব্যর্থ

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধের ক্রমবর্ধমান আন্তর্জাতিক নিন্দার মধ্যে, ইসরায়েলের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রি আটকাতে মার্কিন সিনেটে তোলা একটি বিল পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।

ব্যর্থ হলেও, বুধবারের ভোটে দেখা গেছে, মার্কিন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির ভেতরে ইসরায়েলের যুদ্ধের বিরোধিতা জোরদার হয়ে উঠেছে। 

আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের কাছে অস্ত্র বিক্রি ঠেকানোর প্রচেষ্টায় এবারের ভোটে উল্লেখযোগ্য সংখ্যাক ডেমোক্র্যাট যোগ দিয়েছেন। 

ইসরায়েলের কাছে ২০ হাজার স্বয়ংক্রিয় অ্যাসল্ট রাইফেল বিক্রি বন্ধ করার প্রস্তাবের পক্ষে ২৭ জন ডেমোক্র্যাট ভোট দিয়েছেন, আর ৬৭৫ মিলিয়ন ডলারের বোমার চালান বন্ধ করার পক্ষে ২৪ জন ভোট দিয়েছেন। 

অন্যদিকে, ভোটদারকারী সব রিপাবলিকান সিনেটররা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন। 

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র বিক্রির দুটি চুক্তি আটকে দিতে প্রস্তাবগুলো সিনেটে আনেন ভার্মন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি প্রগতিশীল ঘরানার স্বতন্ত্র সিনেটর।

ভোটের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে স্যান্ডার্স বলেন, “ওয়াশিংটন ইসরায়েলের ‘বর্ণবাদী সরকার’কে এমন অস্ত্র সরবরাহ করা চালিয়ে যেতে পারে না, যা নিরীহ মানুষদের হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।”

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে একজন ‘জঘন্য মিথ্যাবাদী’ হিসেবে উল্লেখ করে স্যান্ডার্স ‘এক্স’ পোস্টে আরো বলেন, “গাজায় শিশুরা না খেয়ে মারা যাচ্ছে।”

প্রথমবারের মতো স্যান্ডার্সের প্রস্তাবকে সমর্থনকারী আইন প্রণেতাদের মধ্যে, ওয়াশিংটন রাজ্যের সিনেটর প্যাটি মারে বলেছেন, প্রস্তাবগুলো ‘নিখুঁত’ না হলেও, তিনি গাজার নিষ্পাপ শিশুদের অব্যাহত দুর্ভোগকে সমর্থন করতে পারেন না।

মারে এক বিবৃতিতে বলেন, “ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সমর্থক হওয়া সত্ত্বেও আমি প্রস্তাবের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিচ্ছি এই বার্তা দিতে: নেতানিয়াহু সরকার এই কৌশল চালিয়ে যেতে পারবে না।”

তিনি বলেন, “নেতানিয়াহু ক্ষমতায় থাকার জন্য প্রতিটি পদক্ষেপে এই যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করেছেন। আমরা গাজায় মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করছি- সীমান্তের ওপারে যখন প্রচুর পরিমাণে সাহায্য ও সরবরাহ পড়ে আছে, তখন শিশু এবং পরিবারগুলোর অনাহার বা রোগে মারা যাওয়া উচিত নয়।”

মার্কিন জনগণের মধ্যে গাজা যুদ্ধের বিরোধিতা ক্রমবর্ধমান হওয়ার পাশাপাশি ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন নিয়ে ব্যাপক আকারে বিভক্তি দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার প্রকাশিত গ্যালাপের একটি জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ আমেরিকান বলেছেন, তারা গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান সমর্থন করেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ৪২ শতাংশ আমেরিকান ইসরায়েলের অভিযান সমর্থন করেছিলেন।

গ্যালাপের মতে, পরিচয় প্রকাশ করে মাত্র ৮ শতাংশ ডেমোক্র্যাট বলেছেন যে তারা ইসরায়েলের অভিযানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন, যেখানে ৭১ শতাংশ রিপাবলিকান বলেছেন জানিয়েছেন যে, তারা ইসরায়েলি পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ