সীতাকুণ্ডে ঝরনায় নেমে স্কুলছাত্রের মৃত্যু
Published: 14th, June 2025 GMT
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সহস্রধারা-২ নামে একটি ঝরনায় নেমে এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের ছোটদারোগাহাটহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম তাহসিন আনোয়ার (১৭)। সে জীবন বীমা করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (উপসচিব) লুৎফুন নাহারের একমাত্র ছেলে। তাহসিন চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।
খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পানির নিচে ডুবন্ত অবস্থায় তাহসিনের লাশ উদ্ধার করে। পরে সেখানে যান উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন ও থানা-পুলিশের একটি দল।
সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মছিন্দ্রলাল ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সহস্রধারা ঝরনা–২–এর পানিতে একজন পর্যটক ডুবে গেছে এমন খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। পরে সেখানে ঝরনার পানিতে ডুবে যাওয়া তাহসিনের লাশ তারা উদ্ধার করেন।
মছিন্দ্রলাল ত্রিপুরা বলেন, তাহসিনের বন্ধুরা তাকে জানিয়েছে, সাতজনের একটি দল সহস্রধারা ঝরনায় বেড়াতে এসেছিল। তাদের মধ্যে তিনজন ঝরনার সামনে জমে থাকা পানির নামে। সেটা গভীর ছিল। ফলে দুজন উঠে গেলেও তাহসিন উঠতে পারেনি। সে যখন ডুবে যাচ্ছিল তখন উদ্ধারের জন্য চিৎকার করছিল। কিন্তু তার সহপাঠীরা তখন মনে করেছিল, সে দুষ্টুমির ছলে চিৎকার করছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সে ডুবে যায়। এরপর যখন আর উঠছিল না, তখন তারা ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দেয়।
সীতাকুণ্ডের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। নিহত তাহসিনের লাশ ঝরনা এলাকায় রাখা হয়েছে। তার বাবা মা আসার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।
রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।
অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা।
বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো।
বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া।
আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না।
বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’
বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা।
উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।
ঢাকা/টিপু