পটুয়াখালীর কুয়াকাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এফবি সাগরকন্যা নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। সমুদ্রে চার দিন ভেসে থাকার পর ৯ জেলেকে উদ্ধার করেছে অপর দুটি ট্রলার। এখনো নিখোঁজ আছেন আবদুর রশিদ, নজরুল ইসলাম, রফিক, ইদ্রিস, সাগর ও কালাম নামের ছয় জেলে। 

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ভোরে উদ্ধার করা ৯ জেলেকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

গত শুক্রবার সকাল ১০টায় বঙ্গোপসাগরে ওই ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলারের জেলেদের বাড়ি মহিপুর ও লক্ষ্মীপুর থানার বিভিন্ন গ্রামে।

আরো পড়ুন:

হাতিয়ায় বাঁধ ভেঙে উপকূলের জনজীবন বিপর্যস্ত

সেন্টমার্টিনে তিনদিন ধরে নৌযান চলাচল বন্ধ, খাদ্য সংকট

উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে মহিপুর থেকে আবদুর রশিদ মাঝি ১৫ জেলেসহ ট্রলার নিয়ে গভীর সাগরে যান। শুক্রবার সকালে শেষ বয়ার ৭৫ কিলোমিটার গভীর গিয়ে জাল ফেলার পর হঠাৎ ঝড় ও উত্তাল ঢেউয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ইদ্রিস ও কালাম নামের দুই জেলে হারিয়ে যান। বাকি ১৩ জন বাঁশ ও ফ্লুটের সাহায্যে ভাসতে শুরু করলে পর্যায়ক্রমে আবদুর রশিদ, সাগর, নজরুল ও রফিক নামের আরো ৪ জেলে হারিয়ে যান। তারা গতকাল রাতে ভাসতে ভাসতে শেষ বয়া এলাকায় পৌঁছালে দুটি ট্রলার পৃথক স্থান থেকে নয়জনকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার ভোরে তাদেরকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়।

উদ্ধার হওয়া জেলে হাসান বলেছেন, “আমরা যখন জাল ফেলেছি, তখন সাগর একেবারে ঠান্ডা ছিল। যখন জাল টেনে ট্রলারে তুলছিলাম, হঠাৎ একটি ঝড় এবং উত্তাল ঢেউ এসে আমাদের ট্রলারকে তিন খণ্ড করে ফেলে। ট্রলার ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা দুজনকে হারিয়ে ফেলি। পরে ভাসতে ভাসতে আরো চারজন কোথায় গিয়ে পৌঁছায়, তা বলতে পারি না। আমাদের সঙ্গে যে নয়জন ছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। গতকাল রাতে একটি আলো দেখে ভাসতে ভাসতে শেষ বয়া এলাকার কাছে পৌঁছালে একটি ট্রলার আমাদের উদ্ধার করে।”

আরেক জেলে হারুন বলেন, “দুই দিন ভাসার পর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে কীভাবে বেঁচে ফিরেছি, তা জানি না। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। হাসপাতালে এসে আমি জ্ঞান ফিরে পাই।” 

মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেছেন, “ট্রলারডুবির ঘটনায় ২৬ জুলাই ট্রলারের মালিক কিশোর হাওলাদার জেলে নিখোঁজের তথ্য উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। আমরা নিখোঁজ ছয় জেলের সন্ধান পেতে চেষ্টা চালাচ্ছি।”

ঢাকা/ইমরান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বিসিএলে বিদেশি দল, এনসিএলে বিদেশি ক্রিকেটার

দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন আজকের নয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ যে মানের হয়, যেভাবে আয়োজন হয় তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে হরহামেশা। অতীতে সমালোচনার পর কিছুটা মান বেড়েছে। কিন্তু তারপরও ‘আপ টু মার্ক’ হয়নি।

বিশেষ করে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিব‌্যি পারফর্ম করা ক্রিকেটাররা যখন জাতীয় দলে এসে ধুকতে থাকেন তখন তারতম‌্য প্রকটভাবে ফুটে উঠে। এজন‌্য ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটারকে নিয়ে আসতে চায় বিসিবি। এছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগে যুক্ত করতে চায় বিদেশি দল।

বিসিবির পরিচালক ও টুর্নামেন্ট কমিটির চেয়ারম‌্যান আকরাম খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আরো পড়ুন:

তিন সপ্তাহের জন্য আসছেন উড, মনোবিদ স্কট

সাবেক জাতীয় ক্রিকেটার বেলায়েত হোসেন মারা গেছেন

বিসিএল শুরু থেকে ছিল ফ্রাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রতিযোগিতা। ওয়ালটন সেন্ট্রাল জোন, প্রাইম ব‌্যাংক সাউথ জোন, ইসলামী ব‌্যাংক ইষ্ট জোন ও বিসিবি নর্থ জোন নামে চারটি দল শুরুর কয়েক বছর বিসিএলে অংশ নিয়েছে। পেশাদারিত্বের ঘাটতি, পরিকল্পনার অভাব এবং বাণিজ‌্যিকভাবে লাভবান না হওয়ায় তিনটি ফ্রাঞ্চাইজি ধীরে ধীরে সরে যায়। পরবর্তীতে বিসিবি চারটি দলই নিজস্ব খরচে পরিচালনা করে বিসিএল চালু রাখে। কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বীতার অভাব বোঝা যায়।

এজন‌্য বিসিবি সামনের আসরে বিদেশ থেকে একটি দল নিয়ে আসতে চায়। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে যোগাযোগও করেছে। বিসিএল যেই সময়ে আয়োজন করতে চাচ্ছে সেই সময়ে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে ব‌্যস্ত থাকবেন। আফগানিস্তানকে চূড়ান্ত করার পথে হাঁটছে। বিসিবির পুরো খরচেই অতিথি দল প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। বাকি তিনটি দল গঠন করবে বিসিবি।

আকরাম খান বলেছেন, ‘‘আমরা প্রথমবারের মতো বিসিএলে একটি বিদেশি দলকে পেতে যাচ্ছি। হয়তো তারা এ দল হিসেবে আসবে। নয়তো অন‌্য কোনো নামে। এক মাস এই টুর্নামেন্ট চলবে। ফেব্রুয়ারিতে হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।’’

এদিকে জাতীয় ক্রিকেট লিগে বিদেশি ক্রিকেটার অন্তর্ভূক্ত করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। তবে কোন প্রক্রিয়ায় তারা যুক্ত হবেন, কিভাবে আসবেন, পারিশ্রমিক কত হতে পারে সেসব নিয়ে এখনও কোনো উপায় খুঁজতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। তবে ভালোমানের বিদেশি খোঁজার প্রক্রিয়া চলছে।

তাদের পারিশ্রমিক চূড়ান্ত করা, পুরো আসরে অ‌্যাভেইলেভেল থাকবেন কিনা সেসব নিয়েও কাজ হচ্ছে। এজন‌্য আগেভাগে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চান না আকরাম।

আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত দুই স্তরে জাতীয় ক্রিকেট লিগের খেলা অনুষ্ঠিত হবে। আট দলে একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার রাখার ইচ্ছা বিসিবির। অতীতে বিদেশি ক্রিকেটার জাতীয় ক্রিকেট লিগে অংশ নিয়েছে। ইমরান ফরহাদ, আমির ওয়াসিমরা খেলেছেন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রথম শ্রেণির এই টুর্মামেন্টে।

মূলত প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি এবং মান বাড়াতে এই উদ‌্যোগ নিতে যাচ্ছে আয়োজকরা। যদিও একজন করে বিদেশি ক্রিকেটার খেলানোর নিয়ম প্লেয়িং কন্ডিশনে সব সময়ই ছিল, ছিল সর্বশেষ মৌসুমেও। বিভাগীয় দলগুলো আগ্রহ না থাকায় বিসিবিও জোর দেয়নি। তবে এবার বিসিবি বিদেশি ক্রিকেটারকে যুক্ত করবে। পাশাপাশি তাদের পারিশ্রমিক ও সুযোগ সুবিধার বিষয়টিও দেখভাল করবে।

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ