চিকিৎসক সঙ্কটে বন্ধ চাঁদপুরের ২ টাকার চিকিৎসালয়
Published: 31st, August 2025 GMT
চিকিৎসক না থাকায় চাঁদপুরের পুরানবাজারে অবস্থিত শত বছরের পুরাতন দুই টাকার দাতব্য চিকিৎসালয়টি বন্ধ হয়ে গেছে। রবিবার (৩১ আগস্ট) বিকেলে চিকিৎসালয়টি বন্ধ হয়ে যাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেন পৌরসভার প্রশাসক মো. গোলাম জাকারিয়া।
স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান বলেন, “১৯২০ সালে চিকিৎসালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এখানে এক সময় এমবিবিএস ডাক্তার ছিল। পরে স্বাস্থ্য সহকারীর মাধ্যমে টিকাকেন্দ্রসহ স্বাস্থ্যসেবা বহাল ছিল। সবশেষ বিপ্লব নামে এখানে থাকা এক স্বাস্থ্য সহকারীকে জন্ম নিবন্ধনের কাজে এবং মোশারফ নামে স্বাস্থ্য সহকারীকে ফিল্ডের কাজে পাঠিয়ে দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। এরপর সকাল ৯টা হতে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলা এই দাতব্য চিকিৎসালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে এখানে আসা হতদরিদ্র রোগীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।”
পুরানবাজারের বাসিন্দা মিজানুর রহমান জানান, পৌরসভার ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের পুরানবাজার ও ইব্রাহীমপুরের চরাঞ্চলের নিম্ন আয়ের মানুষ এই দাতব্য চিকিৎসালয়টিতে সেবা নিতেন। এখানে দুইজন আরএমপি চিকিৎসক বা পল্লী চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দিতেন। মাত্র ২টাকার বিনিময়ে পেট ব্যথা, মাথা ব্যথা, চুলকানি, মা ও শিশুর রোগ নির্ণয়ে পৌরসভার থেকে বরাদ্দকৃত প্যাডে ব্যবস্থাপত্র ও বিনামূল্যে নাপা, প্যারাসিট্যামল, সালাইনসহ প্রাথমিক ওষুধপত্র দেওয়া হত। ১৫ দিন আগে এই চিকিৎসালয় বন্ধ হয়ে যায়।”
রহিমা নামে এক বৃদ্ধা বলেন, “আমি চিকিৎসা নিতে এসে দেখি, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা এখানে অবস্থান করছেন। তারাই জানান, এখানে এখন আর চিকিৎসা দেওয়া হয় না। আমি গরিব মানুষ। এখানে বিনামূল্যে ওষুধও পেতাম। এখন আমার কি হবে?”
পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম নজু বেপারী বলেন, “শুনেছি, কিছুদিন ধরে এখানে ওষুধ সরবরাহ কমিয়ে দেওয়া হয়। এরপর খরচ কমাতে এখানের স্বাস্থ্য সহকারীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে, ঠিক কী কারণে এটি বন্ধ করা হলো আমাদের জানা নেই। আমরা চাই, দাতব্য চিকিৎসালয়টি চালু করে দরিদ্র মানুষদের সেবা দেওয়া হোক।”
চাঁদপুর পৌরসভার প্রশাসক মো.
তিনি আরো বলেন, “আমরা সিভিল সার্জনের সঙ্গে এ বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। আশা করছি, চিকিৎসক পাওয়া গেলে দ্রুত এটি আবার চালু করা হবে।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ব স থ য সহক র প রসভ র চ ক ৎসক
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।