গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক বলেছেন, গলাচিপায় দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বিএনপি। তাহলে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে দেশ চালাবে কেমনে?

আজ শুক্রবার বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা পরিষদ ডাকবাংলোর সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক এ কথা বলেন। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর অবরুদ্ধ হওয়াসহ তাঁর নির্বাচনী এলাকার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নুরুল হক বলেন, ‘আন্দোলন–সংগ্রাম করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি হয়েছি। কোনো রাজনৈতিক দলে নাম লেখাইনি। কোনো দলের নেতার গোলামি করিনি। নিজেই একটা রাজনৈতিক দল গঠন করেছি। ছাত্রজীবন থেকে এ পর্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে বেড়ে উঠেছি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন–সংগ্রাম করেছি। অথচ আমার এলাকায় বিএনপির এক নির্বাহী সদস্য হাসান মামুনের অনুসারীদের কাছে হেনস্তা ও লাঞ্ছিত হচ্ছি।’

নুরুল হকের অভিযোগ, ‘গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে আজ শুক্রবার পর্যন্ত গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় গণ অধিকার পরিষদের দলীয় অফিসে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। গতকাল রাতে আমি ও আমার নেতা–কর্মীদের অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এ জন্য বরিশাল-পটুয়াখালী থেকে প্রশিক্ষিত সন্ত্রাসী ভাড়ায় এনে এলাকায় তাণ্ডব চালানো হয়েছে। ভাড়ায় আনা সন্ত্রাসীরা রামদা, চাপাতি, হকিস্টিক, বস্তাভর্তি ইট নিয়ে আমাদের পথ রোধ করে মহড়া দিয়েছে। সড়কে গাছের গুঁড়ি ও ইট ফেলে পথে পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব ঘটনা ভিন্ন খাতে নিতে বলা হয়, আমার লোকজন নাকি আমার গ্রামের বাড়ি চরবিশ্বাসে বিএনপির অফিস ভাঙচুর করেছে। এই আমলে এমন কে আছে যে বিএনপির অফিসে হামলার সাহস রাখে?’

নুরুল হক আরও বলেন, ‘বিগত ১৬ বছরে হাসান মামুন কোনো রাজনৈতিক মামলার শিকার হননি। অথচ আমি আর আমার পরিবার পদে পদে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। এই হাসান মামুনকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে বিএনপির সুনাম ক্ষুণ্ন হবে।’

এ বিষয়ে বিএনপির নেতা হাসান মামুন প্রথম আলোকে বলেন, নুরুল হক এলাকায় উসকানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন। তিনি গত বুধবার প্রকাশ্যে একটি ঠিকাদারি কাজ নিয়ে জেলা বিএনপির একজন জ্যেষ্ঠ নেতাকে জড়িয়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার চরবিশ্বাস বাজারে তাঁর লোকজন বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। এসব উসকানিমূলক বক্তব্যের কারণে এলাকার লোকজন নুরুল হকের ওপর ক্ষিপ্ত হতে পারেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক ন র ল হক ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ