ভবন নির্মাণের জন্য নীলফামারী সরকারি কলেজের জায়গা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর না করার দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে তাঁরা কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়ার কাছে দাবির পক্ষে একটি স্মারকলিপি দেন।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, নীলফামারী সরকারি কলেজের ৩৩ শতাংশ জায়গা আছে। ওই জায়গায় কলেজের ছাত্রাবাস নির্মাণ করার জন্য দাবি জানিয়ে আসছিলেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা; কিন্তু এরই মধ্যে তাঁরা জানতে পেরেছেন, জায়গাটি নীলফামারী শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে ভবন নির্মাণের জন্য দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। যদি শিক্ষার্থীদের দাবি উপেক্ষা করে কলেজের নিজস্ব জায়গা কারও কাছে হস্তান্তর করা হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

কলেজ চত্বরে সমাবেশে বক্তৃতা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নীলফামারী জেলা শাখার আহ্বায়ক সৈয়দ মেহেদী হাসান আশিক, ওয়ারিয়র্স অব জুলাই নীলফামারী জেলা শাখার সদস্যসচিব মোস্তফা মুহাম্মদ শ্রেষ্ঠ, জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নীলফামারী সরকারি কলেজ শাখার সদস্যসচিব মো.

পায়েলুজ্জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ আহমেদ, মো. রাইসুল ইসলাম, ইসলামী ছাত্রশিবির নীলফামারী সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি মো. হাসান আলী প্রমুখ।

মো. পায়েলুজ্জামান বলেন, কলেজের ওই জায়গা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হলে শুধু ছাত্রাবাসই নয়, অবকাঠামোগত নানা সংকটে পড়তে হবে কলেজকে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন শিক্ষার্থীরাই।

এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাজেরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি স্কুল-কলেজ ও আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন। আমাদের ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ আছে; কিন্তু জমি অধিগ্রহণের বরাদ্দ নেই। নীলফামারী সরকারি কলেজের ৩৩ শতাংশ পতিত জমি আছে। আমরা সেখানে ভবন করার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছি। এটার অনুমোদন দেবেন শিক্ষাসচিব। অনুমোদন না পেলে জোর করে ভবন করার কোনো সুযোগ নেই।’

জানতে চাইলে নীলফামারী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের কলেজের জায়গার অপ্রতুলতা রয়েছে। এখানে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের ভবন না করার ব্যাপারে কলেজ পরিষদের তরফ থেকে বিষয়টি জেলা প্রশাসক ছাড়াও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কল জ র র জন য সরক র ভবন ন

এছাড়াও পড়ুন:

সবাই ভেবেছিলেন কিশোরী ডুবে গেছে, ১০ দিন পর ফোন করে জানাল সে গাজীপুরে আছে

১০ দিন আগে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল করতে গিয়েছিল কিশোরী সোহানা খাতুন। বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্য ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান পায়নি। তবে গত বুধবার রাতে মাকে ফোন করেছে সোহানা; জানিয়েছে সে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

নিখোঁজ হওয়া কিশোরীর নাম সোহানা খাতুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের বাঁশগ্রাম কারিগর পাড়ায়। তার বাবা গোলাম মওলা ও মা শিরিনা খাতুন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯ জুলাই দুপুরে বাড়ির পাশের মরা কালিগঙ্গা নদীতে গোসল ও কাপড় ধুতে গিয়েছিল সোহানা। দীর্ঘ সময়েও না ফেরায় তার মা নদীর ধারে যান; দেখেন, সোহানার কাপড় পড়ে আছে। এরপর স্বজন ও এলাকাবাসী তাকে খুঁজতে শুরু করেন। খবর পেয়ে ওই রাতে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়। পরদিন খুলনা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ১২ ঘণ্টা অভিযান চালিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে অভিযান স্থগিত করে। ২১ জুলাই এক কবিরাজ এনে নদীতে খোঁজার চেষ্টাও করেন সোহানার বাবা–মা।

এমন অবস্থায় বুধবার রাতে হঠাৎ সোহানা তার মায়ের ফোনে কল দিয়ে জানায়, সে ঢাকার গাজীপুরে তার প্রাক্তন স্বামীর কাছে রয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান সোহানার বাবা গোলাম মওলা। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ভেবেছিলাম, মেয়ে নদীতে ডুবে গেছে। সবাই মিলে খোঁজাখুঁজি করেছি। এমনকি কবিরাজও এনেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ বুধবার আমার স্ত্রীকে ফোন দিয়ে জানায়, সে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে। আমরা বিষয়টি গতকাল রাতে পুলিশকে জানিয়েছি।’ বিষয়টি বুঝতে না পেরে সবাইকে কষ্ট দেওয়ার জন্য তিনি ক্ষমা চান।

স্থানীয় লোকজন জানান, প্রায় দুই বছর আগে খালাতো ভাই কুতুব উদ্দিনের সঙ্গে পালিয়ে যায় সোহানা এবং দুজন বিয়ে করে। তবে বনিবনা না হওয়ায় তিন মাস আগে সোহানা তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। নদীতে নিখোঁজ হওয়ার ‘নাটক’ করে সে পালিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম বলেন, শুরুতে পরিবারের লোকজন জানিয়েছিল, নদীতে গোসলে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে সোহানা। গতকাল আবার তার বাবা জানিয়েছে, মেয়ে গাজীপুরে প্রাক্তন স্বামীর কাছে আছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ