টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের প্রবল তোড়ে লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার গাবতলী খালের ওপরের ব্রিজের এক পাশে মাটি ধসে পড়েছে। এতে রামগতি-বয়ারচর সড়কে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রামগতি উপজেলার তেগাছিয়া বাজার সংলগ্ন গাবতলী খালের ওপরের ব্রিজটির মাঠি ধসে পড়েছে।  এই ব্রিজ দিয়েই রামগতি বাজার থেকে তেগাছিয়া, টাংকি বাজার, ব্রিজঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র এবং পাশ্ববর্তী নোয়াখালীর হাতিয়ার মানুষ যাতায়াত করতো ও পণ্য পরিবহন করতো। 

স্থানীয় বাসিন্দা আজমীর হোসেন বলেন, “ব্রিজের এক পাশের মাটি ধসে পড়ায় সব ধরনের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। জনসাধারণ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। দ্রুত মেরামতের দাবি জানাচ্ছি।”

ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন বলেন, “এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ ইলিশসহ বিভিন্ন মাছ রামগতি বাজারের মাছঘাট ও ব্রিজঘাট মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে আনা-নেওয়া হয়। ব্রিজের মাটি ধসে যাওয়ায় মাছ পরিবহনে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় মৎস্য ব্যবসায়ীরা।”

স্থানীয়দের ভাষ্য, গত কয়েকদিন ধরে মেঘনা নদীতে অস্বাভাবিক উচ্চতায় জোয়ার হচ্ছিল। সেই পানি সরাসরি গাবতলী খালে প্রবেশ করে। সঙ্গে ভারী বর্ষণে খালের স্রোত আরো বেড়ে যায়। এর ফলে ধীরে ধীরে ব্রিজের পশ্চিম পাশে থাকা উইংওয়ালের নিচের মাটি সরে গিয়ে ধস নামে। সোমবার (২৮ জুলাই) রাতে জোয়ারের পানি নামার সময় মাটি ধসে।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রামগতি উপজেলা প্রকৌশলী স্নেহাল রায় বলেন, “খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা এলাকা পরিদর্শন করেছি। দ্রুত ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।”

রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, “রামগতি-বয়ারচর সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সড়ক দিয়েই একমাত্র যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। দ্রুত ব্রিজ মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/জাহাঙ্গীর লিটন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল ব যবস র মগত

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ 

সাগরে এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ মাছ। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এই ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এই মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানো হয়। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় ৪০ লাখ টাকায়। ট্রলারটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ ইলিশ তুলে দেওয়া হয়। 

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সূত্রে জানাগেছে, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইফ কোম্পানির এফবি সাফওয়ান-৩ মাছ ধরার ট্রলার গত ২৯ অক্টোবর সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জন জেলে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। 

ওই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারটিতে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ তুলে দেওয়া হয়। জেলেরা বলছে, সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে। 

এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা ২৯ অক্টোবর সাগরে যাই। বিকেলে লম্বা জাল (ইলিশ জাল) ফেলার পর রাত আটটার দিকে জালের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। রাত আটটা থেকে জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়।”

সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম জানান, অনেক দিন ধরে সাগরে খুব কম মাছ ধরা পড়ছিল। ইলিশ মৌসুমে কাঙ্খিত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছিল। সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে। 

পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, “মাছগুলো আমার আড়তে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের প্রকারভেদ ২৭ হাজার, ২২ হাজার, ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সব মিলিয়ে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় এই মাছ বিক্রি হয়।” 

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “২২ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে- এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।”

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।”

তিনি বলেন, “জেলেরা সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানলে এবং অবৈধ জাল বন্ধ তাদের জেলেদের সুদিন ফিরবে।”

ঢাকা/ইমরান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ