যুক্তরাষ্ট্রে একটি উড়োজাহাজের ভেতরে সহযাত্রীর ওপর আক্রমণের অভিযোগে ভারতীয় বংশোদ্ভূত এক তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ৩০ জুন। ফ্রন্টিয়ার এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি ফিলাডেলফিয়া থেকে মায়ামি যাচ্ছিল।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত ২১ বছর বয়সী ইশান শর্মা যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের নিউয়ার্ক শহরের বাসিন্দা। একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, উড়োজাহাজে কিয়ানু ইভানস নামে এক যাত্রীর সঙ্গে তিনি মারামারি করছেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, ইশান শর্মা ও ইভানস একে অপরের গলা চেপে ধরার চেষ্টা করছেন এবং আশপাশের যাত্রীরা তাঁদের দুজনকে থামানোর চেষ্টা করছেন।

ইভানস পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, ‘বিনা উসকানিতে’ ইশান তাঁর ওপর আক্রমণ করেন। ইশান শর্মা নিজের নির্ধারিত আসনে ফিরে যাওয়ার সময় হঠাৎ তাঁর গলা চেপে ধরেন।

ইভানস আরও অভিযোগ করেন, ইশান তাঁর গলা চেপে ধরে অদ্ভুতভাবে হাসি দিচ্ছিলেন। ইভানস বলেন, ‘এ সময় ইশান আমাকে বলেছিলেন, “তুমি একজন দুর্বল, সাধারণ মানুষ। আমাকে চ্যালেঞ্জ করলে তোমার মৃত্যু অবশ্যম্ভাবী।”’

উড়োজাহাজে ইশান শর্মার এক আসন সামনে বসা ছিলেন ইভানস। তিনি বলেন, এ ঘটনার পর তিনি টয়লেটে যান এবং বিষয়টি কেবিন ক্রুদের জানান। তাঁরা তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, সমস্যা হলে যেন তিনি সহায়তা চেয়ে বোতাম চাপেন।

পরে ইভানস অভিযোগ করেন, শর্মা বারবার তাঁকে ‘মেরে ফেলার হুমকি’ দিতে থাকলে তিনি বোতাম চাপেন।

এরপরই পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়।

ইভানস বলেন, ‘বোতাম চাপার পর ইশান আমার দিকে খুব রাগান্বিতভাবে তাকাচ্ছিলেন। আমরা একে অপরের চোখে চোখ রাখছিলাম, মাথা একে অপরের দিকে ছিল। হঠাৎ তিনি আমার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করেন। তখন আমার শরীরের স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া কাজ করে, লড়াই বা পালানোর মতো। কিন্তু উড়োজাহাজের ভেতরে জায়গা খুব অল্প। তাই আমি শুধু নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করি।’

উড়োজাহাজ অবতরণ করলে পুলিশ ইশানকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর বিরুদ্ধে অন্যের ওপর শারীরিকভাবে আক্রমণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার আদালতে ইশান শর্মার আইনজীবী বলেন, তাঁর মক্কেল ধ্যান করার সময় ঘটনাটির শুরু হয়েছিল।

একটি সংবাদমাধ্যমে ওই আইনজীবী দাবি করেন, ‘আমার মক্কেল এমন একটি ধর্মের অনুসারী, যেখানে ধ্যান করা হয়। দুর্ভাগ্যবশত, তাঁর পেছনে বসা যাত্রীটি সেটা পছন্দ করেননি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে

রাজধানীর রমনা থানায় করা সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম ও এস এম গোলাম মোস্তফা আজাদকে পাঁচ দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হক আজ বুধবার এ আদেশ দেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।

পিপি ওমর ফারুক ফারুকী প্রথম আলোকে বলেন, সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত এনায়েত করিম চৌধুরী ও এস এম গোলাম মোস্তফাকে আদালতে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করে পুলিশ। আসামিপক্ষ থেকে জামিনের আবেদন করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত মাসুদ ও মোস্তফাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এর আগে এনায়েত করিম ওরফে মাসুদ করিমকে গত সোমবার দুদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বলা হয়, এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিম মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর প্রতিনিধি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। বাস্তবে তিনি র-এর (ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা) এজেন্ট। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীল করার মিশন নিয়ে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। বর্তমান সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। তাঁর দুটি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। সেটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হলে তাঁর ষড়যন্ত্রের বিষয়ে আরও অনেক নতুন তথ্য জানা যাবে। এনায়েত করিম চৌধুরী ওরফে মাসুদ করিমসহ আর কারা ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত, সেটি জানার জন্য তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা জরুরি।

অপরদিকে এনায়েত করিম চৌধুরীর পক্ষে তাঁর আইনজীবীরা আদালতের কাছে দাবি করেন, তিনি ৬ সেপ্টেম্বর দেশে এসেছেন, তাঁর আমেরিকায় ফিরে যাওয়ার কথা ১৪ সেপ্টেম্বর। তিনি বাংলাদেশে এসে গুলশানে অবস্থান করছিলেন।

এনায়েত করিম চৌধুরীর আইনজীবী ফারহান এমডি আরাফ বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে তাঁর মক্কেল কোনোভাবেই জড়িত নন। তিনি একজন মার্কিন নাগরিক। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে তিনি কোনোভাবে যুক্ত নন।

এর আগে গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরীকে (৫৫) সন্দেহভাজন হিসেবে আটকের পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত শনিবার সকালে রাজধানীর মিন্টোরোড থেকে এনায়েত করিম চৌধুরীকে আটক করা হয়। তাঁর কাছ থেকে জব্দ করা পাসপোর্টের তথ্য অনুযায়ী, তিনি মার্কিন নাগরিক।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানিয়েছে, এনায়েত করিম নিজেকে মাসুদ করিম নামে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের প্রধান বলে পরিচয় দিয়ে থাকেন। এই পরিচয়ে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতাদের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখান। ২০১৮ সালের ভোটের আগেও তিনি একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে দেশের বাইরে বৈঠক করেন।

পুলিশ বলছে, গত শনিবার এনায়েত করিম চৌধুরী প্রাডো গাড়িতে করে মিন্টোরোড এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। গাড়ি থামিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করার বিষয়ে সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে তাঁকে আটক করে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পাশাপাশি সোমবার রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন।

সংশ্লিষ্ট একজন পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এনায়েত করিম বলেছেন, বর্তমান সরকার পরিবর্তন করে নতুন জাতীয় সরকার গঠনে কাজ করতে তিনি বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর দাবি, তিনি বিশেষ একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্ট। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার খুব নাজুক অবস্থায় আছে। সেনাবাহিনীর সঙ্গেও এই সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। এই সুযোগে বর্তমান সরকারকে পরিবর্তন করতে বাংলাদেশে এসেছেন। সরকারি উচ্চ ও নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী নেতা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার
  • যশোরে ৪ আইনজীবীকে বহিষ্কার
  • ক্ষতিপূরণের বিরুদ্ধে আপিল করতে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দেওয়ার বিধান প্রশ্নে রুল
  • আইনজীবী সোমার মৃত্যুতে আইনজীবী সমিতির শোক সভা ও দোয়া
  • এনায়েত করিম ও গোলাম মোস্তফা পাঁচ দিন রিমান্ডে
  • ভাঙ্গা থেকে দুটি ইউনিয়ন বাদ দেওয়া প্রশ্নে রুল
  • বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন রাখতে নির্দেশ কেন নয়: হাইকোর্ট
  • পান্থকুঞ্জ পার্ক ও হাতিরঝিল অংশে নির্মাণকাজে স্থিতাবস্থা আপাতত বহাল, চলবে না কার্যক্রম
  • চারটি আসন বহালের দাবিতে বাগেরহাটে নির্বাচন কার্যালয় ঘেরাও, উচ্চ আদালতে দুটি রিট
  • বরিশালে তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা: ২ জনের মৃত্যুদণ্ড