বরগুনায় এক চাকরিজীবী নারীর সাড়ে ১৯ লাখ টাকা ও চার শতক জমি হাতিয়ে নেওয়ার পর প্রভিডেন্ট ফান্ড থেকে সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা তুলতে গিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া দম্পতিকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

আরো পড়ুন:

বরগুনার সাবেক নাজির ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা 

ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- লাকুরতলা এলাকার মরিয়ম বিথী ও তার স্বামী সোহেল রানা।

গত বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চেক জালিয়াতির অভিযোগে রুপালি ব্যাংকের বরগুনা শাখা থেকে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে পুলিশ ও নৌবাহিনী। রাতে তাদের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় এই দম্পতিকে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, পর্নোগ্রাফি দিয়ে ক্রমাগত ব্লাকমেইল করে গত এক বছর ধরে বিভিন্ন সময় ভুক্তভোগী নারীর কাছ থেকে সাড়ে ১৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিথী ও তার স্বামী সোহেল। এরপরও তারা আরো টাকা দাবি করেন। ভুক্তভোগী নারী অর্থ শূন্য হয়ে পড়ার কথা জানালে ভয়ভীতি দেখিয়ে চার শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেন বিথী ও সোহেল। এরপর ভুক্তভোগী নারীর প্রভিডেন্ট ফান্ডের অ্যাকাউন্টের একটি ব্ল্যাঙ্ক চেকেও স্বাক্ষর করিয়ে নেন তারা।

সেই চেকে সাড়ে ৩৫ লাখ টাকা লিখে গত মঙ্গলবার ব্যাংকে যান অভিযুক্তরা। যথাযথভাবে চেক না আসার কারণে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দেন এবং বিষয়টি ফোন করে অ্যাকাউন্ট হোল্ডার ভুক্তভোগী নারীকে জানান।

গতকাল বৃহস্পতিবার আবারো বিথী ও সোহেল ব্যাংকে টাকা তুলতে গেলে ভুক্তভোগী ব্যাংকে হাজির হন। এ সময় পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে অভিযুক্তদের আটক করেন। 

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‍“বিথী এবং সোহেল আমাকে ভয় দেখিয়ে সর্বস্বান্ত করেছে। আমি ওদের ব্ল্যাকমেইলের শিকার হয়েও কাউকে কিছু বলতে পারিনি। টাকা নিতে নিতে আমার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করেছে। তারা আমার জমি পর্যন্ত লিখে নিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ওরা আমার প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যাংক একাউন্টের চেক স্বাক্ষর করে নিয়েছে।” 

তিনি বলেন, “প্রভিডেন্ট ফান্ডের চেকে ওরা যে টাকা উল্লেখ করেছে, সেই পরিমাণ টাকা সেখানে কখনোই আসবে না। আমি চাকরিজীবী হওয়ায় এই মুহূর্তে ওই একাউন্টে কোনো টাকাও নেই। আমি এই ঘটনায় এই দুই প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। আমার টাকা এবং জমি ফেরত চাই।”

বরগুনা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.

ইয়াকুব হোসাইন বলেন, “ভুক্তভোগী নারীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছেন। মামলার তদন্ত চলমান।” 

ঢাকা/ইমরান/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ ক উন ট বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

নেত্রকোনায় ছেলের লাঠির আঘাতে বাবার মৃত্যু

নেত্রকোনার মদনে ছেলের লাঠির আঘাতে মোস্তফা মিয়া (৬৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের ঘাটুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোস্তফা মিয়া ঘাটুয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি কৃষিকাজ করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মোস্তফা মিয়ার ছেলে সাজ্জাদ মিয়া (২৫) দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি কখনো বাড়িতে থাকতেন, কখনো বাড়ি ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন।

গতকাল সন্ধ্যার পর সাজ্জাদ বাড়িতে ফেরেন। রাতের খাবার শেষে মোস্তফা মিয়া নিজ ঘরে শুয়ে পড়লে হঠাৎ সাজ্জাদ ঘরে ঢুকে লাঠি দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান মোস্তফা মিয়া।

খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন সাজ্জাদকে আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মোস্তফা মিয়ার লাশ উদ্ধার করে এবং সাজ্জাদকে থানায় নিয়ে যায়।

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুল আলম শাহ বলেন, সাজ্জাদ মানসিক ভারসাম্যহীন বলে পরিবার ও এলাকাবাসী জানিয়েছেন। তাঁকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ আজ রোববার সকালে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ