শরফুদ্দৌলার সিদ্ধান্তে দুই ভারতীয় নটআউট, নিয়ম পাল্টাতে বললেন ইংলিশ পেসার
Published: 3rd, July 2025 GMT
ভারতের ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন বাংলাদেশের আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ; কিন্তু তা নিয়ে আলোচনা হবে না—এমনটা যেন ভাবাই যায় না।
সর্বশেষ বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফিতে মেলবোর্ন ও সিডনি টেস্টে ভারতীয়দের পক্ষে ও বিপক্ষে সিদ্ধান্ত ও বুমরা-কনস্টাসের বিবাদ সামাল দিয়ে বেশ আলোচিত হয়েছিলেন শরফুদ্দৌলা। এবার অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফিতেও একাধিক সিদ্ধান্ত ঘিরে খবরের শিরোনামে তাঁর নাম।
বার্মিংহামের এজবাস্টনে গতকাল শুরু হয়েছে ইংল্যান্ড-ভারতের দ্বিতীয় টেস্ট। এই ম্যাচে মাঠের আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শরফুদ্দৌলা। কাল তাঁর দুটি সিদ্ধান্ত ভারতের পক্ষে গেছে। এ নিয়ে হতাশ ইংলিশ পেসার ক্রিস ওকস ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) পাল্টানোর দাবি জানিয়েছেন।
প্রথম দিনে নতুন বলে মনে রাখার মতো স্পেল করেছেন ওকস। একটানা ভালো জায়গায় বল ফেলে যাওয়ার পুরস্কার পেয়েছেন ম্যাচের নবম ওভারে। তাঁর অফ স্টাম্পের একটু বাইরে করা লেংথ বল কিছুটা লাফিয়ে উঠেছিল। সেটাই স্টাম্পে টেনে এনে বোল্ড হয়েছেন ভারতীয় ওপেনার লোকেশ রাহুল।
এর আগে আগে ও পরে (তাঁর করা ১৪ বলের মধ্যে) আরও দুটি উইকেট পেতে পারতেন ওকস। ৩৬ বছর বয়সী পেসারের বল ভারতের আরেক ওপেনার যশস্বী জয়সোয়াল ও তিনে নামা করুণ নায়ারের প্যাডে লাগলে এলবিডব্লুর আবেদন করেন ইংলিশরা। দুটি ক্ষেত্রেই আম্পায়ার ছিলেন শরফুদ্দৌলা। কিন্তু ইংলিশদের আবেদনে তিনি সাড়া দেননি।
এরপর ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস রিভিউ নিলে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, ওকসের বল জয়সোয়ালের লেগ স্টাম্পে এবং নায়ারের অফ স্টাম্পে লাগত। কিন্তু বল ট্র্যাকিংয়ে আম্পায়ার্স কলের (শরফুদ্দৌলার নটআউট সিদ্ধান্ত) কারণে সেই যাত্রায় তাঁরা বেঁচে যান। নায়ার পরে ৩১ এবং জয়সোয়াল ৮৭ রান করে আউট হন। ভারত ততক্ষণে বেশ ভালো অবস্থানে পৌঁছে যায়।
শরফুদ্দৌলা দুজনকেই এলবিডব্লু না দেওয়ায় ওকসকে মাঠে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা যায়। বিশেষ করে নায়ার বেঁচে যাওয়ার পর বাংলাদেশি আম্পায়ারকে কিছু একটা বলতে শোনা যায়। শরফুদ্দৌলা জয়সোয়াল ও নায়ারকে আউট দিলে ডিআরএসে তাঁর সিদ্ধান্তই বিবেচনায় নেওয়া হতো এবং ওকস আরও দুটি উইকেট পেয়ে যেতেন। পরে অবশ্য আরেকটি উইকেট নেন ওকস। অফ স্টাম্পের বাইরে পড়ে ভেতরে ঢোকা বল ছেড়ে দিয়ে বোল্ড হন নীতীশ রেড্ডি।
দিনের খেলা শেষে ইংল্যান্ডের প্রতিনিধি হিসেবে ওকসই আসেন সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে ডিআরএসের নিয়ম পাল্টানোর দাবি জানিয়েছেন তিনি, ‘এমনিতে ডিআরএস ক্রিকেটের জন্য ভালো। ডিআরএসের কারণে আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি সঠিক সিদ্ধান্ত দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। আমি শুধু একটা বিষয় বলতে চাই, যদি কোনো ব্যাটসম্যান বল ছেড়ে দেওয়া সিদ্ধান্ত নেয় এবং বল স্টাম্পে আঘাত হানত বলে মনে হয়, তাহলে তাকে আউট দেওয়া উচিত—বল স্টাম্পে হালকা স্পর্শ করুক বা না করুক।’
অধিনায়ক শুবমান গিলের সেঞ্চুরিতে ৫ উইকেটে ৩১০ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছে ভারত। কিন্তু ওকস মনে করেন, শুরুতেই ৩ উইকেট পেয়ে গেলে দিন শেষে ইংল্যান্ডই সুবিধাজনক অবস্থানে থাকত, ‘সত্যিই সকালটা খুব হতাশাজনক ছিল। আমরা সহজেই ৩০ রানে ৩ উইকেট পেতে পারতাম। যখন আপনি দলের জন্য ও নিজের জন্য ভালো করতে মরিয়া হন, তখন আবেগ তীব্র হয়। যদি (শরফুদ্দৌলার) সেই সিদ্ধান্তগুলো আমাদের পক্ষে যেত, তাহলে দিনটি সম্পূর্ণ আলাদা হতো। কিন্তু এটাই টেস্ট ক্রিকেট। আমরা এভাবেই এগিয়ে যাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শরফ দ দ ল আম প য় র উইক ট প জয়স য় ল ড আরএস
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি