তিশার বিরুদ্ধে ভারতীয় প্রযোজকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ
Published: 23rd, November 2025 GMT
দেশের আলোচিত অভিনেত্রী তানজিন তিশা; অভিনয়শৈলীর চেয়ে নানা বিতর্কের কারণে অধিক আলোচনায় রয়েছে। কয়েকদিন আগে অনলাইনভিত্তিক একটি ফ্যাশন হাউজ তার বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা করে। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে এলো আরো গুরুতর অভিযোগ—অর্থ আত্মসাৎ ও চরম অপেশাদার আচরণের।
কলকাতার সিনেমা ‘ভালোবাসার মরশুম’–এ অভিনয়ের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে মোটা অঙ্কের অগ্রিম পারিশ্রমিক নেওয়ার পর কাজ না করেই সেই টাকা ফেরত দিচ্ছেন না—এমনই অভিযোগ সিনেমাটির প্রযোজক শরীফ খানের। শেষ মুহূর্তে তিশা ‘ভিসা জটিলতার’ কথা বলে সিনেমা থেকে সরে দাঁড়ান। কিন্তু অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য।
আরো পড়ুন:
‘সোলজার’-এ শাকিবের বিপরীতে তানজিন তিশার ফার্স্টলুক প্রকাশ
নায়িকা তিশার বিরুদ্ধে মামলা
এ বিষয়ে প্রযোজক শরীফ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিশার অসহযোগিতা ও বারবার মিথ্যা বলার কারণে বাধ্য হয়ে তাকে সিনেমা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাদ পড়ার পরও তিনি অগ্রিম টাকা ফেরত দিচ্ছেন না।
তিনি বলেন, “প্রথমে ৩০ হাজার রুপি অগ্রিম দিই। পরে তার বোনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বাংলাদেশি ৪ লাখ ১২ হাজার টাকা পাঠানো হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় গড়িমসি।”
প্রযোজক অভিযোগ করেন, ভিসা স্লট, শুটিং শিডিউলসহ সবকিছু ঠিকঠাক করার পর স্লট ডেটের মাত্র দুই দিন আগে তিশা জানান—তিনি যেতে পারবেন না। তিনি বলেন, “ভারতের ভিসা স্লট পাওয়া কত কঠিন, তা সবার জানা। বহু ঝামেলা করে স্লট নেওয়ার পর তিনি এমন সিদ্ধান্ত জানান—যা ছিল মারাত্মক ক্ষতিকর।”
তিশার সিদ্ধান্তে শুটিং শিডিউল থেকে শুরু করে লোকেশন বুকিং—সবকিছুই এলোমেলো হয়ে যায়। এতে বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়তে হয় প্রযোজককে। পরিস্থিতি আরো জটিল হয়, যখন তিশা শাকিব খানের ‘সোলজার’ সিনেমায় যুক্ত হয়ে কলকাতার শুটিং পিছিয়ে দিতে চান।
প্রযোজক বলেন, “তিনি ফোন দিয়ে বলেন কলকাতার কাজ এক–দুই মাস পিছিয়ে দিতে। তখনই আমি তাকে জানাই—এ সিনেমায় আর কাজ করতে হবে না। শুধু টাকাটা ফেরত দাও।” কিন্তু এরপর থেকেই তিশা নীরব—অগ্রিম টাকা ফেরত দিচ্ছেন না বলেও দাবি তার।
এই সিনেমায় অভিনেতা খায়রুল বাসারেরও অভিনয় করার কথা ছিল। এ বিষয়ে প্রযোজক বলেন, “চরিত্রটি তার সঙ্গে যাবে না মনে করে বাসার নিজেই সরে দাঁড়ান এবং সঙ্গে সঙ্গে অগ্রিম টাকা ফেরত দেন। কোনো টালবাহানা করেননি।”
তিশাকে বাদ দিয়ে সিনেমাটিতে নেওয়া হয়েছে উড়িষ্যার জনপ্রিয় অভিনেত্রী শিবানী সঙ্গীতাকে।
পরপর এমন অভিযোগ ওঠায় তানজিন তিশার পেশাদারিত্ব ও বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ইন্ডাস্ট্রির একাংশ। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিশাকে পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
ভূমিকম্পে মৃত্যু: নরসিংদীর নাসির ‘আমাকে ধর’ বলতে বলতে লুটিয়ে পড়েন
গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ধানের জমি দেখভাল করে বাড়িতে ফিরেছিলেন নাসির উদ্দীন (৬৫)। ঘরে বসে তিনি স্ত্রী মসলিনা বেগম, পুত্রবধূ রুখসানা বেগম ও নাতনি মিশু আক্তারের সঙ্গে গল্প করছিলেন। হঠাৎ সবকিছু কাঁপতে শুরু করলে তাঁরা ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। বাড়ির আঙিনায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাঁচ মিনিট পর তাঁর মাথা চক্কর দেয়। বুকে হাত দিয়ে ‘আমাকে ধর’ বলতে বলতে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
গতকাল ভূমিকম্পের সময় নরসিংদীর পলাশ উপজেলার কাজীরচর গ্রামের নাসির উদ্দীনের মৃত্যুর ঘটনা এভাবেই বলছিলেন তাঁর পুত্রবধূ রুখসানা বেগম।
রুখসানা বেগম বলেন, ‘ভূমিকম্পের আগে বাড়ির পাশের দোকান থেকে শ্বশুর পান কিনে আনেন। ওই পান খেতে খেতে আমাদের সঙ্গে গল্প করেন। ঝাঁকুনি শুরু হলে আমরা সবাই ঘর থেকে বেরিয়ে উঠানে আসি। ওই সময় তিনি খুঁড়িয়ে হাঁটছিলেন। বলছিলেন, এমন ভূমিকম্প জীবনে কখনো দেখেননি।’
পরিবারের সদস্যরা জানান, মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর সবাই নাসিরের মাথায় পানি দিতে থাকেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশী কয়েকজন এগিয়ে আসেন। সবাই মিলে তাঁকে দ্রুত কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর তাঁর লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন তাঁরা।
নাসিরের নাতনি মিশু আক্তার জানান, ভূমিকম্পে হঠাৎ সবকিছু যখন কাঁপছিল, ভয়ে-আতঙ্কে অসুস্থবোধ করছিলেন তাঁর দাদা। এরপর তিনি মাটিতে পড়ে যান।
শরীয়তপুরের নড়িয়া এলাকার একটি মসজিদের ইমাম নাসির উদ্দীনের ছেলে আয়নাল মিয়া। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। আয়নাল মিয়া বলেন, ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনি তাঁর বাবা সহ্য করতে পারেননি। সে সময় তিনি মারা যান। তবে তাঁদের ঘরবাড়ির কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
গতকাল রাত আটটার দিকে স্থানীয় ঈদগাহে নাসির উদ্দীনের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পাশের সামাজিক কবরস্থানে তাঁর লাশের দাফন সম্পন্ন হয়।