আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪২৮ জন, সবচেয়ে বেশি প্রাণহানি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়
Published: 15th, September 2025 GMT
দেশে চলতি বছরের আগস্টে ৪৫১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৮ জন নিহত ও ৭৯১ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছেন মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়, যা মোট দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার ৩০ শতাংশের বেশি। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
আজ সোমবার রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পাঠানো প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জুলাইয়ে ১৯টি নৌ দুর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন এবং ৩৭টি রেল দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ১১ জন আহত হয়েছেন। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
এর আগে গত জুলাইয়ে ৪৪৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৮ জন নিহত ও ৮৫৬ জন আহত হয়েছিলেন।
আগস্টে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির তথ্য তুলে ধরে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, সড়কে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে নারী ৬৮ জন ও শিশু ৩৪ জন। এর মধ্যে ১৪৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩২ জন। দুর্ঘটনায় ৮৩ জন পথচারী নিহত হয়েছেন। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৫২ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনায় যানবাহনভিত্তিক নিহত হওয়ার পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ১৩২ জন, বাসের যাত্রী ৩০ জন, ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরির আরোহী ২৭ জন, প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস-অ্যাম্বুলেন্স আরোহী ২১ জন, থ্রি-হুইলার যাত্রী (সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা) ৯৭ জন, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নছিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্রা) ৩৩ জন এবং বাইসাইকেল আরোহী ৫ জন নিহত হয়েছেন।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ২১৪টি জাতীয় মহাসড়কে, ১৩৫টি আঞ্চলিক সড়কে, ৪২টি গ্রামীণ সড়কে এবং ৬০টি শহরের সড়কে সংঘটিত হয়েছে। দুর্ঘটনাগুলোর ৯০টি মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২০৭টি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ৮৫টি পথচারীকে ধাক্কা দেওয়া, ৬২টি যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ৭টি অন্যান্য কারণে ঘটেছে।
ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি ১১৯টি দুর্ঘটনায় ১১৭ জন নিহত হয়েছেন। বরিশাল বিভাগে সবচেয়ে কম ১৮টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ঢাকা জেলায় ৩৬টি দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। এই জেলায় ছয়টি দুর্ঘটনায় একজন নিহত হয়েছেন। রাজধানী ঢাকায় ৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত এবং ৪৬ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন; ত্রুটিপূর্ণ সড়ক; বেপরোয়া গতি; চালকদের বেপরোয়া মানসিকতা, অদক্ষতা ও শারীরিক-মানসিক অসুস্থতা; বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট না থাকা; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল; তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো; জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা; দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা; বিআরটিএর সক্ষমতার ঘাটতি এবং গণপরিবহন খাতে চাঁদাবাজি।
সুপারিশ হিসেবে বলা হয়েছে দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়াতে হবে; চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে; বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে; পরিবহনমালিক-শ্রমিক, যাত্রী ও পথচারীদের প্রতি ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে; মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন বন্ধ করে এগুলোর জন্য আলাদা পার্শ্ব রাস্তা (সার্ভিস রোড) তৈরি করতে হবে; পর্যায়ক্রমে সব মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ করতে হবে; গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে; রেল ও নৌপথ সংস্কার করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমাতে হবে; টেকসই পরিবহন কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন য় ল দ র ঘটন য় পর বহন সবচ য় আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
সিডনিতে তিন তারকার হলো দেখা
দূর প্রবাসের ব্যস্ত জীবনে হঠাৎ দেশের চেনা মুখের দেখা মিলে গেলে সেটি কেবল একটি সাধারণ সাক্ষাৎ থাকে না। বরং হয়ে ওঠে দেশের স্মৃতি টেনে আনা এক মুহূর্ত, হয়ে ওঠে একটুকরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। এমনই এক দৃশ্যের অবতারণা হলো গত শনিবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনির এডমন্ডসন পার্ক মলে।
বাংলাদেশের তিন অঙ্গনের তিন পরিচিত মুখ—ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস, গায়ক তাহসান খান ও অভিনেতা মাজনুন মিজান সেখানে হঠাৎ একত্র হলেন। ব্যস্ত নগরের ভিড়ে এই তিন তারকার দেখা হয়ে গেল এক ‘অপ্রত্যাশিত’ আড্ডায়।
তিন ভুবনের তারকারা
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক ওপেনার ইমরুল কায়েস সম্প্রতি পরিবার নিয়ে সিডনিতে স্থায়ী হয়েছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে বহু স্মরণীয় ইনিংস খেলা এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এখন নতুন করে জীবনের আরেক অধ্যায় শুরু করেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। অভিনেতা মাজনুন মিজানও অনেক দিন ধরেই পরিবার নিয়ে সিডনিতে বসবাস করছেন।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় এই অভিনেতা দেশে অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন। নাট্যাঙ্গনের পরিচিত মুখ হলেও সিডনিতে তিনি অনেকটা পর্দার আড়ালেই থাকেন, তবু প্রবাসী বাঙালিদের কাছে তিনি প্রিয়জন।
অন্যদিকে গায়ক ও অভিনেতা তাহসান খান ছিলেন সফররত। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন শহরে কনসার্ট করছেন তিনি। ব্রিসবেন ও অ্যাডিলেডে সফল শো শেষে সিডনির কনসার্টেও হাজারো দর্শকের মন জয় করেছেন। এরপর সামনে রয়েছে মেলবোর্ন ও পার্থে তাঁর পরিবেশনা। সিডনিতে সফল কনসার্টের রেশ এখনো কাটেনি, এরই মধ্যে ঘটে গেল এই মিলন।