সূর্যের মধ্যে গোলাপি বৃষ্টির খোঁজ
Published: 13th, June 2025 GMT
সূর্যের বাইরের স্তরের নাম করোনা। এই স্তর মহাকাশে লাখ লাখ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত। রহস্যজনকভাবে এই এলাকা বেশি উষ্ণতা প্রদর্শন করে। একে বিজ্ঞানীরা করোনাল তাপ সমস্যা নামে অভিহিত করেন। বিজ্ঞানীরা করোনার আরও বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহের সময় বৃষ্টিপাতের মতো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেছেন।
উন্নত ভূমিভিত্তিক টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর অত্যাশ্চর্য দৃশ্য ধারণ করেন। গভীর চিত্র তৈরি করতে অপটিকসের বিশেষ একটি কৌশল ব্যবহার করছেন বিজ্ঞানীরা। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সোলার অবজারভেটরির বিজ্ঞানীরা সূর্যের করোনার ভিন্ন ধরনের একটি ছবি প্রকাশ করেছেন। সূর্যের বাইরের স্তর করোনার তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশে এই ছবি তোলা হয়েছে। করোনা অঞ্চলটি শক্তিশালী চৌম্বকক্ষেত্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। সূর্যের করোনাল ভর নির্গমনের অন্যতম উৎস। পৃথিবীর চৌম্বকমণ্ডলের সঙ্গে করোনার শক্তি মিথস্ক্রিয়া হলে অরোরা ও ভূচৌম্বকীয় ঝড়ের সূত্রপাত হয়।
সাধারণভাবে সূর্যের করোনা পর্যবেক্ষণ করা চ্যালেঞ্জিং। সূর্যের পৃষ্ঠের তুলনায় এই অঞ্চলের আলো বেশ অস্পষ্ট। পূর্ণ সূর্যগ্রহণের সময় বা গ্রহণ অনুকরণকারী মহাকাশভিত্তিক করোনাগ্রাফের মাধ্যমে এই এলাকা দৃশ্যমান হয়। গবেষকেরা এখন পৃথিবী থেকে করোনা অধ্যয়নের জন্য অ্যাডাপটিভ অপটিকস নামের একটি কৌশল ব্যবহার করেছেন। বায়ুমণ্ডলীয় বাধা প্রতিরোধ করে কম্পিউটারের মাধ্যমে পরিষ্কার চিত্র তৈরি করা হচ্ছে এই কৌশলের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সোলার অবজারভেটরি ও নিউ জার্সি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একটি দল ১ দশমিক ৬ মিটারের গুড সোলার টেলিস্কোপের মাধ্যমে ছবি তুলছেন। এই টেলিস্কোপ করোনার সূক্ষ্ম কাঠামোর সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণে সক্ষম।
সূর্যের করোনার সূক্ষ্ম কাঠামোসংক্রান্ত সমস্যার তথ্য জানার মাধ্যমে সূর্যের অগ্ন্যুৎপাত ও করোনার উত্তাপের অনেক তথ্য জানার সুযোগ আছে। বিজ্ঞানীরা করোনাল অ্যাডাপটিভ অপটিকসের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করছি। ১ দশমিক ৬ মিটারের টেলিস্কোপের মাধ্যমে সূক্ষ্ম করোনালের বিশদ তথ্য জানা যাচ্ছে।
বিজ্ঞানী ডার্ক শ্মিট বলেন, বায়ুমণ্ডলের অস্থিরতার কারণে মহাকাশে কোনো বস্তুর ছবি তোলার সময় মারাত্মকভাবে ক্ষতি দেখা যায়। সূর্যকে টেলিস্কোপের মাধ্যমে দেখার সময় বাধা আসে। নতুন একটি যন্ত্র তৈরি করে সূর্যকে ভিন্নভাবে পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। সূর্যের করোনাল বৃষ্টির মতো ঘটনা পর্যবেক্ষণ করা গেছে। এ ঘটনা তখন ঘটে যখন করোনাল প্লাজমার স্ট্র্যান্ড ঠান্ডা হয়ে সূর্যের পৃষ্ঠে ফিরে আসে। জ্যোতির্বিজ্ঞানী থমাস শ্যাড বলেন, সূর্যের করোনায় বৃষ্টিপাত ২০ কিলোমিটারেরও বেশি সংকীর্ণ হতে পারে।
সূত্র: এনডিটিভি
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র য র কর ন কর ন ল কর ন র
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি