ড. ইউনূসের ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’ বাস্তবায়নের জন্য গণঅভ্যুত্থান হয়নি: ফরহাদ মজহার
Published: 19th, June 2025 GMT
ড. ইউনূসের থ্রি জিরো তত্ত্বকে জাতীয় নীতি আকারে গ্রহণ করা হয়নি। এই থ্রি জিরোকে ইমপ্লিমেন্ট করার জন্য গণঅভ্যুত্থানটা হয়নি। আমি ইউনূস ভাইকে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে বলছি কথাটা, এটা তার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করে। এই বাজেটে তারা বলছে থ্রি জিরো বাস্তবায়ন করবে। কিন্তু এটার জন্য আমরা গণঅভ্যুত্থানটা করি নাই।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরম খাঁ হলে সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি অ্যান্ড পিস স্টাডিজ আয়োজিত বাজেট সংলাপ ২০২৫-এ এসব কথা বলেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
তিনি বলেন, ‘আমরা চেয়েছি ভিন্ন ধরনের বাজেট। যেখানে লুটপাটতন্ত্রকে অবৈধ বলা হবে। এটা পেলেই যথেষ্ট। আর তার যে ‘থ্রি জিরো তত্ত্ব’ সে সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য আছে আলাদা। সেটা আমরা আলাদা করবো। এটা একটা ব্যক্তির স্বপ্ন। আমরা এটার প্রশংসা করি। কিন্তু আমাদের কথা তার এই তত্ত্ব বাজেট প্রস্তাবনায় কেন? আন্তর্জাতিকভাবে এটার খ্যাতি থাকতে পারে, কিন্তু বাংলাদেশে এই তত্ত্ব সঠিকভাবে নেই। এটা আলোচনার অধিকার আমাদের আছে। তাকে অসম্মান করার জন্য বলছি না, তবে এটা যদি তিনি বাজেটে ঢোকান তাহলে তিনি অসম্মানিত হবেন।’
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘এটি নির্বাচিত সরকার, তবে অন্তর্বর্তী বটে। কিন্তু নির্বাচিত, অনির্বাচিত না। আমাদের লুটেরা-মাফিয়াতন্ত্রওয়ালারা বলে এটা অনির্বাচিত সরকার। এটা নির্বাচিত সরকার; এটা আমরা মেনে নিয়েছি কেন.
রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমি মনে করি, এই বাজেটটা আমাদের যথেষ্ট পরিমান সন্তুষ্ট করতে পারে নাই। যে স্পিরিটটা আমরা বাজেটে দেখতে চেয়েছি; সেটা আমরা দেখি নাই। এটা একান্তই একটা পুরোনো টেকনোক্র্যাটিক এক্সারসাইজ মনে হয়েছে। লুটপাটতন্ত্রের সবচেয়ে দৃশ্যমান বিষয় হলো- কালো টাকা সাদা করা। অবশ্যই এটাকে সংশোধন করতে হবে। কালো টাকা এখন সাদা হয় কোন যুক্তিতে? গণঅভ্যুত্থানের পরে এটা করবার কোনো যুক্তি নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাজেটে সেনাবাহিনীর জন্য আমরা কীভাবে খরচ করি, প্রতিরক্ষা জন্য তার কোন স্পষ্ট উল্লেখ নেই৷ এটা হতে পারে না। অবশ্যই আমাকে জাতীয় প্রতিরক্ষা একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। আর তা গড়ে তুলতে হলে তার জন্য আমার খরচ আছে। এটা একটা ন্যায্য খরচ। সেই খরচ আমি কোথা থেকে তুলবো, কে দেবে? এটা তো একটা থাকতে হবে, যে টাকাটা কোথায় খরচ হচ্ছে?’
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ‘লুটেরা শ্রেণি আমলাতন্ত্রকে বহাল রাখার জন্য তাদের টাকার একটু পরে অংশ খরচ করে। এখন আবার দেখবেন যে, গণভোটের পরে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার নামে আমলাতন্ত্রকে রেখে দেয়। একটা ছোট্ট শব্দ সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা। তারা বলে এটা রাখতে হবে, এর নামে আমলাতন্ত্র কে রেখে দেয়। ৮ তারিখে (গত বছরের ৮ আগস্ট) যে একটা সরকার করলেন, লুটপাটতন্ত্রকে টিকিয়ে রাখার জন্যই। কিন্তু আপনি এই একটা সরকার করেছেন। এই সরকারের আসলে কিন্তু কোন ক্ষমতা নেই। এখন যে টিকে আছে, এটা বিরাট ব্যাপার, দোয়া করেন।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স গণঅভ য ত থ ন ফরহ দ মজহ র আম দ র তত ত ব র জন য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচনের চেষ্টা হলে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে’
‘‘প্রয়োজন হলে বাংলাদেশে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে, কিন্তু পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন বাংলাদেশে হতে দেওয়া যাবে না।’’
শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজশাহীতে পথসভায় এমন কথা বলেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের স্থানীয় নেতারা। দুপুরে বিক্ষোভ মিছিলের আগে শহরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।
আরো পড়ুন:
গকসু নির্বাচন: যত্রতত্র প্রচারে বিরক্ত শিক্ষার্থীরা
চাকসু নিয়ে স্বরাষ্ট্র ও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে চবি প্রশাসনের মতবিনিময়
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী মহানগর ও জেলার উদ্যোগে আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য দেন, দলটির রাজশাহী জেলার সভাপতি হাফেজ মাওলানা মুরশিদ আলম ফারুকী, মহানগরের সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা হোসাইন আহমদ, জেলার সাধারণ সম্পাদক তারিক উদ্দিন প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘‘গত ৫৪ বছরে যারা শাসক হিসেবে ছিলেন, তারা কখনোই শাসন করেননি, শোষণ করেছেন। স্বাধীনতার পর দেশের মানুষ মুক্তির যে আশা করেছিল, এখন পর্যন্ত তা দেখতে পায়নি। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর দেশবাসী মুক্তির যে পথ দেখে ছিল, বর্তমানে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। ছাত্র-জনতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে একটি বিশেষ দলের চাপে সরকার রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া তাড়াতাড়ি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত। তা হতে দেওয়া হবে না।’’
তারা বলেন, ‘‘বর্তমানে একটি দল আবারো ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ শাসনের জন্য আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর পদ্ধতি ছাড়া তাড়াতাড়ি নির্বাচন চাচ্ছে। দেশের সম্পদ লুটপাট করার জন্য তারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায় না। তারা পিআর বোঝেন না কিন্তু চাঁদাবাজি বোঝেন। আগে গণঅভ্যুত্থানের বিচার হবে, তারপর সংস্কার, তারপরে নির্বাচন। প্রয়োজন হলে বাংলাদেশে আরেকটি গণঅভ্যুত্থান হবে, কিন্তু পিআর পদ্ধতি ছাড়া নির্বাচন হবে না।’’
এর আগে জুমার নামাজের পর জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা, বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে সাহেববাজার বড়মসজিদ প্রাঙ্গণ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। শহরের সাহেববাজার ও মনিচত্বর প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।
এতে ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আতিকুর রহমান মোজাহিদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি ফয়সাল হোসেন মনি, ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের জেলার সভাপতি আবুল বাশার, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের জেলার সভাপতি হাফেজ আবুল হাসান, ইসলামী যুব আন্দোলনের মহানগরের সভাপতি হাসিবুর রহমানসহ দলটির প্রায় ২০০ জন নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/কেয়া/বকুল