মুরাদনগরের কড়ইবাড়িতে ‘মব সন্ত্রাস’ তৈরি করে মা, ছেলে ও মেয়েসহ তিনজনকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। শুক্রবার গভীর রাতে নিহত রুবির আক্তারের মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালসহ ৩৮ জনকে এজাহার নামীয় এবং অজ্ঞাত আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। 

শনিবার সকালে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শুক্রবার রাতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া চলছে। তারা হলেন, স্থানীয় কড়ইবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা মো.

সাবির আহমেদ (৪৮) ও মো. নাজিম উদ্দীন বাবুল (৫৬)।
 
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ি গ্রামে একটি মোবাইল ফোন ছিনতাই ও ‘মাদক ব্যবসার’ অভিযোগ তুলে স্থানীয় কিছু লোকজন মব তৈরি করে ওই গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি, তার ছেলে মো. রাসেল মিয়া ও মেয়ে জোনাকি আক্তারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে। নিহতদের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার রাতে ১০ থেকে ১২ জনের অংশগ্রহণে জানাজা শেষে স্থানীয় একটি কবরস্থানে পাশাপাশি তিনজনের মরদেহ দাফন করা হয়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রেপ্তার আতঙ্কে ঘটনাস্থল কড়ইবাড়িসহ আশপাশের এলাকা অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। 

মামলার বাদী রিক্তা আক্তার বলেন, জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে কল দেওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। আমি দুই সন্তান নিয়ে পাশের দুটি বাসায় আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করলেও সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। পরে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাড়ির পাশে একটি টয়লেটের ট্যাংকিতে লুকিয়ে সন্তানদের নিয়ে প্রাণে বেঁচে যাই। ওরা আমাকেও মেরে ফেলতো। 

তিনি বলেন, ‘চেয়ারম্যানের নির্দেশে ওরা আমার মা ভাই-বোনদের হত্যা করেছে। এ হত্যায় জড়িতরা গ্রেপ্তার ও তাদের বিচার না হলে ওরা আমাদের কাউকে বাঁচতে দেবে না। প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাই।’

বাঙ্গরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান সমকালকে বলেন, যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে। ঢালাওভাবে এলাকায় গ্রেপ্তারের জন্য কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। এতে লোকজনের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। 

 

 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কড়ইব ড়

এছাড়াও পড়ুন:

মুরাদনগরে ছেলেমেয়েসহ মাকে হত্যা: ৬৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তা

কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ি গ্রামে মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে ছেলেমেয়েসহ মাকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যার ঘটনায় অবশেষে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে নিহত রোকসানা বেগমের মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাহসহ ৬৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

শনিবার (৫ জুলাই) সকালে বাঙ্গরা বাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহফুজুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানিয়েছেন, তিনজনকে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যৌথ বাহিনীর অভিযানে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওসি মাহফুজ বলেছেন, “সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আদিল শাহরিয়ারের নেতৃত্বে একটি দল শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় মুরাদনগরের আকবপুর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে মো. সবির আহমেদ (৪৮) ও মো. নাজিমউদ্দীন বাবুলকে (৫৬) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়।”

এর আগে শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিহতদের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে সেগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। স্থানীয়রা ভয়ে জানাজা বা কবর খোঁড়ায় অংশ নিতে রাজি হননি। পরে পুলিশের সহায়তায় মরদেহগুলো দাফন করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার ৩৯ ঘণ্টা পর মামলা, আটক ২
  • মুরাদনগরে ছেলেমেয়েসহ মাকে হত্যা: ৬৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তা
  • আটক হয়নি কেউ আতঙ্কে এলাকা পুরুষশূন্য
  • কুমিল্লায় মা ও দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যা: আটক হয়নি কেউ, আতঙ্কে এলাকা পুরুষশূন্য
  • গ্রেপ্তার আতঙ্কে গ্রাম পুরুষশূন্য, ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি, আটক নেই
  • মুঠোফোন চুরিকে কেন্দ্র করে পরিবারটির বিরুদ্ধে এলাকাবাসীকে খেপিয়ে তোলা হয়
  • গণপিটুনিতে নিহত ৩: গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরুষশূন্য কড়ইবাড়ী গ্রাম
  • কুমিল্লায় বাড়িতে হামলা করে ৩ জনকে পিটিয়ে হত্যা
  • কুমিল্লায় মাদক বেচাকেনার অভিযোগে মা ও দুই সন্তানকে গণপিটুনি, কুপিয়ে হত্যা