কদিন পরই এশিয়া কাপ খেলতে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাবে বাংলাদেশ। মহাদেশীয় এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ তিনবার ফাইনাল খেলেছে। শিরোপা জেতা হয়নি একবারও। এবার কী পারবে? দলের আশা, তারা ফাইনাল খেলা এবং শিরোপার জন্যই মাঠে নামবে। কিন্তু সেই প্রস্তুতি কি আদৌ হচ্ছে?

বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডস জাতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে প্রস্তুতি সারছে। সিলেটে হচ্ছে এই সিরিজ। কিন্তু এশিয়া কাপের প্রস্তুতি আসলেও হচ্ছে কি না তা নিয়ে সন্দেহ বাড়াচ্ছে। দুই ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ সিরিজ নিশ্চিত করেছে এরই মধ্যে। প্রথম ম্যাচ ৮ উইকেটে, পরেরটি ৯ উইকেটে জিতে শিরোপা জিতেছে। কিন্তু দুই ম্যাচে কঠিন কোনো মুহূর্ত পায়নি বাংলাদেশ। নিজেদের সেরা একাদশ নিয়ে খেলে অনায়েসে ম্যাচ জিতেছে।

আরো পড়ুন:

জিম্বাবুয়ের টি-টোয়েন্টি দলে ফিরলেন টেলর ও উইলিয়ামস

‘ভারতের ক্রিকেটের জন্য রোহিতের আরও ১০ বছর খেলা উচিত’

নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও খেলতে নেমে অনেক ছক হিসেব করেছে। টস জেতা, আগে বোলিং নেওয়া, শিশির ভাবনা, টিম কম্বিনেশনসহ আরো অনেক কিছু চিন্তা করেছে। কিন্তু ডাচদের বিপক্ষে খেলাতেও এমন চিন্তা করার প্রয়োজন ছিল কিনা তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। যদিও এশিয়া কাপের আগে ভারতের সঙ্গে সিরিজ খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। ভারত তা পিছিয়ে দেওয়ায় বাংলাদেশ নেদারল্যান্ডসকে আমন্ত্রণ জানায়।

আর্থিক দিক দিয়ে এই সিরিজ থেকে লাভ তো পরের কথা, খরচের টাকাও উঠছে না। আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বিসিবির। এশিয়া কাপের আগে ক্রিকেটারদের খেলার মধ্যে রাখতে তাই অনেকটা তাড়াহুড়ো করে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সিরিজটি আয়োজন করে বিসিবি।

বিসিবি সভাপতি মঙ্গলবার বলেছেন, ‘‘৫০ ওভারের খেলা হয়েছিল ২০২৩ সালে কলকাতায়, আমরা কিন্তু হেরেছিলাম। শক্তির ব্যাপারের থেকেও বড় ব্যাপার হচ্ছে প্রস্তুতি। এখানে ভারতের আসার কথা ছিল, আসেনি। আর্থিকভাবে আমরা কিন্তু কিছুটা ক্ষতিতে আছি এই ইভেন্ট নিয়ে, তারপরও এই ইভেন্ট আমরা করছি এজন্য যে, শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের সঙ্গে আমরা খেললাম, এরপর গ্যাপটা না রাখার জন্য আমরা নেদারল্যান্ডসকে পেয়েছি, তাদেরকেই এনেছি।”

“আমরা ভালো ক্রিকেট খেলছি এই মুহূর্তে। সামনে এশিয়া কাপ ও ২০২৬ সালে যে বিশ্বকাপ হবে, সেই প্রক্রিয়ার থাকার পথে একটি আন্তর্জাতিক সিরিজ খেললাম এটি।” - যোগ করেন তিনি। 

দুটি ম্যাচেই বাংলাদেশ আগে ব্যাটিং করেছে। অথচ টস জিতে চাইলেই আগে ব্যাটিং নিয়ে বড় স্কোর করতে পারত। বোলারদেরও বড় স্কোরের বিপক্ষে বোলিংয়ে পরীক্ষায় ফেলত পারত। অথচ দল হেঁটেছে নিরাপদ পথে। যেখানে চ্যালেঞ্জ ছিল কম। প্রাপ্তিও তাই বড় আশা দেখাচ্ছে না। 

তবে আমিনুল ইসলাম দলের পরিকল্পনার কথাই বললেন বারবার, ‘‘(আগে) বোলিং-ফিল্ডিং, এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে দলীয় পরিকল্পনার ওপরে। এটা আন্তর্জাতিক খেলা, কেউ পরীক্ষা করতে চায় না। দলীয় পকিল্পনা আমরা জানি না। তবে বাইরে থেকে যেটা মনে হয় আর কী। আমাদের কোনো নির্দেশনা সেখানে থাকে না। আমরা চাই দল ভালো খেলুক। তাদের সর্বস্ব দিক এবং এবং ক্রমবর্ধমানভাবে উন্নতি করুক।”

“আজকে সকালেও প্রায় দুই ঘণ্টা বিভিন্ন ক্রিকেটারের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। তাদের মধ্যে অন্যরকম আত্মবিশ্বাস দেখেছি আমি। তাদের চিন্তার করার যে ক্ষমতা আছে… যেহেতু আমি নিজেও একজন ক্রিকেট কোচ, চেষ্টা করেছি চিন্তা করার ক্ষেত্রে তাদেরকে ‘আনলকড’ করার।”

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রস ত ত

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ