উড়োজাহাজ ভ্রমণে বেশির ভাগেরই জানালার পাশের আসনটি পছন্দ। ভ্রমণকালে উড়োজাহাজের জানালায় একটু মনোযোগ দিলে আপনারও চোখে পড়বে ছোট্ট একটি ছিদ্র। একে বলে ‘ব্লিড হোল’ বা ‘ব্রিদার হোল’। কিন্তু কেন থাকে এই ছিদ্র?

জানালার নিচের দিকের এই ছিদ্র কেবল নকশার কারণে রাখা হয় না। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে উড়োজাহাজের নিরাপত্তাও। উড়োজাহাজের ভেতরে ও বাইরে বায়ুর চাপ থাকে আলাদা। যাত্রীদের কেবিনের ভেতরে বায়ুর চাপ বেশি এবং বাইরে কম।

ফলে উড়োজাহাজের জানালাকে অনেক চাপ সহ্য করতে হয়। আর এটা জানালার নকশা করার সময় মাথায় রাখা হয়। জানালার এই ছিদ্র বায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

উড়োজাহাজের জানালাগুলো অ্যাক্রিলিকের তিনটি স্তর দিয়ে তৈরি। কেবিনের দিক থেকে প্রথম স্তরটি ময়লা এবং দাগ থেকে যাত্রীকে সুরক্ষা দেয়। এরপর থাকে মাঝের স্তর। এই স্তরেই থাকে ব্রিদার হোল। সবশেষে থাকে বাইরের স্তর। এই স্তরটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ; কারণ, এটাকেই বাতাসের চাপ সবচেয়ে বেশি সহ্য করতে হয়। বাইরের এবং মাঝের স্তরটির মধ্যবর্তী জায়গা বাতাসে পূর্ণ থাকে।

ব্রিদার হোলের কাজকে প্রকৌশলীরা হাতুড়ির সঙ্গে তুলনা করেন। হাতুড়ি যেমন সজোরে ফেললে বেশি আঘাত লাগে এবং ধীরে ফেললে কম, এটিও তেমন। ছোট ছিদ্রটির কারণে বাতাসের চাপ সজোরে জানালার বাইরের স্তরে আঘাত করে না। এটি ধীরে ধীরে চাপ ছড়িয়ে দেয়, ফলে চাপের প্রভাব কমে যায়।

আরও পড়ুনবিশ্ব রেকর্ড গড়তে এই মাসেই বিমান থেকে লাফ দেবেন বাংলাদেশের আশিক২১ মে ২০২৪

আবার ছিদ্রটি উড়োজাহাজের বাইরের দৃশ্য উপভোগের জন্যও জরুরি। অধিক উচ্চতায় উড়োজাহাজের বাইরের আবহাওয়া থাকে অত্যধিক শীতল। ফলে জানালার কাচটিও ঠান্ডা হয়ে যায়। ভেতরে যাত্রীদের নিশ্বাসের আর্দ্রতা (বাতাসে থাকা জলীয় বাষ্পের পরিমাণ) ঠান্ডা কাচের সংস্পর্শে এসে পানির ফোঁটা তৈরি করতে পারে। ছিদ্রটি থাকায় জানালার কাচে এই পানির ফোঁটা তৈরি হয় না। ফলে জানালা ঝাপসা হওয়া থেকে রক্ষা পায় এবং আপনি বাইরের পরিষ্কার দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।

ছিদ্র না থাকলে কী হতোছিদ্রগুলো না থাকলে উড়োজাহাজের জানালার কাচ ঘোলা হয়ে যেত.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স তর

এছাড়াও পড়ুন:

অন্য ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক আছে-এমন সন্দেহে স্ত্রীকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে লাশ রাখেন নজরুল

স্ত্রী তাসলিমা আক্তারের সঙ্গে নজরুল ইসলামের দীর্ঘদিন ধরে কলহ চলছিল। অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে তাসলিমার সম্পর্ক আছে বলে সন্দেহ করতেন নজরুল। তিনি আরও সন্দেহ করছিলেন, তাঁর সম্পত্তি হাতিয়ে নিতে পারেন তাসলিমা। এই দুই সন্দেহ থেকে নজরুল তাঁর স্ত্রী তাসলিমাকে হত্যা করেন। লাশ ডিপ ফ্রিজে রাখেন।

রাজধানীর কলাবাগানে তাসলিমা হত্যা মামলায় তাঁর স্বামী নজরুলকে গ্রেপ্তারের পর আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় পুলিশ। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বংশালের নবাবপুর রোড এলাকায় অভিযান চালিয়ে নজরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর নজরুলকে প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি উল্লিখিত তথ্য দিয়েছেন।

নজরুল-তাসলিমা দম্পতি কলাবাগান এলাকার একটি বাড়ির এক দুই সন্তান নিয়ে থাকতেন। ডিসি মাসুদ আলম বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে নজরুল বলেছেন, তাসলিমাকে সন্দেহ করতেন তিনি। অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে তাসলিমার সম্পর্ক আছে বলে তিনি সন্দেহ করছিলেন। তাঁর সম্পত্তি স্ত্রী হাতিয়ে নিতে পারেন, এমন সন্দেহও কাজ করছিল। এই সন্দেহ থেকে তিনি স্ত্রীকে প্রতিনিয়ত মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেন। গত রোববার রাতে বাসায় ফিরে নজরুল দেখেন, ফ্ল্যাটের দরজার তিনটি লকের মধ্যে দুটি খোলা। সন্দেহ থেকে তিনি উত্তেজিত হন। দিবাগত রাত ১২টার দিকে তিনি ঘুমন্ত স্ত্রীকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেন। লাশ গামছা দিয়ে বেঁধে, বিছানার চাদর ও ওড়না দিয়ে মুড়িয়ে বাসার ডিপ ফ্রিজে লুকিয়ে রাখেন। রক্তমাখা তোশক উল্টিয়ে, মেঝে পরিষ্কার করে, নিজের জামাকাপড় ধুয়ে আলামত গোপনের চেষ্টা করেন।

আরও পড়ুনডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় পলাতক স্বামী গ্রেপ্তার২ ঘণ্টা আগে

ডিসি মাসুদ আলম বলেন, পরদিন সকালে নজরুল বড় মেয়েকে জানান, তাঁর মা অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে পালিয়ে গেছেন। এ সময় বড় মেয়ে ঘরের দেয়ালে রক্তের দাগ দেখতে পায়। এরপর নজরুল তাঁর দুই মেয়েকে নানার বাড়ি রেখে আসার কথা বলেন। কিন্তু তিনি মেয়েদের নিয়ে যান রাজধানীর আদাবরে তাঁদের ফুফুর বাসায়। মেয়েদের রেখে নজরুল প্রাইভেটকারে পালিয়ে যান। সন্দেহ হলে তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম হোসেনসহ এই দম্পতির দুই মেয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় কলাবাগান থানায় অভিযোগ দেয়।

আরও পড়ুনডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর লাশ উদ্ধার: দাম্পত্য কলহের জেরে হত্যা, ধারণা পুলিশের১৮ ঘণ্টা আগে

অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কলাবাগান থানা-পুলিশের একটি দল ফ্ল্যাটটিতে যায় বলে জানান ডিসি মাসুদ আলম। তিনি বলেন, পুলিশ দরজার তালা ভেঙে ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে। একপর্যায়ে ডিপ ফ্রিজের খোলে তারা। ফ্রিজের ওপরের দিকে থাকা মাছ-মাংস সরালে চাদর দিয়ে প্যাঁচানো অবস্থায় তাসলিমার লাশ পাওয়া যায়।

এই ঘটনায় গত সোমবার রাতে তাসলিমার ছোট ভাই নাঈম বাদী হয়ে কলাবাগান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সংবাদ সম্মেলন জানানো হয়, মামলার পর পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে। গোয়েন্দা তথ্যসহ প্রযুক্তির সহায়তায় কলাবাগান থানা-পুলিশ নজরুলের অবস্থান শনাক্ত করে তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

আরও পড়ুনকলাবাগানে ডিপ ফ্রিজ থেকে নারীর মরদেহ উদ্ধার, স্বামী পলাতক১৩ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ