হবিগঞ্জ জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় করা হত্যা মামলার এক আসামি। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরাও আছেন কমিটিতে। এ নিয়ে আপত্তি উঠেছে দলের ভেতর থেকে।

এনসিপি সূত্র জানায়, ১৫ জুন হবিগঞ্জ জেলার আংশিক সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করা হয়। নাহিদ উদ্দিন তারেককে প্রধান সমন্বয়কারী ও মো.

মাহবুবুল বারী চৌধুরীকে যুগ্ম সমন্বয়ক করে ২৩ সদস্যের এই জেলা সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়। আগামী তিন মাসের মধ্যে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগপর্যন্ত এ কমিটি কাজ করবে।

এনসিপি সূত্র জানায়, গণ অধিকার পরিষদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা মাহবুবুল বারী চৌধুরীকে কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী করা হয়েছে। এ ছাড়া কমিটিতে সদস্য করা হয়েছে লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীক নিয়ে জয়ী কামাল আহমেদ, চুনারুঘাট সদর ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে জয়ী চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান চৌধুরী নোমান, জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন ও মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চুনারুঘাটের মির দুলাল। তাঁদের মধ্যে মাহবুবুর রহমান চৌধুরী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় করা একটি হত্যা মামলার আসামি। আর নাসির উদ্দিনের নামে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা আছে।

তা ছাড়া নতুন কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন হারুন আল রশিদ নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আমাকে না জানিয়ে কমিটিতে রাখা হয়েছে।’

হবিগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘এই কমিটি জুলাই চেতনার পরিপন্থী। এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের ভুল বুঝিয়ে এ কমিটি করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ২৩ সদস্যের এ কমিটির মধ্যে ১০ জনকে নিয়ে বিতর্ক আছে। তাঁদের মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় হত্যা মামলার আসামি আছেন; আছেন মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিও।

তবে এনসিপির হবিগঞ্জ জেলা কমিটির মুখ্য সমন্বয়ক নাহিদ উদ্দিন তারেক বলেন, ‘যাঁদের নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, তাঁরা হয়তো আগে বিভিন্ন দলে ছিলেন। কিন্তু তাঁরা দীর্ঘদিন কোনো দলে সক্রিয় ছিলেন না। তাঁরা এনসিপির জুলাই চেতনা মেনে দলে যুক্ত হয়েছেন।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘটনায় হত্যা মামলার আসামি, চাঁদাবাজি ও মাদক মামলার আসামি কীভাবে কমিটিতে স্থান পেলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকার হত‌্যা মা‌মলা‌টি ষড়যন্ত্রমূলক। বাদী নি‌জেও জা‌নেন না কারা আসা‌মি। এ ছাড়া মাদক ও চাঁদাবা‌জির মামলায় যাঁদের আসা‌মি করা হয়েছে, তাঁরাও নানা সময় নানা প‌রি‌স্থি‌তির কার‌ণে আসা‌মি হ‌য়ে‌ছেন। তিনি বলেন, অভিযোগগুলো তাঁরা যাচাই ক‌রে দে‌খে‌ছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সমন বয়ক এনস প র কম ট র য় কম ট ম হব ব কম ট ত সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়

ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।

পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।

ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব  প্রায় ১০০ কিলোমিটার।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি  এখন সারানো  হয়েছে।

ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।  

ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।

ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে।  পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’

ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’

ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।

আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ