সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর বিদেশে অর্থ পাচারে সহায়তার অভিযোগে তিনজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পূর্বপরিচিত যে তিনজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন উৎপল পাল, আবদুল আজিজ ও সৈয়দ কামরুজ্জামান।

দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাইফুজ্জামান চৌধুরী নামে–বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ তুলে সেটি উৎপল পাল, আবদুল আজিজ ও সৈয়দ কামরুজ্জামানের সহায়তায় বিদেশে পাচার করেছেন। এই তিনজন বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে দুদক জানতে পেরেছে। শুনানি নিয়ে আদালত এই তিনজনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন।

এর আগে গত ৯ মার্চ সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তাঁর পরিবারের নামে থাকা ২৩টি কোম্পানির ১০২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা মূল্যের শেয়ার অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ৯৫৭ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়। তার আগে ৫ মার্চ সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর ২৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত।

সাইফুজ্জামানের ২৯টি ব্যাংক হিসাবে ৫ কোটি ২৬ লাখ ৮৩ হাজার ৮৫ টাকা লেনদেনের তথ্য আদালতকে জানিয়েছে দুদক। দুদকের পক্ষ থেকে আদালতে বলা হয়, সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর সাইফুজ্জামান ও তাঁর স্ত্রী রুকমীলা জামানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত। তখন দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল, সাইফুজ্জামানের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারসহ অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আছে। দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, সাইফুজ্জামান বিদেশে অর্থ পাচার করে নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে যুক্তরাজ্যে ৩৫০টি বাড়ি কিনেছেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিনি বাড়ি কিনেছেন ২২৮টি। যুক্তরাষ্ট্রে ৯টিসহ অন্যান্য দেশেও তিনি বাড়ি কিনেছেন। এর বাইরে অবৈধভাবে দেশেও তিনি সম্পদ অর্জন করেছেন বলে জানা যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব ক ভ ম মন ত র অর থ প চ র

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ