সাগরে ট্রলারডুবি: চার দিন ভেসে থাকার পর উদ্ধার ৯ জন, নিখোঁজ ৬
Published: 29th, July 2025 GMT
পটুয়াখালীর কুয়াকাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে এফবি সাগরকন্যা নামের একটি মাছ ধরার ট্রলার ডুবে গেছে। সমুদ্রে চার দিন ভেসে থাকার পর ৯ জেলেকে উদ্ধার করেছে অপর দুটি ট্রলার। এখনো নিখোঁজ আছেন আবদুর রশিদ, নজরুল ইসলাম, রফিক, ইদ্রিস, সাগর ও কালাম নামের ছয় জেলে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) ভোরে উদ্ধার করা ৯ জেলেকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত শুক্রবার সকাল ১০টায় বঙ্গোপসাগরে ওই ট্রলার ডুবে যায়। ট্রলারের জেলেদের বাড়ি মহিপুর ও লক্ষ্মীপুর থানার বিভিন্ন গ্রামে।
আরো পড়ুন:
হাতিয়ায় বাঁধ ভেঙে উপকূলের জনজীবন বিপর্যস্ত
সেন্টমার্টিনে তিনদিন ধরে নৌযান চলাচল বন্ধ, খাদ্য সংকট
উদ্ধার হওয়া জেলেরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে মহিপুর থেকে আবদুর রশিদ মাঝি ১৫ জেলেসহ ট্রলার নিয়ে গভীর সাগরে যান। শুক্রবার সকালে শেষ বয়ার ৭৫ কিলোমিটার গভীর গিয়ে জাল ফেলার পর হঠাৎ ঝড় ও উত্তাল ঢেউয়ে ট্রলারটি ডুবে যায়। এ সময় ইদ্রিস ও কালাম নামের দুই জেলে হারিয়ে যান। বাকি ১৩ জন বাঁশ ও ফ্লুটের সাহায্যে ভাসতে শুরু করলে পর্যায়ক্রমে আবদুর রশিদ, সাগর, নজরুল ও রফিক নামের আরো ৪ জেলে হারিয়ে যান। তারা গতকাল রাতে ভাসতে ভাসতে শেষ বয়া এলাকায় পৌঁছালে দুটি ট্রলার পৃথক স্থান থেকে নয়জনকে উদ্ধার করে। মঙ্গলবার ভোরে তাদেরকে কলাপাড়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে নেওয়া হয়।
উদ্ধার হওয়া জেলে হাসান বলেছেন, “আমরা যখন জাল ফেলেছি, তখন সাগর একেবারে ঠান্ডা ছিল। যখন জাল টেনে ট্রলারে তুলছিলাম, হঠাৎ একটি ঝড় এবং উত্তাল ঢেউ এসে আমাদের ট্রলারকে তিন খণ্ড করে ফেলে। ট্রলার ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা দুজনকে হারিয়ে ফেলি। পরে ভাসতে ভাসতে আরো চারজন কোথায় গিয়ে পৌঁছায়, তা বলতে পারি না। আমাদের সঙ্গে যে নয়জন ছিল, তাদের মধ্যে অনেকেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। গতকাল রাতে একটি আলো দেখে ভাসতে ভাসতে শেষ বয়া এলাকার কাছে পৌঁছালে একটি ট্রলার আমাদের উদ্ধার করে।”
আরেক জেলে হারুন বলেন, “দুই দিন ভাসার পর আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে কীভাবে বেঁচে ফিরেছি, তা জানি না। আল্লাহ বাঁচিয়েছেন। হাসপাতালে এসে আমি জ্ঞান ফিরে পাই।”
মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহমুদ হাসান বলেছেন, “ট্রলারডুবির ঘটনায় ২৬ জুলাই ট্রলারের মালিক কিশোর হাওলাদার জেলে নিখোঁজের তথ্য উল্লেখ করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। আমরা নিখোঁজ ছয় জেলের সন্ধান পেতে চেষ্টা চালাচ্ছি।”
ঢাকা/ইমরান/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।
অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।
আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগেএ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।
সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।
আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে