আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা রেড ক্রসের প্রধান সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, গাজা শহর থেকে ব্যাপকভাবে সরিয়ে নেওয়ার সময় জনগণকে নিরাপদ রাখা অসম্ভব হবে, কারণ ইসরায়েল তাদের আক্রমণ তীব্রতর করছে। শনিবার রেড ক্রসের সভাপতি মিরজানা স্পোলজারিক এক বিবৃতিতে এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

প্রায় ২৩ মাস ধরে চলা যুদ্ধের পর হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে গাজা শহর থেকে শুরু করে পুরো গাজা উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে ইসরায়েল।

মিরজানা স্পোলজারিক বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে গাজা শহর থেকে ব্যাপকভাবে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া অসম্ভব।”

তিনি জানিয়েছেন, খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসা সরবরাহের তীব্র ঘাটতির মধ্যে, এই স্থানান্তরের ফলে ব্যাপক জনসংখ্যার স্থানচ্যুতি ঘটবে, যাদেরকে গাজা উপত্যকার অন্য কোনো অঞ্চল গ্রহণ করতে সক্ষম নয়।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী শুক্রবার বলেছে, “ইসরায়েল রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে চলমান কৌশল ও আক্রমণাত্মক অভিযানের পাশাপাশি মানবিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে।”

ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের ফিলিস্তিনি ছিটমহলের দক্ষিণে চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

স্পোলজারিক জানিয়েছেন, গাজা শহরের অনেক মানুষ ক্ষুধার্ত, অসুস্থ বা আহত হওয়ার কারণে তারা সরে যাওয়ার নির্দেশ মানতে পারবে না।

আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে, সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করার সময় বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয়, নিরাপত্তা ও খাদ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।

 স্পোলজারিক বলেছেন, “গাজায় বর্তমানে এই শর্তগুলো পূরণ করা সম্ভব নয়। এটি বর্তমান পরিস্থিতিতে যে কোনো স্থানান্তরকে কেবল অসম্ভবই নয় বরং অবোধগম্যও করে তোলে।”
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ