টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহার করে অনলাইনে ‘বিনিয়োগের’ প্রলোভন দেখিয়ে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়া একটি প্রতারক চক্রের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম নাদিম (৩২)। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর নিজ বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ শুক্রবার সিআইডির গণমাধ্যম শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতারণার শিকার ব্যক্তি একটি বেসরকারি ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ প্রিন্সিপাল কর্মকর্তা। তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে অজ্ঞাত একটি নম্বর থেকে বার্তা আসে। বার্তা পাঠানো ব্যক্তি নিজেকে ‘নাজনীন’ নামে পরিচয় দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্ম আপওয়ার্কের প্রতিনিধি বলে দাবি করেন।

বাসায় বসে খণ্ডকালীন কাজের মাধ্যমে আয়ের প্রলোভন দেখানো হলে ওই ব্যাংক কর্মকর্তা সরল বিশ্বাসে রাজি হন। আস্থা অর্জনের জন্য তাঁকে দিয়ে প্রথমে ইউটিউব সাবস্ক্রিপশনসহ কয়েকটি ছোট কাজ করানো হয়। এরপর তাঁর মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে প্রথমে ১৫০ টাকা ও পরে ২ হাজার ১০০ টাকা পাঠানো হয়।

এরপর তাঁকে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করা হয়। সিআইডি জানায়, ওই গ্রুপে চক্রটির অন্য সদস্যরা আগে থেকেই যুক্ত ছিল। তারা নিয়মিত কাজ করে বড় অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছে বলে অভিনয় করত। এতে ভুক্তভোগীর বিশ্বাস আরও গভীর হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরবর্তী ধাপে বড় কাজের কথা বলে প্রতারকেরা ভুক্তভোগীকে একটি ‘ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্ট’ খুলতে এবং দুই হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে বলে। এরপর জানানো হয়, আরও তিন হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে তাঁর ব্যালেন্স সাত হাজার টাকা হবে এবং তিনি সেই টাকা তুলতে পারবেন। ভুক্তভোগী ওই টাকা পাঠানোর পর তাঁকে ‘ভিআইপি টাস্ক’ নামে নতুন একটি গ্রুপে যুক্ত করা হয়।

ওই গ্রুপে দেখানো হয়, সবার ক্রিপ্টো অ্যাকাউন্টে সাত হাজার টাকা করে জমা হয়েছে। কিন্তু ভুক্তভোগী টাকা তুলতে চাইলে তাঁকে জানানো হয়, ক্যাশ আউটের জন্য আরও ১৫ হাজার ৮০০ টাকা দিতে হবে। তিনি সরল বিশ্বাসে সেই টাকাও পাঠান। কিন্তু এরপরও টাকা তুলতে না পেরে বিষয়টি জানতে চাইলে তাঁর ওপর নতুন টাস্ক ও নতুন শর্ত চাপিয়ে দেওয়া হয়।

এভাবে একের পর এক টাস্ক, বড় লাভের লোভ আর ভুয়া হিসাব দেখিয়ে প্রতারক চক্রটি বিভিন্ন ব্যাংক ও মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে মোট ১ কোটি ১০ লাখ ৫৮ হাজার ৩০৫ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গত ২১ মে রাজধানীর লালবাগ থানায় মামলা করেন।

মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সিআইডির একটি দল নাদিমকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জব্দ করা হয়েছে। নাদিমের বাড়ি কুমিল্লার মেঘনা থানার দক্ষিণকান্দি গ্রামে।

সিআইডির কর্মকর্তারা অনলাইনে সহজে বড় অঙ্কের অর্থ উপার্জনের প্রলোভনে বিশ্বাস না করার পরামর্শ দিয়েছেন। যেকোনো লেনদেনের আগে উৎস ও পরিচয় যাচাই করার কথাও বলেছেন তাঁরা। এ ধরনের প্রতারণার শিকার হলে দ্রুত নিকটস্থ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে জানাতে বলা হয়েছে। এ জন্য ০১৩২০০১০১৪৬, ০১৩২০০১০১৪৭ এবং ০১৩২০০১০১৪৮ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করেছে সিআইডি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত স আইড

এছাড়াও পড়ুন:

অবশেষে সৎকার হলো হিমাগারে থাকা ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের হিমাগারে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ভারতীয় নাগরিক রাজনের (৬৩) মরদেহের সৎকার করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে পৌরসভার মনোহরবাজার শ্মশানঘাটে মরদেহটি সৎকার করা হয়। প্রায় ৭ মাস ধরে এই মরদেহ সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা ছিল।

আরো পড়ুন:

নড়াইলে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সাংবাদিকের ভাইয়ের মৃত্যু

নবাবগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে বৃদ্ধের মৃত্যু, ভস্মীভূত ১১ ঘর 

রাজন ভারতের দিল্লি প্রদেশের দিলিপের ছেলে। তবে তার জেলার নাম জানা যায়নি।

শরীয়তপুর কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজন নামে এই ব্যক্তিকে ২০২২ সালের আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা এলাকা থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর ওই মামলায় তাকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি আর পি বন্দী হিসেবে কারাগারে ছিলেন। 

গত ১৮ মে রাজন অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই রাজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা ছিলো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মরদেহটি সৎকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

শরীয়তপুরের জেল সুপার বজলুর রশিদ বলেন, “রাজন নামের ওই ব্যক্তি আর পি বন্দী ছিলেন। হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এরপর থেকে তার মরদেহ হিমাগারে রাখা ছিল। পরে দুই দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) উচ্চ পর্যায়ে সভার মাধ্যমে মরদেহটি দাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সৎকার শেষে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়ে দেব।” 

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেয়েটি আসে হৃদয়কে ফাঁদে ফেলতে, এরপর...
  • দুর্দান্ত বোলিংয়ে পাকিস্তানকে হারিয়ে সিরিজে ফিরল বাংলাদেশ
  • পরীক্ষা নিতে বাধা, শিক্ষকের মাথা ফাটালেন যুবদল নেতা 
  • মোসাদ ও ইরানের মধ্যে অন্তরালে যে যুদ্ধ চলছে
  • পাবনায় আবার স্পিডবোটে এসে নদীসংলগ্ন স্বর্ণের দোকান, ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতি
  • রুটের ব্যাটে লড়ল ইংল্যান্ড
  • অভিনেতা তিনু করিম লাইফ সাপোর্টে
  • সিয়ামের সঙ্গী ইধিকা পাল!
  • অবশেষে সৎকার হলো হিমাগারে থাকা ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ