দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
Published: 5th, December 2025 GMT
অসাধারণ বোলিংই বদলে দিল ম্যাচের গল্প। মাত্র ৮০ রানে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের ইনিংস গুটিয়ে দিয়ে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তিন উইকেটের দারুণ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। এক ওভার হাতে রেখেই লক্ষ্য স্পর্শ করে সিরিজে সমতা ফেরাল স্বাগতিক কিশোরীরা।
টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া পাকিস্তানের শুরুটা ছিল দুঃস্বপ্নের মতো। দলীয় স্কোর ৭ রানে পৌঁছাতেই ফিরতে হয় ওপেনার অতশী মজুমদারকে। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ৩১ রানের প্রতিরোধ গড়লেও স্বস্তি টেকেনি বেশিক্ষণ। জারিন তাসনিম লাবণ্যের সঠিক লাইন-লেংথে ভেঙে যায় জুটি। পরে হাবিবা ইসলাম পিংকির গতিময় ও ধারালো বোলিংয়ে আবারও চাপে পড়ে সফরকারীরা।
আরো পড়ুন:
ভালোবাসা, গর্বে মোড়ানো মুশফিকের ‘একশ’ টেস্ট
বিসিবির নারী বিভাগের প্রধান হলেন রুবাবা দৌলা
পাকিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ২৮ রান আসে কোমাল খানের ব্যাট থেকে। জুফিশান আয়াজ ও রাভাইল ফারহান দলের সংগ্রহে যোগ করেন যথাক্রমে ১৭ ও ১৫ রান। কিন্তু একাই চার উইকেট তুলে নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং ধস নামানোর মূল নায়িকায় পরিণত হন হাবিবা পিংকি।
ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমেও কিন্তু খুব একটা মসৃণ পথ পায়নি বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪ রান ওঠার আগেই প্রথম ধাক্কা। এরপর ২৭ রানের জুটি স্বস্তি ফেরালেও দ্রুত তিন উইকেট হারিয়ে ৩৬ রানে ৪ উইকেটের পরিস্থিতিতে চাপেই ছিল স্বাগতিকরা।
তবে এক প্রান্ত বাঁচিয়ে রাখলেন সুবর্ণা। পরিস্থিতির দাবি বুঝে শান্ত মাথায় ৩৮ বলে ৩২ রানের মূল্যবান ইনিংস খেললেন তিনি। আর ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন শেষ দিকে সাদিয়া আক্তার। টানা দুই বলে দুটো চার মেরে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন এই তরুণী।
এই জয়ে দুই দলের সিরিজ এখন ১-১ সমতায়। আগামী ম্যাচে তাই দেখা যাবে রোমাঞ্চকর সিরিজ নির্ধারণী লড়াই।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নবান্নের আয়োজনে বাংলার ঐতিহ্যের পরিচয়
অগ্রহায়ণ মাস বাঙালির গ্রামীণ জীবনে নিয়ে আসে উৎসব ও আনন্দের বিশেষ আবেশ। নতুন ধান ঘরে তোলার পর সেই চালের প্রথম ভাত, পিঠাপুলির ঘ্রাণ আর মিলেমিশে খাওয়ার সংস্কৃতি—সব মিলিয়ে নবান্ন উৎসব বাঙালির কৃষিভিত্তিক সমাজ ও সংস্কৃতির এক অনিবার্য অনুষঙ্গ। তবে আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা ও যান্ত্রিকতায় এ উৎসব অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছে। তবু শিকড়ের টান ধরে রাখতে ও তরুণ প্রজন্মকে বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর ধরে আয়োজন করা হচ্ছে নবান্ন উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পদাতিক’ এ আয়োজন করে আসছে।
এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী নবান্ন উৎসব ‘নব ছন্দে নবান্ন’। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসজুড়ে রঙিন পোশাকে সজ্জিত শিক্ষার্থীরা, গানবাজনার সুর, পিঠার সৌরভ আর গ্রামীণ মোটিফে সাজানো স্টল মিলিয়ে তৈরি হয় চিরায়ত গ্রামীণ উৎসবের উষ্ণ আবহ।
সন্ধ্যায় পদাতিক সদস্যদের পরিবেশনায় পঞ্চকবির গান দিয়ে উৎসবের উদ্বোধনী হয়। এরপর একে একে পরিবেশিত হতে থাকে কোরাস গান, একক সংগীত, নাচ, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। গভীর রাত পর্যন্ত চলে আয়োজনের বিভিন্ন পরিবেশনা। আজ শুক্রবারও চলবে এ উৎসব।
সংগঠনটির উদ্যোগে মুক্তমঞ্চের সামনে সাজানো হয় পিঠা, ঐতিহ্যবাহী খাবার, হাতে তৈরি সামগ্রী ও গ্রামীণ জীবনধারাকে উপস্থাপন করা ১৪টি স্টল। চিতই, ভাপা, পাটিসাপটা, দুধ–চিড়াসহ নানা ধরনের শীতের পিঠায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ আকর্ষণ ছিল শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি চুড়ি ও বাহারি রঙের গয়না।
উৎসবের প্রথম দিনে সন্ধ্যায় পদাতিক সদস্যদের পঞ্চকবির গানের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানমালার। এরপর একে একে পরিবেশিত হয় কোরাস সংগীত, একক সংগীত, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। শিক্ষার্থীদের শৈশবের স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিতে মেলায় যুক্ত করা হয় নাগরদোলা ও শিশুদের ট্রেন। এসব আয়োজন শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক দর্শনার্থীদের মধ্যেও বাড়তি উৎসাহ তৈরি করে।
মেলায় আসা শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর ক্লাস, পরীক্ষার চাপের মধ্যে এমন গ্রামীণ উৎসব আমাদের মানসিক স্বস্তি ও ভিন্ন রকম আনন্দের উপলক্ষ। তাই সারা বছর আমরা এ উৎসবের জন্য অপেক্ষায় থাকি।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চকবির গানের মধ্যদিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়