বান্দরবানে এনসিপির নতুন জেলা কমিটি প্রত্যাখ্যান একাংশের
Published: 5th, December 2025 GMT
বান্দরবানে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদ্য ঘোষিত জেলা কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়েছেন দলের নেতাদের একাংশ। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, ‘ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে’ কেন্দ্র থেকে একটি পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। কমিটি বাতিল বা সংশোধন না হলে গণপদত্যাগের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা।
আজ শুক্রবার বেলা তিনটায় বান্দরবান শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলন করেন নতুন আহ্বায়ক কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক তপন মারমা, সদ্য বিদায়ী জেলা আহ্বায়ক ও নতুন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম, গোলাম মোস্তফা ও খালেদ মোশারফ হোসেন। তাঁদের সঙ্গে আরও ছয়–সাতজন নেতা–কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে শহীদুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনের সময় যাঁরা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কমিটি গঠনে তাঁদের মূল্যায়ন করা হয়নি। বরং ‘এক ব্যক্তি আর্থিক অস্বচ্ছতার মাধ্যমে’ কমিটিতে প্রভাব বিস্তার করেছেন বলে তাঁদের কাছে তথ্য আছে—তবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রমাণ উপস্থাপন করেননি।
শহীদুল আরও অভিযোগ করেন, নতুন কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে এমন একজনকে রাখা হয়েছে, যাঁর বিরুদ্ধে পরিবেশ ধ্বংসসহ ফৌজদারি অপরাধের মামলা রয়েছে। এ কারণেই তাঁরা পুরো কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় কমিটি ৯১ সদস্যের নতুন বান্দরবান জেলা আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। কমিটিতে বোমাং রাজপরিবারের মং সা প্রু চৌধুরীকে আহ্বায়ক, এরফানুল হককে সদস্যসচিব ও তোকির আজাদকে সাংগঠনিক সম্পাদক করা হয়েছে।
নতুন কমিটির আহ্বায়ক মং সা প্রু চৌধুরী বলেছেন, জেলা কমিটি ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতারা। স্বাভাবিকভাবে সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে গেছে। তাই জেলা কমিটির কোনো বক্তব্য নেই, কেন্দ্র থেকে নিশ্চয়ই প্রয়োজনীয় বক্তব্য দেওয়া হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন কর ছ ন কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইনের যেকোনো তথ্য যাচাই করতে হবে
ভুয়া বা ভুল তথ্য এবং অপতথ্যের এই সময়ে সবচেয়ে জরুরি হলো—প্রশ্ন করার অভ্যাস ও তথ্য যাচাইয়ের দক্ষতা। পাশাপাশি অনলাইনে পাওয়া যেকোনো কনটেন্ট (আধেয়) শুরুতেই সন্দেহের চোখে দেখতে হবে; প্রথম দেখাতেই পুরোপুরি বিশ্বাস করা যাবে না।
অনলাইনে দ্রুত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের কৌশল শেখাতে প্রথম আলো বন্ধুসভার বিশেষ কর্মশালায় এ কথা বলেন বক্তারা। আজ শুক্রবার ‘কোয়েশ্চেন এভরিথিং ইউ সি অনলাইন: ট্রেইনিং অন কুইক ফ্যাক্ট-চেকিং অ্যান্ড ভেরিফিকেশন (অনলাইনে যা দেখবেন, প্রশ্ন করবেন: তথ্য যাচাই পদ্ধতিবিষয়ক প্রশিক্ষণ)’ শিরোনামে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। দেশি-ফুডসের পৃষ্ঠপোষকতায় ও ডিসমিসল্যাবের সহযোগিতায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হয়ে কর্মশালা চলে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন মল্লিকের সঞ্চালনায় প্রথম সেশনে ‘ক্রিটিক্যাল থিংকিং’ বিষয়ে আলোচনা করেন ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কোনো ভুল তথ্যকে যদি সঙ্গে সঙ্গে সঠিক না করেন তাহলে এই তথ্যকে একসময় মানুষ সত্যি মনে করবে। এখন সেই ব্যবসা তত বড়, যে ব্যবসায় তথ্য বেশি। যাদের কাছে তথ্য বেশি তারা এগিয়ে যায়। যাচাই করার সক্ষমতা বর্তমানে অনেক বেশি জরুরি হয়ে গেছে। যেকোনো তথ্যে দেখবেন সূত্র উল্লেখ আছে কি না। সূত্র না থাকলে তথ্য সঠিক মনে করা যাবে না।’
স্বাগত বক্তব্যে প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘প্রশ্ন করতে হবে। তথ্য সত্য কি না, যাচাই করতে হবে। জগৎটা এখন অনেক বেশি তথ্যের।’
তথ্যের সত্যতা যাচাই, ছবি যাচাই এবং অনলাইন আর্কাইভিং বিষয়ে আলোচনা করেন ডিসমিসল্যাবের গবেষণা কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম। কীভাবে মুহূর্তেই নির্দিষ্ট বিষয়ের তথ্য, ছবি, ভিডিও, তথ্য প্রকাশের তারিখ ও ডকুমেন্ট ফাইল খুঁজে বের করতে হবে; মোবাইলে রিভার্স ইমেজ সার্চ, ছবির মেটা ডেটা যাচাই কীভাবে করা যাবে এবং এ–সংক্রান্ত বিভিন্ন এআই টুলের ব্যবহার বিষয়ে হাতে–কলমে সেশন পরিচালনা করেন তিনি।
আর এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি ছবি ও ভিডিও কীভাবে যাচাই করা যাবে; কোনটা এআই ভিডিও, কোনটা বাস্তব—কীভাবে শনাক্ত করা যাবে এবং এআই চিহিৃতকরণ কয়েকটি টুলের ব্যবহার দেখান ডিসমিসল্যাবের আরেকজন গবেষণা কর্মকর্তা আহমেদ ইয়াসীর আবরার।
অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের উপদেষ্টা উত্তম রায় বলেন, ‘অনলাইনে কোনো কিছু দেখলে সঙ্গে সঙ্গেই রিঅ্যাক্ট করা যাবে না। যাচাই করতে হবে, সময় নিয়ে চিন্তা করতে হবে।’
ডিসমিসল্যাব ও দেশি-ফুডসকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতীয় পর্ষদের সভাপতি জাফর সাদিক বলেন, ‘আমাদের একটি বড় সমস্যা হলো জেনে না জেনে অপতথ্যের প্রচার করা। অনেকের মধ্যেই ডিজিটাল শিক্ষা খুবই কম। এর কারণ হলো প্রযুক্তি অনেক বেশি এগিয়ে গেছে। কোনটা এআই, কোনটা সত্য—তা যাচাই করা অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়। তাই অনলাইনে যা কিছুই দেখবেন, সবার আগে নিজেকে প্রশ্ন করবেন।’
দেশি-ফুডসের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহফুজের রহমান ও প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট কর্মকর্তা রুপা খাতুন। বন্ধুসভার সঙ্গে থাকতে পেরে প্রথম আলো ও বন্ধুসভাকে ধন্যবাদ জানান মাহফুজের রহমান। অংশগ্রহণকারীদের ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন তিনি।
দেশি-ফুডসের পৃষ্ঠপোষকতায় ‘পারসোনাল ব্র্যান্ডিং’, ‘আইইএলটিএস ও বিদেশে উচ্চশিক্ষা’, ‘গ্রাফিক ডিজাইন’সহ এ নিয়ে চারটি প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হলো। পুরো আয়োজনের সমন্বয় করেছেন বন্ধুসভা জাতীয় পর্ষদের প্রশিক্ষণ সম্পাদক সামছুদ্দোহা সাফায়েত। কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের সনদ দেওয়া হয়।