জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘‘এই প্রজন্ম শেখ হাসিনাকে হঠাতে পেরেছে, কিন্তু বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রেসিডেন্ট চুপ্পুকে সরাতে ভয় পেয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের সাথে তারা প্রতারণা করেছে। জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে।’’

সোমবার (৭ জুলাই) রাতে পাবনার শহীদ চত্বরে জুলাই পদযাত্রার পথসভায় বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন। 

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‌‘‘গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা বলেছিলাম, সংস্কারের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন দেশ গড়বো। দেশের তরুণরা যে গ্রাফিতি এঁকেছিল, সেই গ্রাফিতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের নতুন সংবিধান লেখা হয়ে গেছে। বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খার কথা লেখা হয়েছে। আগামীর সংবিধান আমরা-আপনারা সবাই একত্রে রচনা করবো। সেই সংবিধানের মধ্য দিয়েই বাংলাদেশ পরিচালিত হবে।’’

তিনি বলেন, “আমরা আগামীর সংবিধান রচনা করবো। সেই সংবিধানের মাধ্যমেই আগামীর বাংলাদেশ পরিচালিত হবে। ৩ আগস্ট নতুন সংবিধান, বিচার ও সংস্কারের দাবিতে গণ-মানুষের মুক্তির ইতিহাস জাতির সামনে প্রস্তাব করবো। সেদিন সবাইকে আসার আহ্বান রইলো।”

সভায় বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় নাগরিক কমিটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘‘বাংলাদেশের আকাশে সংকট ঘণীভূত হয়েছে। নির্বাচন তারাই পিছিয়ে দিয়েছে, যারা সংস্কার পিছিয়ে দিয়েছে। আপনারা সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের রব তুলে নির্বাচনবিরোধী গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। আমরা নির্বাচন দ্রুততম সময়ের মধ্যে চাই। তবে সংস্কারসহ নির্বাচন দিতে হবে।’’

পথসভায় সংগঠনটির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘‘আমরা যখন দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা শুরু করেছি, উত্তরাঞ্চলের সকল জেলা পদযাত্রা শেষ করেছি, তখন ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছি। আমরা দেশে কোনো ধরনের চাঁদাবাজি, মামলাবাজি, দখলবাজি চাই না। সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।’’

এনসিপি’র সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা.

তাসনিম জারা সভায় বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘‘যে সংবিধান নিজের নাগরিককে খুন করতে পারে ,পঙ্গু করে দিতে পারে, অন্ধ করে দিতে পারে, ওই সংবিধান আমাদের দরকার নাই। আমাদের নতুন সংবিধান লাগবে, সেই নতুন সংবিধান আমরা আপনাদের সাথে করে নিয়ে আসবো।’’

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকার, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আগ্বায়ক মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ, সংগঠক সোহেল রানা মানিক. বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাবনা জেলা শাখার আহ্বায়ক বরকতুল্লাহ ফাহাদ প্রমুখ।

এর আগে বিকেল ৫টায় পাবনার পথসভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এনসিপি নেতৃবৃন্দ পাবনায় পৌঁছান রাত দশটার পরে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিকেল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত শহীদ চত্বরে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষসহ শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা এনসিপি নেতাদের মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে শুভেচ্ছা জানান। 

শাহীন//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নত ন স ব ধ ন এনস প ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জাতিকে মুক্ত করার অঙ্গীকারে ছাত্ররা গণঅভ্যুত্থানে ঝাপিয়ে পড়েন

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, “শহীদ শব্দটি শুধু ব্যক্তিগত প্রাণ উৎসর্গ নয়, এটি একটি জাতিকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের মতো ২৪-এর জুলাই আন্দোলনে মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। শহীদ ইমাম হাসান তায়িম সেই আত্মত্যাগের প্রতীক।”

তিনি বলেন, “রাজধানী থেকে অনেক দূরে একটি ধানের ক্ষেতের পাশে শুয়ে আছে তায়িম। তার আত্মত্যাগ কিসের জন্য, সেটা যেন মানুষ ভুলে না যায়। কারো জমি দখল বা গ্রাম-গ্রামের দ্বন্দ্বের জন্য নয়, একটি জাতিকে মুক্ত করার অঙ্গীকার নিয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে ঝাপিয়ে পড়েছিল তিনি। শহীদদের আত্মদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুর সাড়ে ১১টায় কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার এতবারপুরে ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ইমাম হাসান তায়িম ভূঁইয়ার কবর জিয়ারতের পর তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী শহীদ তায়িমের মায়ের উদ্দেশে বলেন, “তায়িম পরিবারের কথা না শুনে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। সন্তান ঘর থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। এই সন্তানহারা মা শোক নিয়ে বেঁচে আছেন। গণতন্ত্রের জন্য তায়িমরা এখনো প্রস্তুত। তার আত্মত্যাগ যেন আমরা কখনো না ভুলি—এটাই তার প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা।”

এর আগে, তায়িমের কবর জিয়ারতের পর রিজভী তার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর পক্ষ থেকে চেক প্রদান এবং সমবেদনা জানান।

উপস্থিত ছিলেন—কেন্দ্রীয় বিএনপি বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সদস্য সচিব এএফএম তারেক মুন্সি, চান্দিনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আতিকুল আলম শাওন, সাধারণ সম্পাদক কাজী আরশাদ, পৌর বিএনপি সভাপতি এবিএম সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. আলমগীর খান, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার রেজভিউল আহসান মুন্সি, কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদল নেতা এড. তৌহিদুল ইসলাম বাবু, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদল আহ্বায়ক ডা. সাইফুল্লাহ বাপ্পি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যার বিচার হবে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে
  • জাতিকে মুক্ত করার অঙ্গীকারে ছাত্ররা গণঅভ্যুত্থানে ঝাপিয়ে পড়েন