ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। প্রথমবারের মতো এএফসি নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিয়েছে ঋতুপর্ণা চাকমাদের দল। ফুটবল ইতিহাসের পাতায় নতুন করে নাম লিখিয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা, যেটিকে অনেকে বলছেন দেশের ক্রীড়াঙ্গনের অন্যতম বড় অর্জন।

বুধবার ইয়াঙ্গুনের থুওয়ান্না স্টেডিয়ামে বাছাইপর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্বাগতিক মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশ। দুই অর্ধে জোড়া গোল করে দলের জয়ে মূল ভূমিকা রাখেন পাহাড়ি কন্যা ঋতুপর্ণা চাকমা। এর আগেই বাহরাইনকে হারিয়ে দারুণ সূচনা করেছিল মেয়েরা। পরে বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তানের মধ্যকার ম্যাচটি ড্র হওয়ায় এক ম্যাচ হাতে রেখেই গ্রুপ ‘সি’-এর চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের চূড়ান্ত পর্বে জায়গা।

এই ঐতিহাসিক জয়ের পর বৃহস্পতিবার রিকভারি সেশনেই দেখা গেল মেয়েদের মুখে তৃপ্তির হাসি। তবে এখনো পুরো উদ্‌যাপন হয়নি,  অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার শিউলি আজিম জানিয়েছেন, বাকি এক ম্যাচ শেষ করেই উদ্‌যাপন করবেন মেয়েরা। 

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন আমাদের গ্রুপ দেখলাম, তখন থেকেই লক্ষ্য ছিল যদি সবাই মিলে মন থেকে খেলি, তাহলে কোয়ালিফাই করা সম্ভব। এখন আমরা প্রায় কাছাকাছি পৌঁছে গেছি। যদিও একটা ম্যাচ বাকি আছে, তাই পুরোপুরি উদ্‌যাপন করিনি। লাস্ট ম্যাচ শেষে করব।’

নারী দলের সহকারি কোচ মাহবুবুর রহমান লিটুও মেয়েদের প্রশংসা করে জানান, এই জয় শুধুই একটি ম্যাচ জেতা নয়, এটি বছরের পর বছর মেয়েদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতিফলন। তার ভাষ্যে, আলহামদুলিল্লাহ, মেয়েরা খুব ভালো আছে, ভালো মুডেই আছে। গতকাল আমরা ভাইটাল একটা ম্যাচ জিতেছি, আজ তাই রিকভারি সেশন করেছি। মেয়েদের দীর্ঘদিনের কষ্টের ফসল হলো এই অর্জন। আমাদের এখনো একটি ম্যাচ বাকি আছে, সেটিও গুরুত্ব সহকারে খেলব।

২০২৬ নারী এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বটি অনুষ্ঠিত হবে অস্ট্রেলিয়ায়। এই টুর্নামেন্টই আবার ২০২৭ নারী বিশ্বকাপ এবং ২০২৮ অলিম্পিকের বাছাইপর্ব হিসেবেও বিবেচিত হবে। ফলে ইতিহাসের দরজা একবার খুলতেই এখন বিশ্বমঞ্চের হাতছানিতে বিভোর ঋতুপর্ণারা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন র ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

পুকুরের সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পে অনিয়ম

‘পানি শুকানোর আগে জেলে এনে মাছ ধরা হয়েছে। পরে পানি শুকিয়ে আরেক দফা মাছ ধরেছে। পুকুরের মাটিও কাটেনি। পুকুরের পাড় দৃষ্টিনন্দন করার জন্য টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। কাজ না করেই টাকা লুট করা হচ্ছে। পুকুরচুরি নয় যেন সাগরচুরি হয়েছে এখানে।’
নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে এসব কথা বলছিলেন সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা ছাত্রদলের একজন সাবেক নেতা। বললেন, ‘যারা কাজ করেছে তারা, আর আমরা একদল করি। এজন্য নামটা না ছাপালেই ভালো হয় ভাই।’
উপজেলা পরিষদের পাশে ইউএনওর বাসার সামনের সরকারি পুকুরে উন্নয়নকাজের নামে করা অকাজ হচ্ছে বলে জানিয়ে ওই ছাত্রদল নেতা বলেন, বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মানুষ ক্ষুব্ধ। 
জানা গেছে, এলজিইডির ‘খাল খনন-পুকুর খনন’ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ টাকায় পুকুরটির উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। কাজটি পেয়েছে আরতী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু উপঠিকাদার হিসেবে প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছেন যুবদল ও ছাত্রদলের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। 
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কোনো লোককে সেখানে দেখা যায়নি। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তুজাম্মিল হক নাছরুম এবং উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসনাত রাসেলসহ কয়েকজন ছাত্র ও যুবদলের নেতারা পুকুরের উন্নয়নকাজ করছেন। এই কাজ করতে গিয়ে তারা পুকুরের আরও বেশি ক্ষতি করেছেন। 
স্থানীয় বাসিন্দা একজন সরকারি চাকরিজীবী বললেন, পুকুরে আগে থেকেই তিনটি ঘাটলা ছিল। নতুন আরও দুটি ঘাটলা করার কথা ছিল। দুই পাড়ে ওয়াকওয়ে এবং পশ্চিম কোণে দৃষ্টিনন্দনভাবে বসার স্থান করার কথা ছিল। এছাড়া পুকুরের মাটি খনন করে পাড় ভরাট ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে জানিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। একটি ঘাটলা নামকাওয়াস্তে করা ছাড়া, আর কিছুই এখানে হয়নি। 
অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবুল হাসনাত রাসেল বললেন, ‘আমরা প্রকল্পে কয়েকজন মিলে কাজ করেছি। পুকুরের পাড়ে মাটি ভরাটও করেছি। কিন্তু মাটি আটকানোর কোনো ব্যবস্থা প্রকল্পে উল্লেখ না থাকায়, বৃষ্টির পানিতে কিছু মাটি পুকুরে গেছে। অন্য ঘাটলাগুলো সংস্কার করা হয়েছে। ওই পুকুরে তেমন কোনো মাছ ছিল না।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আরতী এন্টারপ্রাইজের পরিচালক সহিবুর রহমানের দাবি, তিনি নিজেই কাজ করছেন। প্রাক্কলনে যেভাবে ঘাটলা করার কথা বলা হয়েছে, সেভাবেই তারা করেছেন। 
উপজেলা প্রকৌশলী জাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, পুকুরের পানি শুকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। ৩০ ফুটের মতো গভীর থাকায়, পানি একেবারে শুকানো যায়নি। তবে পুকুর থেকে মাটি কেটে তোলা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ