পুলিশ ভেরিফিকেশন অবশ্যই ন্যায্য ও নিরপেক্ষ হতে হবে: হাইকোর্ট
Published: 17th, October 2025 GMT
পুলিশ ভেরিফিকেশন (যাচাই) ও জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) প্রতিবেদনগুলো অবশ্যই ন্যায্য, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য উপকরণের ভিত্তিতে হতে হবে বলে এক রায়ে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট। কারারক্ষী পদে নিয়োগবঞ্চিত ২৬ প্রার্থীর করা পৃথক দুটি রিট আবেদনে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে এমন পর্যবেক্ষণ আসে।
আলাদা এই দুই রিট আবেদনের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি মো.
পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন (যাচাই) ও এনএসআই রিপোর্টগুলো অবশ্যই ন্যায্য, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য উপকরণের ভিত্তিতে হতে হবে; প্রয়োজনে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও আদালত যাতে পরীক্ষা করতে পারেন। এ ধরনের বৈরী প্রতিবেদনের কারণে যেসব ব্যক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন, তাঁদের অবশ্যই জানাতে হবে, এর বিরোধিতা করার জন্য একইভাবে তাঁদের পর্যাপ্ত এবং উপযুক্ত সুযোগ দিতে হবে। চূড়ান্ত নির্বাচনের (প্রার্থী নির্বাচন) আগে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের মাধ্যমেই এসব সম্পন্ন করতে হবে।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, পুলিশ ভেরিফিকেশন (যাচাই) ও এনএসআই রিপোর্টগুলো অবশ্যই ন্যায্য, নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য উপকরণের ভিত্তিতে হতে হবে; প্রয়োজনে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ ও আদালত যাতে পরীক্ষা করতে পারেন।এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে চলতি বছরের ১৫ প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ সংস্কার কমিশন। এই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি চাকরিপ্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশন পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চের (এসবি) মাধ্যমে হয়ে থাকে। পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয়ে দীর্ঘসূত্রতার কারণে চাকরিপ্রার্থীরা অহেতুক বিড়ম্বনার শিকার হন। স্থায়ী ঠিকানাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে অনেক চাকরিপ্রার্থী চাকরির উপযুক্ততা প্রমাণে জটিলতার সম্মুখীন হন। চাকরিপ্রার্থীর অধ্যয়ন করা একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাগত যোগ্যতা যাচাই-বাছাই করাও দীর্ঘসূত্রতার একটি অন্যতম কারণ ও পুলিশের জন্য সময়সাপেক্ষ বিষয়।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশচাকরিপ্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়া সহজ করার লক্ষ্যে কয়েকটি সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। সুপারিশে বলা হয়, জাতীয় পরিচয়পত্রধারী (এনআইডি) চাকরিপ্রার্থীদের স্থায়ী ঠিকানা অনুসন্ধানের বাধ্যবাধকতা বাদ দেওয়া যেতে পারে। চাকরিপ্রার্থীর বিভিন্ন শিক্ষাগত যোগ্যতা/ শিক্ষাসনদ/ ট্রান্সক্রিপ্ট/ মার্কশিট ইত্যাদি যাচাই-বাছাই করার দায়দায়িত্ব নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তাবে। এগুলো পুলিশ ভেরিফিকেশনের অংশ হবে না।
পুলিশ সংস্কার কমিশনের সুপারিশে বলা হয়েছে, চাকরির জন্য সব পুলিশ ভেরিফিকেশন সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে এবং অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ ১৫ দিন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে।পুলিশ ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীর রাজনৈতিক মতাদর্শ যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজনীয়তা রহিত করাসহ এ–সংশ্লিষ্ট বিধিমালা সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছে কমিশন।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাকরিপ্রার্থী বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতা-সংক্রান্ত কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত কি না, তা ভেরিফিকেশন রিপোর্টে প্রতিফলিত করতে হবে। চাকরির জন্য সব পুলিশ ভেরিফিকেশন সর্বোচ্চ এক মাসের মধ্যে সমাপ্ত করতে হবে এবং অতিরিক্ত সময়ের প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ ১৫ দিন পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করা যেতে পারে বলে সুপারিশে বলা হয়েছে।
মামলার পূর্বাপরমামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, কারারক্ষী ও নারী কারারক্ষী পদে নিয়োগের জন্য ২০২৩ সালের ২১ জুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কারা কর্তৃপক্ষ। এ অনুসারে রিট আবেদনকারীরা আবেদন করেন। লিখিত ও স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হন তাঁরা। গত বছর ফলাফল প্রকাশিত হয়। এরপর তাঁরা মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে যোগ্য বলে বিবেচিত হন এবং অন্য প্রার্থীদের সঙ্গে তাঁরাও চূড়ান্তভাবে মনোনীত হন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পরবর্তী সময়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়।
রিট আবেদনকারীসহ কয়েকজন নিয়োগপত্র না পেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি আবেদন করেন। কারারক্ষী পদে নিয়োগপত্র দেওয়া–সংক্রান্ত এ আবেদনে বলা হয়, কারা অধিদপ্তরের ২০২৪ সালের ১১ জুলাইয়ের এক স্মারকে কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী পদে ৫৬৯ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীকালে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য ফরম জমা নেওয়া হয় একই বছরের ১৩ আগস্ট। প্রথমে এসবি দিয়ে তদন্ত হয়, পরে এনএসআই দিয়ে তদন্ত করা হয়। ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে একই বছরের ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আট ধাপে ওয়েবসাইটে নির্বাচিতদের ক্রমিক নম্বর প্রকাশ করা হয়। ৫৬৯ জনের মধ্যে ৫২১ জন নিয়োগপত্র পেয়ে রাজশাহী প্রশিক্ষণকেন্দ্রে যোগদান করেন। বাকি ৪৮ জনকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়নি।
নিয়োগপত্র পেতে সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর করা ওই আবেদনে বলা হয়, তাঁদের (আবেদনকারীদের) পরিবারের কোনো সদস্য রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত নন। তাঁদের শিক্ষাজীবনে কোনো ধরনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই, এমনকি পরিবারের কারও সংশ্লিষ্টতা নেই। তাঁদের (আবেদনকারীদের) বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধসংক্রান্ত কোনো মামলা নেই।
আবেদনের পর দৃশ্যমান পদক্ষেপ না দেখে নিয়োগপ্রত্যাশী মো. শাহীন মিয়াসহ ২৫ জন প্রার্থী একটি এবং মো. মেহেদী হাসান নামের এক প্রার্থী আরেকটি রিট আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট রুল দেন।
রুল শুনানিতে কারা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য ছিল, চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত কারারক্ষী পদে ৫৫৪ জন ও মহিলা কারারক্ষী পদে ১৫ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬ জন কারারক্ষী ও ২ জন মহিলা কারারক্ষীর পুলিশ ও এনএসআই ভেরিফিকেশন প্রতিবেদন জমা হয়নি। ৪৩ জন প্রার্থীর পুলিশ ও এনএসআই প্রতিবেদনের যেকোনো একটিতে অথবা উভয়টিতে বিরূপ মন্তব্য থাকায় তাঁদেরও নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি। এই ৪৩ প্রার্থীর মধ্যে রিট আবেদনকারী ২৬ জনও অন্তর্ভুক্ত।
চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল অ্যাবসলিউট (যথাযথ) ঘোষণা করে ৩ সেপ্টেম্বর রায় দেন হাইকোর্ট। রিট আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে পুলিশ ও এনএসআইয়ের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পূর্ণাঙ্গ রায়ে আদালত বলেছেন, ‘“বিরূপ মন্তব্য নাই” বলে পুলিশ ভেরিফিকেশনে এবং “সার্বিক বিবেচনায় বিষয়ব্যক্তি সম্পর্কে আপত্তি জ্ঞাপন করা যেতে পারে” বলে এনএসআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আমরা দেখছি এনএসআই তাদের প্রতিবেদনে “সার্বিক বিবেচনায় বিষয়ব্যক্তি সম্পর্কে আপত্তি জ্ঞাপন করা যেতে পারে”—যান্ত্রিকভাবে লিপিবদ্ধ করেছে। প্রতিবেদনের পক্ষে কোনো ভিত্তি উল্লেখ করেনি। আদালতের সামনে এমন কোনো উপাদান উপস্থাপন করা হয়নি, যার মাধ্যমে প্রতিবেদনের সত্যতা বা যথার্থতা যাচাই করা যেতে পারে।’
এদিকে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে সরকারপক্ষ ও কারা কর্তৃপক্ষ পৃথক আবেদন করে, যা গত ২২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন চেম্বার আদালত বিষয়টি ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত স্ট্যান্ডওভার (মুলতবি) করেন।
হাইকোর্টে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ সিরাজুম মুনীর ও মো. উজ্জ্বল হোসেন শুনানিতে ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আরশাদুর রউফ ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ ওয়ালিউল ইসলাম ওলি।
১৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় ৬ অক্টোবর হাতে পেয়েছেন বলে জানান রিট আবেদনকারীদের অন্যতম আইনজীবী মো. উজ্জ্বল হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনে তাঁদের কারও বিরুদ্ধে ফৌজদারি কোনো অপরাধ বা অন্য কোনো অযোগ্যতার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আইন অনুসারে সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশনই যথেষ্ট। অথচ দেখা যাচ্ছে, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মৌখিক নির্দেশনায় এনএসআই নিয়ে আবার ভেরিফিকেশন করা হয়। এতে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ উল্লেখ ছাড়াই প্রত্যেকের ক্ষেত্রে ‘সার্বিক বিবেচনায় বিষয়ব্যক্তি সম্পর্কে আপত্তি জ্ঞাপন করা যেতে পারে’ বলে একই ধরনের মন্তব্য করা হয়েছে। যে কারণে তাঁরা নিয়োগবঞ্চিত হন। এটি সংবিধানের ২৭, ২৯ ও ৪০ অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ, তাই নিয়োগের নির্দেশনা চেয়ে পৃথক রিট করেন আবেদনকারীরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর প র র থ র ও এনএসআই ন য় গপত র ম হ ম মদ ক র রক ষ চ কর র র র জন ন কর ন প রক শ পর ক ষ র জন য ত সময় সরক র বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
ক্ষমতায় যেতে কেউ তাড়াহুড়া করবেন না: মামুনুল হক
রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় সংস্কার না এনে নির্বাচন হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না বলে সতর্ক করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে মামুনুল হক বলেছেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য কেউ তাড়াহুড়া করবেন না। মাত্র এক বছরের ব্যবধানে যদি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনাকে ভুলে যান, তাহলে জনগণও আপনাদের ভুলে যাবে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতা কাউকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য রক্ত দেয়নি; তারা বৈষম্য, অনাচার ও অবিচার দূর করার জন্য জীবন বাজি রেখেছিল।’
আজ শনিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের মাসিক বৈঠকে এ কথা বলেন মামুনুল হক।
মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ কিংবা ১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির মতো নির্বাচনে জনগণ আর যাবে না। রাষ্ট্রীয় কাঠামোর সংস্কার ছাড়া জনগণের কাছে আর কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে সংসদ নির্বাচনের আগে গণভোটের আয়োজন নিশ্চিত করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল আগামী ১১ নভেম্বর জনসভার যে যুগপৎ কর্মসূচি দিয়েছে, তা সফল করতে সবার প্রতি আহ্বানও জানান খেলাফত মজলিসের আমির।
গণভোট আগে করার বিরোধিতা নিয়ে মামুনুল হক বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধানের ভিত্তিতেই শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদের পথে এগিয়েছে। চব্বিশের বিপ্লবের পর বাহাত্তরের সংবিধানের দোহাই দিয়ে যারা সংস্কারকে অপাঙ্ক্তেয় করতে চায়, তারা মূলত জনগণের ভয়েই প্রকাশ্যে “সংস্কার চায় না” বলতে পারে না। জনগণকে বোকা ভাববেন না। শেখ হাসিনাও সংবিধানের কথা বলত এবং জনগণকে শোষণ করত। জনগণ তার বিচার করেছে, দেশ থেকে তাকে বের করে দিয়ে।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদসহ বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, নায়েবে আমির মাওলানা আফজালুর রহমান, মাওলানা রেজাউল করীম জালালী, মুফতি সাঈদ নূর, মাওলানা মুহিউদ্দীন রব্বানী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মুফতি শরাফত হোসাইন ও মাওলানা শরীফ সাইদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।