দেশে তৈরি যন্ত্রাংশ আমদানিতে শুল্ক ছাড়ে ঝুঁকির মুখে স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স শিল্প খাত
Published: 4th, November 2025 GMT
দেশে ইতোমধ্যেই তৈরি হয় ফ্রিজ ও এসির এমন যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক (এসডি) ছাড় দিয়েছে সরকার। অন্যদিকে দেশে এসব যন্ত্রাংশ তৈরির কাঁচামাল আমদানিতে আরোপ করা হয়েছে উচ্চ শুল্ক হার। এতে দেশের ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য উৎপাদন শিল্প খাত পড়েছে বড় ঝুঁকিতে। অন্ধকার দেখছেন এ খাতের বিনিয়োগকারীরা।
তারা বলছেন, এ সিদ্ধান্তে দেশে ইলেকট্রনিক্স পণ্য ও যন্ত্রাংশ উৎপাদনের চেয়ে আমদানি লাভজনক হয়ে উঠেছে। ফলে স্থানীয় শিল্পায়ন ব্যাহত হচ্ছে কর্মসংস্থান হারাচ্ছে বিপুল জনগোষ্ঠী। সংশ্লিষ্টদের মতে, এরূপ সিদ্ধান্তের ফলে ইলেকট্রনিক্স খাতে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতায় বাংলাদেশের অগ্রগতি থমকে যাচ্ছে। উৎপাদন শিল্পের আড়ালে আমদানির্ভর সংযোজন শিল্প বিকাশের পথ সুগম হয়েছে।
আরো পড়ুন:
অক্টোবরে রেমিট্যান্স এল ৩১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা
উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বিজিএমইএ-এনপিও সমঝোতা স্মারক
উল্লেখ্য, গত ২৪ জুন ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনে ব্যবহৃত খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানি সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন (এসআরও নম্বর-২৭৪-আইন/২০২৫/৩১৭-মূসক) জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। উক্ত এসআরওতে রেফ্রিজারেটর, ফ্রিজার ও এয়ারকন্ডিশনার তৈরিতে ব্যবহৃত হয় এমন বেশ কিছু প্রয়োজনীয় উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে, যা বাংলাদেশেই বহু বছর আগে থেকেই উৎপাদিত হয়ে আসছে। পক্ষান্তরে এসব যন্ত্রাংশ উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে বিনিয়োগকারীদের উচ্চ শুল্ক দিতে হচ্ছে যা স্থানীয় বৃহৎ ইলেকট্রনিক্স শিল্প খাতের জন্য হুমকিস্বরূপ।
স্থানীয় শিল্পের পরিপন্থি এমন সিদ্ধান্তে হতবাক এই শিল্পে বিনিয়োগকারী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। তারা জানান, এই সিদ্ধান্তের ফলে স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স উৎপাদন শিল্পে দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের বিদ্যমান কয়েক হাজার কোটি টাকার বিশাল বিনিয়োগই শুধু নয়, লক্ষাধিক লোকের কর্মসংস্থানও ঝুঁকির মুখে পড়েছে। বাধাগ্রস্ত হয়েছে সম্পূর্ণ উৎপাদনমুখী দেশীয় ইলেকট্রনিক্স ও প্রযুক্তিপণ্য শিল্প খাতের টেকসই বিকাশ। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে ফ্রিজ-এসি উৎপাদন খাতে উল্টো পথে হাঁটছে সরকার।
ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের দেড় কোটি মানুষ খাদ্য সংকটে পড়তে যাচ্ছে বলে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ ইউনিট (এফপিএমইউ), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ) ও বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)।
এর আগে সরকারি সংস্থা এটুআই এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গবেষণার তথ্য বলছে, ২০৩০ সালের মধ্যে চাকরি হারাতে পারেন দেশের প্রায় ৫৩ লাখ ৮০ হাজার মানুষ। স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন শিল্প খাতের পরিপন্থি শুল্কনীতির ফলে এই সংকট আরো ঘণীভূত হবে বলে আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
জানা গেছে, এসআরও নম্বর-২৭৪-আইন/২০২৫/৩১৭-মূসক এর ৮৪.
ফ্রিজের পাশাপাশি দেশীয় এয়ার কন্ডিশনার উৎপাদন শিল্পের ক্ষেত্রেও শিরোনাম সংখ্যা ৮৪.১৫-এর অধীনে এইচএস কোড ৮৪১৫.৯০.৯০-এর আওতায় দেশে উৎপাদিত হচ্ছে এমন বেশ কয়েকটি উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানির ক্ষেত্রেও সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে-ফ্যান ব্লোয়ার, কানেকটিং পাইপ, এক্সিয়াল ফ্যান, ক্যাসিং ফর ইনডোর, এয়ার গাইড প্লেট, টিউব প্লেট, এয়ার ফিল্টার, আইডিইউ প্যানেল, ডিস্ট্রিবিউশন পাইপ এবং ক্রস ফ্লো ফ্যান।
নতুন এসআরও অনুযায়ী ফ্রিজে ব্যবহৃত হয় এমন তৈরিকৃত (সেমি ফিনিশড) যন্ত্রাংশ বিদেশ থেকে বিনা শুল্কে আমদানি করা গেলেও একই যন্ত্রাংশ দেশে তৈরির জন্য কাঁচামাল আমদানিতে ৪৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রদান করতে হচ্ছে। আর এসির ক্ষেত্রে কাঁচামাল আমদানিতে ১৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক প্রদান করতে হচ্ছে। ফলে আমদানিকারক-সংযোজনকারী এবং উৎপাদনকারীদের মধ্যে পলিসিগত সামঞ্জস্য থাকছে না। উৎপাদনকারীর বিপুল বিনিয়োগ হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হারাচ্ছে।
এসআরও সুবিধা পাওয়ার জন্য যেসব মেশিনারিজ থাকতে হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, সেসব মেশিনারিজ দিয়ে যেসব যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয়, সেগুলোর শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে। এখন যেসব উৎপাদনকারী ইতোমধ্যেই বিপুল বিনিয়োগ করে উক্ত মেশিনারিজগুলো স্থাপন করেছেন, তাদের সেসব মেশিনারিজ কোনো কাজেই লাগছে না। কারণ উক্ত মেশিনারিজ ব্যবহার করে যেসব যন্ত্রাংশ তৈরি করা হচ্ছে, সেসব যন্ত্রাংশের মূল্য আমদানিকৃত যন্ত্রাংশের চেয়ে অনেক বেশি হচ্ছে। ফলে আমদানিকে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং উৎপাদনকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
এছাড়া এই শিল্প খাতে নতুন কোনো বিনিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং মূল্য সংযোজন হচ্ছে না। কারণ একজন উৎপাদনকারীকে তিন ধাপে বিনিয়োগ করে (মেশিনারিজ ক্রয় ও স্থাপন, লোকবল নিয়োগ এবং উচ্চ শুল্কে কাঁচামাল আমদানি) যন্ত্রাংশ তৈরি করতে হচ্ছে। পক্ষান্তরে এসআরও সুবিধায় কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই বিনা শুল্কে এসব যন্ত্রাংশ আমদানি করা যাচ্ছে, যা অধিক লাভজনক হওয়ায় দেশ উৎপাদনমুখী শিল্পের পরিবর্তে সংযোজনমুখী শিল্পে রূপান্তরিত হচ্ছে।
খাত সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এসআরও-২৭৪ এর ফলে সেমি ফিনিশড গুডস (এসএফজি) এবং প্লাস্টিক শিল্পে সরাসরি নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ইলেকট্রনিক্স শিল্পে ব্যবহৃত প্লাস্টিক পার্টসের একটি বিশাল অংশের যোগান আসে এই দুটি খাত থেকে। বর্তমানে দেশে সেমি ফিনিশড গুডস প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ৯,৫০০ কোটি টাকা। আর এ খাতে স্থানীয় মূল্য সংযোজনের পরিমাণ ৫০০ কোটি টাকারও বেশি। এখানে কর্মসংস্থান প্রায় ৭ হাজার মানুষের। আর প্লাস্টিক শিল্প খাতে দেশে মাঝারি ও ক্ষুদ্র প্রায় ৬,০০০ কারখানা রয়েছে, যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে ১৫ লাখের অধিক মানুষের। দেশের জিডিপির প্রায় ১ শতাংশ এই শিল্পনির্ভর। এসআরও-২৭৪ এর ফলে এই খাতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এতে এই খাত বিপুল কর্মসংস্থান হারাচ্ছে, দেশের শিল্পায়ন ব্যাহত হচ্ছে।
তৈরি পোশাক খাতের পর বাংলাদেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় রপ্তানি খাত হিসেবে দ্রুত উঠে আসছে ইলেকট্রনিক্স খাত। কিন্তু এসআরও-২৭৪ এর কারণে ইলেকট্রনিক্স পণ্যের রপ্তানি খাত ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির নতুন ক্ষেত্র সংকুচিত হয়েছে। এতে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা কঠিন হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে রয়েছে। ফলে ইউরোপীয় ও আমেরিকান বাজারে রপ্তানি সুবিধা বজায় রাখতে হলে বর্তমানে প্রযোজ্য ৩০ শতাংশ মূল্য সংযোজনের পরিবর্তে কমপক্ষে ৪০ শতাংশ মূল্য সংযোজন নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ পণ্যের মোট মূল্যের অন্তত ৪০ শতাংশ বাংলাদেশে উৎপাদিত হতে হবে। কিন্তু এসআরও-২৭৪ অনুযায়ী উৎপাদনমুখীতা থেকে দেশ আমদানিমুখী হয়েছে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য বৈষম্য দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এ খাতের দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের প্রশ্ন যেসব দেশীয় ফ্রিজ ও এসি প্রতিষ্ঠান আমদানি বিকল্প উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করছে এবং উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় মেশিনারিজ ও প্লান্টস রয়েছে, তবে কেন এবং কাদের স্বার্থে ওসব যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করা হলো? এই শুল্ক নীতিমালার মাধ্যমে কোন উদ্দেশ্যে দেশীয় হাই-টেক শিল্প খাতের বিকাশ বাধাগ্রস্ত করা হলো? এসব বিষয় গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে স্থানীয় ফ্রিজ ও এসি উৎপাদন শিল্পের তৈরিকৃত সমজাতীয় উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের সুবিধা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তারা।
তারা বলছেন, এতদিন যেসব দেশীয় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রিজ ও এসির আনুষঙ্গিক উপকরণ ও খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি করে আসছিলেন, সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার করায় তাদের কাছে ওসব যন্ত্রাংশ উৎপাদনের চেয়ে বরং আমদানি করাই বেশি লাভজনক হয়ে উঠেছে। ফলে তারা এখন আমদানির প্রতি ঝুঁকছেন। এতে আমদানি ব্যয় বাড়ছে, যা দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এছাড়াও এ খাতের খুচরা যন্ত্রাংশ উৎপাদনেও নতুন কোনো বিনিয়োগ আসছে না। ফলে শুধু এ খাতের ভবিষ্যৎ বিনিয়োগই নয়, কর্মসংস্থান সৃষ্টির পথও সংকুচিত হচ্ছে এবং বিপুলসংখ্যক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছেন।
তাই দেশীয় প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ফ্রিজ ও এসির যেসব খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে, সেসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়টি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের গুরুত্বসহকারে পুনর্বিবেচনা করে তা বাতিল করা উচিত বলে অভিমত জানিয়েছেন শিল্প খাতে বিনিয়োগ সংশ্লিষ্টরা।
শিল্প সংশ্লিষ্টদের অভিমত, দেশীয় উৎপাদনমুখী ইলেকট্রনিক্স শিল্প খাতের টেকসই বিকাশের স্বার্থে এবং এ খাতের দেশীয় শিল্পোদ্যোক্তাদের বিশাল বিনিয়োগ সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে ফ্রিজ, এসির যেসব খুচরা যন্ত্রাংশ এখন দেশেই উৎপাদিত হচ্ছে, সেসব আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতির সুবিধা বাতিল করে যৌক্তিক হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা অত্যন্ত জরুরি। একইসঙ্গে কাঁচামাল আমদানিতে শুল্কহ্রাস করা এখন সময়ের দাবি।
ঢাকা/সাহেল/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ম ল আমদ ন ত ম ল য স য জন উৎপ দনক র ফ র জ ও এস শ আমদ ন ত শ উৎপ দ আমদ ন র উৎপ দ ত ব যবহ ত র জন য এই শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি নেতা কামাল জামানের মনোনয়ন স্থগিতের প্রতিবাদে সমাবেশ
মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদে জনসভা হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেলে শিবচরে উপজেলার হাতির মাঠে এ জনসভা হয়।
বিকেল চারটা থেকে প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওয়ার্ডগুলো থেকে দলে দলে নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জনসভাস্থলে আসেন। এ সময় ঢাকঢোল বাজিয়ে ব্যানার–ফ্যাস্টুন হাতে নিয়ে কামাল জামানের অনুসারী নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
আরও পড়ুনমাদারীপুর-১ আসনে বিএনপি প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ০৫ নভেম্বর ২০২৫জনসভায় বক্তারা বলেন, কামাল জামান মোল্লা বিএনপির একজন ত্যাগী নেতা। তিনি গণমানুষের অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে থেকে লড়াই করেছেন। শিবচর বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন। ষড়যন্ত্রকারীরা ভুল তথ্য প্রচার করে কামাল জামানকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তাঁকে মনোনয়ন দেওয়ার পর তা স্থগিত রাখা একটি সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র। কিন্তু বিশাল এই জনসমর্থন প্রমাণ করে যে কামাল জামান মোল্লাকে বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ এমপি হিসেবে দেখতে চান।
জনসভায় শিবচর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন খান বলেন, ‘এটি ঐতিহাসিক জনসভা। যোগ্য নেতাকে পুনর্বহালের দাবিতে জনসভা। মাদারীপুর-১ আসনে যদি বিএনপি কোনো প্রার্থীকে মনোনয়ন দেয়, তাহলে আমাদের প্রিয় নেতা কামাল জামান মোল্লাকেই দিতে হবে। অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে বিএনপির কর্মীরা তা মানবে না।’
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহজাহান সাজু মোল্লা বলেন, শিবচরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ও জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে কামাল জামানকে পছন্দ করেন। বিএনপির মনোনয়ন স্থগিত হওয়ায় তাঁরা খুবই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন। কিন্তু বিশাল এই জনসভা বলে দিচ্ছে, নেতা-কর্মীরা এমপি হিসেবে কামাল জামানকেই চান।
প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর মাদারীপুর-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে শিবচর উপজেলা বিএনপির সদস্য ও সাবেক আহ্বায়ক কামাল জামান মোল্লার নাম ঘোষণা করা হয়। এরপরই মাদারীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মনোনয়নবঞ্চিত সাজ্জাদ হোসেন সিদ্দিকীর সমর্থকেরা ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাঁচ্চরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। এর এক দিন পরই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাদারীপুর-১ আসনে মনোনয়ন স্থগিত করা হয়।
মনোনয়ন স্থগিত করার প্রতিবাদে এবং মনোনয়ন পুনর্বহালের দাবিতে গত বুধবার কামাল জামানের অনুসারী নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা শিবচরের প্রধান সড়ক ‘সড়ক ৭১’-এ বিক্ষোভ মিছিল এবং সড়ক অবরোধ করেন।
আওয়ামী লীগের ৫০ থেকে ৬০ জন দোসর রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন উল্লেখ করে আজকের জনসভায় কামাল জামান মোল্লা বলেন, ‘এসব করে লাভ নেই, শিবচরের জনগণকে আমি মুক্ত করব, দোসরমুক্ত করেই ছাড়ব। আপনারা জনগণই আমার শক্তি। আমি বিশ্বাস করি, জনগণকে নিয়ে আমি এই আসনে নির্বাচন করে নির্বাচিত হব।’