বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণ তিন বছর পেছানোর চেষ্টা করছে সরকার। তবে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ কম। কারণ, ভারত, যুক্তরাষ্ট্রসহ বন্ধুরাষ্ট্র এটির বিরোধিতা করছে বলে তিনি জানান।

বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান র‍্যাপিড আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ও এলডিসি উত্তরণবিষয়ক কর্মশালায় এ কথা বলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।

২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণ হবে। তবে দেশের ব্যবসায়ীরা প্রস্তুতির অভাব আছে এমন কারণ দেখিয়ে এলডিসি উত্তরণ আরও ৫-৬ বছর পিছিয়ে দেওয়ার দাবি করছেন।

আজকের অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান আরও বলেন, ‘এলডিসি থেকে উত্তরণ পেছানোর বিষয়টি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অনুমোদনের ওপর নির্ভর করে। আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোই এটির বিরোধিতা করছে। যেমন জাপান, তুরস্ক, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র। তাহলে আপনি কীভাবে পেছানোর বিষয়টি অনুমোদন করাবেন? ফলে তাদের কাছ থেকে আমরা কারিগরি সহায়তা নেওয়ার চেষ্টা করছি।’

বাণিজ্যসচিব আরও বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ তিন বছর পেছাতে আমরা কাজ করছি। বিশেষজ্ঞদের মতামত নিচ্ছি। চেষ্টার কোনো ত্রুটি করব না। মূলত বাণিজ্য সুবিধা আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার চেষ্টা চলছে। তবে আশাবাদী হওয়ার সুযোগ কম। আবার একেবারে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।

কর্মশালায় একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন র‍্যাপিড চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক। তিনি বলেন, পাল্টা শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আগামী এক বছরে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি ১৪ শতাংশ কমতে পারে। একইভাবে এই বাজারে প্রতিযোগী দেশগুলোর পণ্য রপ্তানি কমবে। তার মধ্যে চীনের ৫৮ শতাংশ, ভারতের ৪৮, ভিয়েতনামের ২৮ ও ইন্দোনেশিয়ার ২৭ শতাংশ পণ্য রপ্তানি কমতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ব ণ জ যসচ ব এলড স

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ