চ্যাটজিপিটিকে যে কাজে ব্যবহার করলে তথ্যের গোপনীয়তা না–ও থাকতে পারে
Published: 28th, July 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ওপর মানুষের বাড়তে থাকা নির্ভরতার বিষয়ে সতর্ক করেছেন চ্যাটজিপিটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআইয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্যাম অল্টম্যান। তাঁর মতে, চ্যাটজিপিটিকে অনেকেই মানসিক সহায়তার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করলেও, এতে ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার আইনগত কোনো নিশ্চয়তা নেই। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পডকাস্ট ‘দিস পাস্ট উইকেন্ড’–এ এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন তিনি।
স্যাম অল্টম্যান বলেন, ‘চ্যাটজিপিটিতে মানুষ তাঁদের জীবনের অত্যন্ত ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা বলছেন। তরুণেরা চ্যাটজিপিটিকে থেরাপিস্ট, লাইফ কোচের মতো পরামর্শদাতা বা সম্পর্কের জটিলতা নিরসনের সহযোগী হিসেবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু বাস্তবে এই আলাপচারিতা কোনো আইনি গোপনীয়তার আওতায় পড়ে না। আপনি যদি কোনো চিকিৎসক, আইনজীবী বা থেরাপিস্টের সঙ্গে এসব বিষয় আলোচনা করেন, তাহলে তা আইনগতভাবে গোপন রাখার বাধ্যবাধকতা থাকে। কিন্তু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে এমন আলাপের ক্ষেত্রে এখনো সে রকম কোনো কাঠামো তৈরি হয়নি। আমি মনে করি, এটি একটি গুরুতর সমস্যা। একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথোপকথনের মতোই এআইয়ের সঙ্গে আলাপের ক্ষেত্রে গোপনীয়তার অধিকার থাকা উচিত। এক বছর আগেও কেউ এসব নিয়ে ভাবেননি।’
আরও পড়ুনএআইয়ের দেওয়া সব তথ্য বিশ্বাস করা ঝুঁকিপূর্ণ, সতর্ক করলেন স্বয়ং স্যাম অল্টম্যান২৮ জুন ২০২৫চ্যাটজিপিটি ব্যবহারকারীদের চ্যাট সংরক্ষণ ও তথ্য উন্মুক্ত করার বিষয়ে ইতিমধ্যে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ওপেনএআই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে চলমান এক মামলায় আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে তাদের বিশ্বব্যাপী ব্যবহারকারীদের চ্যাট সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। তবে এই আদেশের আওতায় নেই ওপেনএআইয়ের এন্টারপ্রাইজ গ্রাহকেরা। প্রতিষ্ঠানটি এই আদেশকে ‘অতিরিক্ত হস্তক্ষেপ’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে আপিল করেছে। ওপেনএআই জানিয়েছে, আদালতের এই নির্দেশ কার্যকর হলে ভবিষ্যতে আরও ব্যাপকভাবে তথ্য উন্মুক্ত করার দাবি উঠতে পারে, যা ব্যবহারকারীর গোপনীয়তা রক্ষার ক্ষেত্রে গুরুতর হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
সাক্ষাৎকারে অল্টম্যান পডকাস্ট উপস্থাপক থিও ভনের চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের অভিজ্ঞতা জানতে চান। ভন জানান, গোপনীয়তা নিয়ে সন্দেহ থাকায় তিনি এটি খুব কম ব্যবহার করেন। জবাবে অল্টম্যান বলেন, আইনি ও গোপনীয়তার বিষয়গুলো পরিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার না করাটা পুরোপুরি যৌক্তিক।
সূত্র: টেকক্রাঞ্চ
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি