বিয়ের পরিকল্পনা মানেই অনেক চাপ এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের তালিকা নিয়ে অবিরাম বিতর্ক।

তবে হারমনি এলমি ও শন মুরমুটু এসবের কোনো ঝামেলায় যেতে চাননি। তাঁরা ঠিক করলেন, এমন এক জায়গায় গিয়ে তাঁরা চুপিসারে বিয়ে করবেন, যার সঙ্গে তাঁদের দুজনের বিশেষ স্মৃতি জড়িয়ে আছে।

যুক্তরাজ্যের নরউইচের বাসিন্দা এই দম্পতি গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ২৬১ মাইল (৪২০ কিলোমিটার) পথ পেরিয়ে কার্ডিফে যান। সেখানে তাঁদের দুজন অতিথি ছিলেন। তাঁরা আবার ঘনিষ্ঠ কেউ নন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম রেডিটে একটি পোস্ট করার পর ওই দুজনের সঙ্গে এলমি ও মুরমুটুর পরিচয়।

যুক্তরাজ্যে বিয়ের জন্য ন্যূনতম দুজন সাক্ষী প্রয়োজন। মুরমুটু জানান, দিনটিকে ‘সহজ, স্বাভাবিক এবং চাপমুক্ত’ রাখতে তাঁরা বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের বদলে অপরিচিত রুইরি এবং স্যামকে বেছে নেন।

দুজনের বিয়ের দিনটিতে ছিল তাদের প্রিয় সব জিনিস—পেনার্থ পিয়ারে ফিশ অ্যান্ড চিপস খাওয়া, এস্কেপ রুম খেলা এবং কার্ডিফ বে-তে নাগরদোলায় চড়া।

৩২ বছর বয়সী মুরমুটু বলেন, ‘এটি এমন একটি দিন ছিল, যখন আমরা সত্যিই একে অপরের প্রতি আমাদের ভালোবাসা উদ্‌যাপন করতে পেরেছি এবং কার্ডিফের মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা অনুভব করেছি।’

মুরমুটু ও ৩১ বছর বয়সী এলমি লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটিতে একই কোর্সে লেখাপড়া এবং একই হলে ছিলেন। এই সুবাদে দুজনের পরিচয়।

মুরমুটু বলেন, ‘আমরা কখনো সম্পর্কে যাওয়ার পরিকল্পনা করিনি। বন্ধু হওয়া থেকে শুরু করে ডেটিং, একসঙ্গে থাকা, এমনকি দূর থেকেও সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা—সবকিছুই খুব স্বাভাবিক মনে হয়েছে।’

বিয়ের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য মুরমুটু নিজেই একটি এস্কেপ রুম ডিজাইন করেছিলেন, যা দুজনের একসঙ্গে করা প্রিয় কাজগুলোর মধ্যে একটি।

এই দম্পতি ঠিক করেন যে প্রথাগত বিয়ে তাঁদের জন্য নয়। তাঁরা দূরে কার্ডিফে গিয়ে গাঁটছড়া বাঁধবেন। তাঁরা যখন ওরচেস্টারে থাকতেন, তখন এই শহরটিতে বেশ কয়েকবার বেড়াতে এসেছিলেন।

কোনো কিছু পরিবর্তন করতাম না

এই দম্পতি জানান, তাঁরা বিয়ের বছরখানেক আগে ১ আগস্ট দিনটি ঠিক করেন। এ সময়ের মধ্যে যাতে তাঁরা মা–বাবাকে তাঁদের পরিকল্পনার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে পারেন। মুরমুটু বলেন, তাঁদের মা–বাবা তাঁদের প্রতি ‘অপ্রত্যাশিত সমর্থন’ দিয়েছিলেন।

মুরমুটু বলেন, বিয়ের কয়েক মাস আগে রেডিটে বিয়ের দুজন সাক্ষীর জন্য পোস্ট করার সময় তিনি খুব বেশি সাড়া পাওয়ার আশা করেননি, কিন্তু তাঁরা ব্যাপক সাড়া পান।

রুইরি ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন। তিনি ও তাঁর বন্ধু স্যাম মুরমুটু–এলমির বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

মুরমুটু আরও যোগ করেন, এই দুজনকে তাঁদের খুব মানানসই মনে হয়েছিল এবং তাঁরা ‘খুবই সহযোগিতাপূর্ণ’ ছিলেন। এমনকি তাঁরা বিয়ের সময় কী পরবেন, এমন প্রশ্নও জিজ্ঞাসা করেছিলেন।

বিয়ের দিন মুরমুটু ও এলমি বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য টেম্পল অফ পিসে হেঁটে যান। এরপর কাছাকাছি ‘ওয়াটারলু সানসেট’ পার্কে গানের তালে তালে নাচেন।

মুরমুটু বলেন, সেখানে কনসার্ট থাকায় ওই এলাকায় খুব ভিড় ছিল। অপরিচিত মানুষজন তাঁদের অভিনন্দন জানাতে এবং ছবি তুলতে থামছিলেন।

মুরমুটু বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম, এটি সাধারণ একটা ব্যাপার হবে। তবে এই অনুষ্ঠান তার চেয়েও অনেক বেশি আড়ম্বরপূর্ণ লাগছিল। সত্যিই দিনটি বিশেষ হয়ে উঠেছিল।’

ফিশ অ্যান্ড চিপস দিয়ে মধ্যাহ্নভোজের পরে এই নতুন দম্পতি মিস্টার হুইপ্পি আইসক্রিম, নাগরদোলায় এবং বড় চাকায় চড়ার জন্য কার্ডিফ বে-তে যান। এরপর তাঁরা একটি এস্কেপ রুমে যান, যেখানে কর্মীরা নববধূকে বিশাল এক তোড়া ফুল দিয়ে শুভেচ্ছো জানান।

মুরমুটু আরও বলেন, তাঁদের পরিবারের সদস্যরা ভিডিওকলের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তবে অপরিচিত মানুষের কাছ থেকে পাওয়া ভালোবাসা দিনটিকে আরও বিশেষ করে তুলেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন অপর চ ত র জন য দ জন র

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে অবৈধ গ্যাস সংযোগের সময় আটক ৩

রূপগঞ্জ উপজেলায় অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নেওয়ার সময় তিনজনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে তারাবো পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বরাবো কবরস্থান রোড এলাকায় রূপগঞ্জ থানা পুলিশের টহল টিম অবৈধ গ্যাস লাইন সংযোগ নিতে থাকা অবস্থায় তাদের আটক করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অবৈধ সংযোগে ব্যবহৃত বিভিন্ন সরঞ্জামও জব্দ করেছে।

পুলিশ জানায়, তিনজন গ্রেপ্তার হলেও ২–৩ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয়। 

পরে তিতাস গ্যাস টিএন্ডডি পিএলসির সংশ্লিষ্ট জোনের ব্যবস্থাপকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা থানায় উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়তা করেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে গ্যাস আইন ২০১০-এর ১২(১)/১৯ ধারায় রূপগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ বলছে, অবৈধ গ্যাস সংযোগ রোধে নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ