চীনের ইউনান ইউনিভার্সিটির স্কুল অব জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের একদল শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে তাঁরা রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয় পরিদর্শন করেন। এ সময় নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদলও তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। পরিদর্শনকালে তাঁরা প্রথম আলোর বার্তাকক্ষসহ বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন।

ইউনান ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা তাঁদের শিক্ষাসফরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ভ্রমণে রয়েছেন। সাউথ–সাউথ ইস্ট এশিয়ান কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কের আওতায় এ সফরে গত দুই দিন তাঁরা নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। ইউনান ইউনিভার্সিটি ও নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ‘সাউথ–সাউথ ইস্ট এশিয়ান ইউনিভার্সিটি নেটওয়ার্কে’র আনুষ্ঠানিক সদস্য।

পরিদর্শনের সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা প্রথম আলো এবং বাংলাদেশের সংবাদ–সাংবাদিকতার নানা বিষয় নিয়ে জানতে চান। সফররত দলের এক প্রশ্নের জবাবে প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, বাংলাদেশে সব সরকারের সময়েই প্রথম আলোকে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। প্রথম আলো সব সময় পাঠকের কাছে সত্য প্রকাশ করেছে এবং নৈতিক অবস্থান বজায় রেখেছে। ফলে পাঠক প্রথম আলোর সঙ্গে ছিল।

এক প্রশ্নের জবাবে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রিজওয়ান-উল-আলম বলেন, প্রথম আলো বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় অনেক ক্ষেত্রেই পথ দেখিয়ে চলছে। তাদের নারী নীতিমালা, শিশুদের জন্য নীতিমালা, এমনকি সাম্প্রতিককালে এআই নীতিমালাও তারা করেছে। ফলে সংকটকালেও প্রথম আলো সত্য প্রকাশ করতে পেরেছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন বলেন, ‘এখন পাঠক ভিডিও প্রতিবেদনের প্রতি বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। আমরা আরও বেশি ভিডিও প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কাজ করছি।’

ইউনান ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষকের করা প্রশ্নের জবাবে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক হারিসুর রহমান বলেন, প্রথম আলো শুরু থেকেই বাংলাদেশে নিরপেক্ষতা, স্বাধীন ও নৈতিক অবস্থান এবং স্বচ্ছ অবস্থান নিয়ে কাজ করেছে। ফলে পাঠক তাদের এ অবস্থানকে গ্রহণ করেছেন।

ইউনান ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থীর করা প্রশ্নের জবাব দেন প্রথম আলোর ইংরেজি বিভাগের প্রধান আয়েশা কবির।

সফররত চীনা শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামনে প্রথম আলোর কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন এর হেড অব মার্কেটিং আজওয়াজ খান।

এ সময় ইউনান ইউনিভার্সিটির স্কুল অব জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক চেন জিনজিইং, সহযোগী অধ্যাপক লি ফেং পিং, জেই জিয়ানডং এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির মিডিয়া, কমিউনিকেশন অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সৌমিক পাল উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউন ন ইউন ভ র স ট র প রথম আল র অবস থ ন

এছাড়াও পড়ুন:

শ্রম আইন সংশোধন দ্রুত শেষ করতে বলেছে মার্কিন প্রতিনিধিদল

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে পাল্টা শুল্ক কমাতে হলে বাণিজ্যঘাটতি কমানোর পাশাপাশি শ্রম আইন সংশোধনপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ করতে বলেছে ঢাকা সফররত মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল।

তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতাদের সঙ্গে আজ সোমবার সকালে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠক করে এমনটাই বলেছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি ব্রেন্ডেন লিঞ্চ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের নেতৃত্বে সংগঠনটির সহসভাপতি মো. রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ আবদুস সালাম প্রমুখ মার্কিন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে আরও ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন। ব্রেন্ডেন লিঞ্চ দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন বাণিজ্যনীতি বাস্তবায়নের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মার্কিন প্রতিনিধিদল বিজিএমইএর নেতাদের স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে যে পাল্টা শুল্ক নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে এখনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। ফলে পাল্টা শুল্কের হার সেটি আরও কমানোর সুযোগ রয়েছে। তার জন্য বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার বাণিজ্যঘাটতি এবং শ্রম আইন সংশোধনপ্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।

জানতে চাইলে বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাণিজ্যঘাটতি কমানোর বিষয়ে আমরা প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছি, ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি শুরু হয়েছে। এ ছাড়া গম, এলএনজিসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির প্রক্রিয়াও চলছে। এসব পণ্য আমদানি হলে বাণিজ্যঘাটতি অনেকটাই কমে আসবে। এ ছাড়া শ্রম আইন সংশোধনের ১২৪টির মধ্যে ১২২টির বিষয়ে আমরা ত্রিপক্ষীয় বৈঠকে একমত হয়েছি। বাকিগুলোর বিষয়েও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছানো যাবে। তা ছাড়া আইএলওর কনভেনশন অনুসমর্থন নিয়েও আমাদের কোনো আপত্তি নেই।’

বিজিএমইএর সভাপতি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করা কোনো পণ্য উৎপাদনে ওই পণ্যের মোট মূল্যের কমপক্ষে ২০ শতাংশ যদি দেশটির উপকরণ বা কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তাহলে ওই ২০ শতাংশের ওপর পাল্টা শুল্ক প্রযোজ্য না হওয়ার একটি বিষয় আমরা জেনেছি। সেটি পরিষ্কার করার বিষয়ে আমরা মার্কিন প্রতিনিধিদলকে অনুরোধ করেছি। তাঁরা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কাজ করছেন। তাঁরা দ্রুতই জানাবেন।’

পাল্টা শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে বাণিজ্য চুক্তির একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। বাণিজ্য চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে তিন দিনের সফরে ঢাকায় এসেছে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদলটি। বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের সঙ্গে গতকাল রোববার সচিবালয়ে বৈঠক করে প্রতিনিধিদল। এতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নাজনীন কাউসার চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সফররত মার্কিন দল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের সঙ্গেও বৈঠক করবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শ্রম আইন সংশোধন দ্রুত শেষ করতে বলেছে মার্কিন প্রতিনিধিদল