সংস্কার, বিচার, নতুন সংবিধানের মাধ্যমে দেশ পুনর্গঠন করবো: নাহিদ ইসলাম
Published: 13th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আমরা যে সরকার পেয়েছি, সেই সরকারকে সবাই মিলে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান করেছিলাম। আমরা বলেছিলাম- আসুন সবাই মিলে এই সরকারকে সহযোগিতা করি এবং দেশটাকে নতুন করে গড়ে তুলি। কিন্তু আমাদের সেই আহ্বানে সবাই সাড়া দেয়নি। কেউ কেউ শুধু ক্ষমতা চাইছে, কেউ কেউ শুধু দ্রুত নির্বাচন চাইছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি।
রোববার জুলাই পদযাত্রার ১৩তম দিনে পিরোজপুর শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা বলেছি সংস্কার লাগবে, আওয়ামী লীগের বিচার লাগবে এবং একটি নতুন সংবিধান লাগবে। সংস্কার, বিচার এবং নতুন সংবিধানের মাধ্যমে আমরা দেশটাকে পুনর্গঠন করবো। দেশের অর্থনীতি, দেশের সংস্কৃতি সবকিছু আমরা নতুন করে সাজাবো। আর এই জন্যই আমরা লড়াই করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, কেউ যদি মনে করে তারা ভয় দেখিয়ে, তারা পেশিশক্তি ব্যবহার করে, প্রশাসনকে ব্যবহার করে চাঁদাবাজ ও লুটতরাজের রাষ্ট্র তৈরি করবে, তা আমরা হতে দেব না।
এর আগে বেলা ১১টায় শহরের সিও অফিস মোড় থেকে পদযাত্রা হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে পদযাত্রার কর্মসূচি বাতিল করা হয়।
সমাবেশ এনসিপি প্রধান বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের রক্তের মধ্য দিয়ে এই সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটেছিল। যে সরকার ১৬ বছর ধরে জোর করে ক্ষমতায় টিকে ছিল, মানুষের ওপর এমন কোনও নির্যাতন নেই যে এই সরকার করেনি। গুম, খুন, নির্যাতন, দুর্নীতি, লুটপাট, ভোটাধিকার হরণ সবকিছু গত সরকার করেছে। তিন তিনবার ভোট দিতে পারিনি। শুধু সরকার বা রাজনৈতিক দল নয়, মানুষের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে পুলিশ, আমলাতন্ত্র এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের সব বাহিনী। ফলে মানুষ ক্রোধে রাজপথে নেমে এসেছিল, হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে আমরা বলেছিলাম, দেশের সংস্কার লাগবে, রাষ্ট্রের সংস্কার লাগবে, আমরা পুরোনো ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই না। আমরা দুর্নীতি ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই না, আমরা মাফিয়া বন্দোবস্ত ব্যবস্থায় ফিরে যেতে চাই না। আমাদের আন্দোলনের সময় স্লোগান ছিল বৈষম্যবিরোধী সমাজ গড়তে হবে। সমাজে নানা ধরনের বৈষম্য, ধর্মের বৈষম্য, শ্রমিকের সঙ্গে বৈষম্য, গরিবের সঙ্গে বৈষম্য দূর করতে হবে।
তিনি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হয়তো আমাদের সঙ্গে অনেক দল-মত ছিল, কিন্তু দেশের সংস্কারের পক্ষে আজ যদি কেউ না থাকে, আমরা যেহেতু রাজপথে নেমেছিলাম, আমাদের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যারা রাজপথে নেমেছিলেন, আমাদের আহ্বানে যারা রাজপথে নেমে শহীদ হয়েছিলেন, আমরা তাদের প্রতি দায়বদ্ধ। আমরা রাজপথ থেকে সরে যেতে পারি না। ঝড়-বৃষ্টি যা কিছুই হোক না কেন আমাদের রাজপথে থেকে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।
পুলিশ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে নাহিদ ইসলাম বলেন, পুলিশ-প্রশাসনকে জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। যদি তারা দলবাজ প্রশাসনের মত আচরণ করে, তাহলে মনে রাখবেন ফ্যাসিবাদের সময় যারা দলবাজ হয়েছিল, আপনাদের পরিণতিও তাদের মতো হবে।
সমাবেশে জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সচিব ডা.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প ন হ দ ইসল ম জ ল ই গণঅভ য ত থ ন গণঅভ য ত থ ন র ন হ দ ইসল ম আহ ব ন আম দ র ই সরক সরক র র জপথ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই হত্যাকাণ্ডের খুনিদের ফিরিয়ে আনা সরকারের প্রধান লক্ষ্য: প্রে
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, “গত বছর জুলাই-আগস্ট মাসে হত্যাযজ্ঞের খুনিদের ফিরিয়ে আনা সরকারের মূল লক্ষ্য এবং অঙ্গীকার।”
তিনি বলেন, “আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো ২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থান চলাকালে জুলাই-আগস্ট মাসে হত্যাকাণ্ডের খুনিদের ফিরিয়ে আনা। এটি আমাদের শপথ এবং অঙ্গীকার।”
আরো পড়ুন:
মুন্সীগঞ্জ-৩: বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ
এবারো বিএনপির মনোনয়ন পাননি রুমিন ফারহানা
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) মাগুরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আন্তঃকলেজ ফুটবল টুর্নামেন্ট উদ্বোধনকালে তিনি এসব বলেন।
তিনি উল্লেখ করেন, “গণঅভ্যুত্থানের সময় ফ্যাসিবাদী সরকার বহু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষকে হত্যা করেছিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রমাণ করেছে যে ফ্যাসিবাদী সরকার গণহত্যা চালিয়েছে।”
শফিকুল আলম বলেন, “আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। আমরা চাই তারা দেশে প্রত্যর্পিত হোক।”
তিনি আরো বলেন, “তাদের আপিল করার অধিকার রয়েছে।”
প্রেস সচিব বলেন, “আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যাতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে দ্রুত তাদের রায় কার্যকর হয়।”
তিনি আরো বলেন, “যাদের হাতে রক্তের দাগ আছে, তাদের সবাইকে আমরা বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনব। এটি শহীদদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব, আমাদের অঙ্গীকার। আমরা ব্যর্থ হলে পরবর্তী প্রজন্ম এই দায়িত্ব নেবে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।”
তিনি উল্লেখ করেন, “যারা তাদের সন্তানদের হত্যা করেছে বা পঙ্গু করেছে, তাদের ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। এ ব্যাপারে দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধ।”
শফিকুল আলম বলেন, “নির্বাচনের আগে আমাদের হাতে প্রায় ৭০ দিনের মতো সময় আছে। আমরা জানি না এই সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে পারব কি না, তবে আমরা চেষ্টা করব।”
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জাতীয় নেতা ও জনতার নেতা হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া শুধু বিএনপির নেতা নন। তিনি আমাদের জাতীয় নেতা। তিনি জনতার নেতা।”
শফিকুল বলেন, “আমরা তার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করি। বাংলাদেশের জন্য তার উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আশা করি তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।”
সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনের জন্য কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আগামী বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
শফিকুল আলম জানান, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যেই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা সম্পন্ন করেছে।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সাধারণ) মো. আব্দুল কাদের, মাগুরা পৌর প্রশাসক ইমতিয়াজ হোসেন, জেলা ক্রীড়া কর্মকর্তা বিএম সাজিন ইশরাত এবং ক্রীড়া সংগঠক বারিক ননজাম বার্কি।খবর বাসসের।
ঢাকা/এসবি