চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সহস্রধারা-২ নামে একটি ঝরনায় নেমে এক স্কুলশিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উপজেলার বারৈয়াঢালা ইউনিয়নের ছোটদারোগাহাটহাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শিক্ষার্থীর নাম তাহসিন আনোয়ার (১৭)। সে জীবন বীমা করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক (উপসচিব) লুৎফুন নাহারের একমাত্র ছেলে। তাহসিন চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

খবর পেয়ে সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পানির নিচে ডুবন্ত অবস্থায় তাহসিনের লাশ উদ্ধার করে। পরে সেখানে যান উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মামুন ও থানা-পুলিশের একটি দল।

সীতাকুণ্ড ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের লিডার মছিন্দ্রলাল ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে সহস্রধারা ঝরনা–২–এর পানিতে একজন পর্যটক ডুবে গেছে এমন খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে যান। পরে সেখানে ঝরনার পানিতে ডুবে যাওয়া তাহসিনের লাশ তারা উদ্ধার করেন।

মছিন্দ্রলাল ত্রিপুরা বলেন, তাহসিনের বন্ধুরা তাকে জানিয়েছে, সাতজনের একটি দল সহস্রধারা ঝরনায় বেড়াতে এসেছিল। তাদের মধ্যে তিনজন ঝরনার সামনে জমে থাকা পানির নামে। সেটা গভীর ছিল। ফলে দুজন উঠে গেলেও তাহসিন উঠতে পারেনি। সে যখন ডুবে যাচ্ছিল তখন উদ্ধারের জন্য চিৎকার করছিল। কিন্তু তার সহপাঠীরা তখন মনে করেছিল, সে দুষ্টুমির ছলে চিৎকার করছে। কিছুক্ষণের মধ্যে সে ডুবে যায়। এরপর যখন আর উঠছিল না, তখন তারা ফায়ার সার্ভিসকে ফোন দেয়।

সীতাকুণ্ডের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। নিহত তাহসিনের লাশ ঝরনা এলাকায় রাখা হয়েছে। তার বাবা মা আসার পর  পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ