বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) মালিকানাধীন ময়মনসিংহ টাউন মৌজায় অবস্থিত ১.৯৬৮ একর জমিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় বহুতল বাণিজ্যিক এবং আবাসিক ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে সরকার। অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নীতিগত অনুমোদন পেলেই জায়গাটিতে বহুতল ভবনের নির্মাণের কাজ শুরুর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশনের (বিজেএমসি) নিয়ন্ত্রণাধীন লতিফ বাওয়ানী জুট মিলের ১.

৯৬৮ একর জমি, ময়মনসিংহ জেলার কোতয়ালী থানার জে.সি. গুহ রোডে পাট ক্রয়কেন্দ্র হিসেবে রয়েছে। ২০২০ সালের ১ জুলাই বিজেএমসির নিয়ন্ত্রণাধীন মিলসমূহের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হলে ঐ সময় থেকে জায়গাটি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে।

পাট ক্রয়কেন্দ্রটি ময়মনসিংহ শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত এবং এর লাগোয়া একটি বহুতল বাণিজ্যিক ভবন ও একটি হাসপাতাল রয়েছে। জায়গাটির পাশ দিয়ে ৫০ ফুট প্রশস্ত একটি রাস্তা রয়েছে। বর্তমানে জায়গাটিতে অনেক পুরাতন পাঁচটি জরাজীর্ণ ভবন/সেড রয়েছে, যা ভাঙ্গার কাজ চলছে। জায়গাটি অব্যবহৃত অবস্থায় থাকায় একদিকে নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে অর্থ ব্যয় হচ্ছে, অন্যদিকে ভূমি উন্নয়ন কর ও সিটি করপোরেশনের পরিশোধ করতে হচ্ছে। কিন্তু এই জায়গা ও স্থাপনার বিপরীতে কোনো আয় নেই। এছাড়া অব্যবহৃত অবস্থায় ফেলে রাখলে জায়গাটি বেহাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জায়গাটিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি)- আওতায় বহুতল বাণিজ্যিক এবং আবাসিক ভবন নির্মাণ কার্যক্রম গ্রহণ করা হলে সরকারি আর্থিক বিনিয়োগ ছাড়াই বিজেএমসির আয়ের উৎস সৃষ্টি হবে। ফলে একদিকে যেমন বিজেএমসি লাভবান হবে, অন্যদিকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং ময়মনসিংহ এলাকার জনগণও উপকৃত হবে। ফলে সার্বিকভাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে অবদান রাখা সম্ভব হবে।

আরো পড়ুন:

বাজেটে ‘কৃষি-শিল্প-পাট-সুন্দরবন’ রক্ষায় পর্যাপ্ত বরাদ্দের দাবি

স্বাধীনতার পর প্রথম ‘অর্থনৈতিক শহীদ’ পাট: উপদেষ্টা

বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) উক্ত জায়গায় পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় বহতল বাণিজ্যিক এবং আবাসিক ভবন (শপিং কমপ্লেক্স/অফসি স্পেস/ আবাসিক ভবন হাসপাতাল/ক্লিনিক। হিসেবে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণের লক্ষ্যে অনুমতির জন্য গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায়। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নিয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) সিপিপি কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত প্রকল্প প্রস্তাবনা ফরম পূরণপূর্বক ময়মনসিংহ টাউন মৌজায় অবস্থিত ১.৯৬৮ একর জমিতে পিপিপির আওতায় বহুতল বাণিজ্যিক এবং আবাসিক ভবন হিসেবে উন্নয়নমূলক কার্যক্রম প্রহণের লক্ষ্যে পিপিপি কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠায়। উক্ত চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পিপিপি কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ২০২৫ সালের ২৩ এপ্রিল প্রজেক্ট স্ক্রিনিং সভা করে প্রকল্পটির নামকরণ করা হয় ‘এস্টাব্লিশমেন্ট অব মাল্টিপারপাস কমার্শিয়াল স্প্রেস অন বিজেএমসি’স অ্যাবনডনেন্ড জুট পারচেজ সেন্টার ইন ময়মনসিংহ’। 

সভায় প্রকল্পটি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করা হয়।

উল্লেখ্য, কোনো প্রকল্প পিপিপির মাধ্যমে প্রক্রিয়াকরণের জন্য ‘প্রকিউরমেন্ট গাইডলাইন ফর পিপিপি প্রাজেক্টস,২০২৮’ এর ১০ নম্বর নির্দেশনা অনুযায়ী অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি থেকে নীতিগত অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

এমতাবস্থায়, ময়মনসিংহ জেলার কোতয়ালী থানার ময়মনসিংহ টাউন মৌজার জে.সি. গুহ রোডে বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন (বিজেএমসি) এর পাট ক্রয়কেন্দ্রের ১.৯৬৮ একর জমিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) এর আওতায় বহুতল বাণিজ্যিক এবং আবাসিক ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নীতিগত অনুমোদনের জন্য মঙ্গলবার কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে।

ঢাকা/হাসনাত/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প টকল প রকল প ব জ এমস বস থ য় কম ট র র জন য অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক

জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় সালিসে আসা এক যুবককে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ দুপুরে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ওই যুবকের মা আনারা বেগম এ কথা জানান।

গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম আল-আমিন (৩২)। তাঁর বাড়ি নগরের বলাশপুর এলাকায়। মায়ের দাবি, আল-আমিন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন। সালিসে জমিজমার কাগজ ঠিক থাকায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে রাজি না হলে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

তবে পুলিশ বলছে, ওই যুবক যুবলীগের সমর্থক। তাঁকে গ্রেপ্তারে কয়েকবার বাড়িতে অভিযানও চালিয়েছে পুলিশ। থানায় তাঁকে পেয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যদিও গ্রেপ্তারের পর আদালতে পাঠানো প্রতিবেদনে তাঁকে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল-আমিনের মা আনারা বেগম বলেন, ২০২১ সালে বলাশপুর এলাকায় স্বামীর পেনশনের ১৭ লাখ টাকায় ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ জমি কেনেন তাঁরা। এর আগে ২০০৮ সালে একই দাগে ৪ শতাংশ জমি কেনার দাবি করে ২০২২ সালে জোরপূর্বক সীমানাপ্রাচীর নির্মাণ করেন এক ব্যক্তি। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি। ৫ আগস্টের পর সরকার পরিবর্তন হলে নিজের কেনা জমিতে বাড়ি করার উদ্যোগ নিলে বাধা হয়ে দাঁড়ান ওই ব্যক্তি ও তাঁর পক্ষের লোকজন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে কোতোয়ালি মডেল থানায় উভয় পক্ষকে ডাকা হয়। গত শনিবার রাত আটটায় থানায় সালিস শুরু হয়। চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। সালিসে শেষ পর্যায়ে যখন জমির কাগজপত্র তাঁদের ঠিক পান সালিসকারীরা, তখন ওসি আল-আমিনকে তাঁর কক্ষে নিয়ে পিটিয়ে হাড়গোড় ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। পেছনে পেছনে তিনি গিয়ে প্রতিবাদ করলে তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়। এরপর আল-আমিনকে গারদে ঢুকিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। রাজি না হওয়ায় সাজানো রাজনৈতিক মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আনারা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো রাজনীতি করে না। আমার ছেলে ব্যবসা করে। তাকে রাজনৈতিক মামলায় পুলিশ কারাগারে পাঠিয়েছে।’

২৭ জুলাই আল-আমিনকে আদালতে পাঠানোর প্রতিবেদনে পুলিশ উল্লেখ করে, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাত ১টা ৩৫ মিনিটে পুলিশের টহল দল নগরের আকুয়া ভাঙ্গাপুল এলাকায় অবস্থানকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে সদরের উত্তর দাপুনিয়ার সরকারি পুকুরপাড় সেলফি নামের স্থানে পাকা রাস্তার ওপর একদল সন্ত্রাসী জনতাবদ্ধ হয়ে রাস্তা বন্ধ করে গাড়ি ভাঙচুর ও দাঙ্গাহাঙ্গামা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ৫টি মশাল, ২০টি লাঠি, ৩০টি ইটের টুকরা, ২৫টি কাচের টুকরা জব্দ করা হয়। এ ঘটনার পরদিন পুলিশ কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় আল-আমিনকে সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে ২৬ জুলাই রাত ১১টা ৪০ মিনিটে নগরের কেওয়াটখালী এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। প্রতিবেদনে পুলিশ আল-আমিনকে যুবলীগের সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে।

থানার ওই সালিসে থাকা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি মো. বাবু বলেন, থানা চত্বরের একটি ঘরে এসআই সজীব কোচের উপস্থিতিতে দুই পক্ষের কাগজপত্র বোঝেন, এমন লোকজন নিয়ে সালিস শুরু হয়। একপর্যায়ে আল-আমিনকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তাঁকে থানা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, ‘১০ দিন আগে থেকে দারোগারা তাঁকে (আল-আমিন) ধরার জন্য খুঁজতেছে। ডেভিল হান্টের আসামি সে। আমাদের দুই দারোগা ছয় থেকে সাতবার তাঁর বাড়িতে রেড দিছে। সে যুবলীগের ফ্যাসিস্ট। মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি।’ ওসি বলেন, কোনো কাগজপত্র দিয়ে নোটিশ করে তাঁকে থানায় ডাকা হয়নি। বিচারক যদি মনে করে আমরা তাঁকে ইলিগ্যাল অ্যারেস্ট করেছি, তাহলে আদালত ফাইন্ডিংস দেবেন। আসামিকে থানা থেকে গ্রেপ্তার করা কী নিষেধ আছে?’ আদালতের প্রতিবেদনে ভিন্ন স্থান দেখানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জজ এটার বিচার করবে। যদি এমন কইরা থাকে, সমস্যা কী?’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ ধসে ১০ শ্রমিক আহত
  • ময়মনসিংহে জয়নুল আবেদিন উদ্যানে উচ্ছেদ হচ্ছে মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্ক
  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা
  • ময়মনসিংহে ময়লা ছিটিয়ে টাকা ছিনতাই, দুই বছর পর ঢাকা থেকে আসামি গ্রেপ্তার
  • সাগরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত, ঢাকাসহ ৪ বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
  • ময়মনসিংহের সেই মিনি চিড়িয়াখানা ও শিশুপার্কের চুক্তি বাতিল, অপসারণের উদ্যোগ
  • ময়মনসিংহে বন্ধুর বাড়িতে যুবকের রক্তাক্ত মরদেহ
  • টাঙ্গাইলে কুকুরের কামড়ে ২৫ জন আহত
  • জমিজমার বিরোধে থানায় সালিসে গিয়ে ‘রাজনৈতিক মামলায়’ গ্রেপ্তার যুবক
  • ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি, আজও বজ্রসহ বৃষ্টির আভাস