দ্বিতীয় দিনে মনোনয়ন ফরম তুলেছেন ১৪১ জন
Published: 15th, September 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের মনোনয়ন বিতরণের দ্বিতীয় দিনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৪১ জন প্রার্থী। আজ সোমবার কেন্দ্রীয় সংসদের জন্য ৭১ জন, ছাত্র হল সংসদের জন্য ২৫ জন এবং ছাত্রী হল সংসদের জন্য ৪৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। আগামীকাল মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহের শেষ দিন।
এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ১৬৯ জন। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় সংসদে ৯১ জন, ছাত্র হলে ২৬ জন এবং ছাত্রী হলে ৪৬ জন প্রার্থী রয়েছেন। আজ বিকেলে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কেন্দ্রীয় সংসদে ফরম তোলা ১৪১ জনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সহসভাপতি পদে আটজন, সাধারণ সম্পাদক পদে তিনজন ও সহসাধারণ সম্পাদক পদে দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে জানা গেছে। বাকিদের পদ এখনো জানা যায়নি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে। চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় নির্বাচন কমিশনারের দপ্তর থেকে প্রার্থীরা ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রথম দিনে ফরম সংগ্রহ করেছিলেন ২৮ জন, দ্বিতীয় দিনে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪১ জনে। ’
অধ্যাপক মনির উদ্দিন আরও বলেন, ‘আজ আমাদের মনোনয়নপত্র বিতরণের দ্বিতীয় দিন। শিক্ষার্থীরা আগ্রহ নিয়ে আসছেন। পরিবেশও ভালো। আশা করছি, ফরম বিতরণ সুন্দরভাবে চলবে। ’
আজ বিকেলে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় গিয়ে দেখা যায়, প্রার্থীরা সরাসরি এসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করছেন। অনেকে দলবদ্ধভাবে এসে ছবি তুলছেন।
আজ প্যানেল হিসেবে ফরম সংগ্রহ করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ সমর্থিত ‘সচেতন শিক্ষার্থীর সংসদ’ এবং নবাব ফয়জুন্নেছা হলের পাহাড়ি ছাত্রীদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ‘হৃদ্যতার বন্ধন’।
‘সচেতন শিক্ষার্থীর সংসদ’ প্যানেল শিগগিরই পূর্ণাঙ্গ তালিকা ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে। তারা ২৬টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। নারী শিক্ষার্থী, মুক্তিযুদ্ধ পদ ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে অন্তর্ভুক্ত করে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্যানেল করার কথা জানিয়েছেন ফাইন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও সম্ভাব্য ভিপি প্রার্থী আব্দুর রহমান রবিন।
অন্যদিকে নবাব ফয়জুন্নেছা হলে ১৪ জন প্রার্থী নিয়ে ফরম তুলেছে পাহাড়ি ছাত্রীদের প্যানেল ‘হৃদ্যতার বন্ধন’। প্যানেলের ভিপি পদে আছেন নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী প্রমিতা চাকমা। জিএস পদে পালি বিভাগের সিংঞোইউ মারমা ও এজিএস পদে ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মে থুই চিৎ খেয়াং প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
প্রমিতা চাকমা বলেন, ‘আমাদের হল নতুন হওয়ায় অনেক সংস্কার প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যেই পূর্ণাঙ্গ প্যানেল নিয়ে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।’
মনোনয়নপত্র জমা নেওয়া শুরু আজ থেকে। জমা দেওয়ার শেষ সময় ১৭ সেপ্টেম্বর বুধবার পর্যন্ত। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর। কেন্দ্রীয় সংসদের ফরমের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০০ টাকা, আর হল সংসদের জন্য ২০০ টাকা।
চাকসু ও হল সংসদ আচরণবিধি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমার সময় কোনো মিছিল-শোভাযাত্রা করা যাবে না এবং পাঁচজনের বেশি সমর্থক নেওয়া যাবে না।
চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১২ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। ভোট শেষে শুরু হবে গণনা। সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। এবার ৩৫ বছর পর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স প ট ম বর জন প র ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫