চাকরিজীবী নারীর সম্পদ লুট, দম্পতি কারাগারে
Published: 12th, September 2025 GMT
বরগুনায় এক চাকরিজীবী নারীর সাড়ে ১৯ লাখ টাকা ও চার শতক জমি হাতিয়ে নেওয়ার পর প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা তুলতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া দম্পতিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরো পড়ুন:
বরগুনার সাবেক নাজির ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লাকুরতলা এলাকার মরিয়ম বিথী ও তার স্বামী সোহেল রানা।
গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চেক জালিয়াতির অভিযোগে রুপালি ব্যাংকের বরগুনা শাখা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ ও নৌবাহিনী। রাতে তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এই দম্পতিকে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, পর্নোগ্রাফি দিয়ে ক্রমাগত ব্লাকমেইল করে গত এক বছর ধরে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে সাড়ে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিথী ও তার স্বামী সোহেল। এরপরও তারা আরো টাকা দাবি করেন। ভুক্তভোগী নারী অর্থ শূন্য হয়ে পড়ার কথা জানালে ভয়ভীতি দেখিয়ে চার শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেন বিথী ও সোহেল। এরপর ভুক্তভোগী নারীর প্রভিডেন্ট ফান্ডের অ্যাকাউন্টের একটি ব্ল্যাঙ্ক চেকেও স্বাক্ষর করিয়ে নেন তারা।
সেই চেকে সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা লিখে গত মঙ্গলবার ব্যাংকে যান অভিযুক্তরা। যথাযথভাবে চেক না আসার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দেন এবং বিষয়টি ফোন করে অ্যাকাউন্ট হোল্ডার ভুক্তভোগী নারীকে জানান।
গতকাল বৃহস্পতিবার আবারো বিথী ও সোহেল ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে ভুক্তভোগী ব্যাংকে হাজির হন। এ সময় পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে অভিযুক্তদের আটক করেন।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, “বিথী এবং সোহেল আমাকে ভয় দেখিয়ে সর্বস্বান্ত করেছে। আমি ওদের ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েও কাউকে কিছু বলতে পারিনি। টাকা নিতে নিতে আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করেছে। তারা আমার জমি পর্যন্ত লিখে নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ওরা আমার প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যাংক একাউন্টের চেক স্বাক্ষর করে নিয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রভিডেন্ট ফান্ডের চেকে ওরা যে টাকা উল্লেখ করেছে, সেই পরিমাণ টাকা সেখানে কখনোই আসবে না। আমি চাকরিজীবী হওয়ায় এই মুহূর্তে ওই একাউন্টে কোনো টাকাও নেই। আমি এই ঘটনায় এই দুই প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার টাকা এবং জমি ফেরত চাই।”
বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ক উন ট বরগ ন
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি