পূর্ব ঘটনার দ্বন্দ্বের জেরে চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে এক স্কুলছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলা সদরের পুরোনো পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তবে কী কারণে এ দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয়েছিল, তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।

নিহত ওই শিক্ষার্থীর নাম মুহাম্মদ তানভীর (১৪) । সে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মুন্সিপাড়ার এলাকার প্রবাসী আবদুল বারেকের ছেলে। সে স্থানীয় আলিপুর রহমানিয়া স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারের সূত্র জানায়, চলতি ১৫ অক্টোবর স্থানীয় বাজারে স্কুলছাত্রদের দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছিল। নিহত তানভীরসহ কয়েকজন সেদিন এ মারামারি থামাতে যায়। এ সময় একটি পক্ষের সঙ্গে তানভীরের তর্কাতর্কি হয়। এর জেরে দুপুরে স্কুলের টিফিনের ছুটিতে তানভীর স্কুল থেকে বের হলে ১০ থেকে ১২ জন তাকে মারধর করে। এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানেই সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয়।

জানতে চাইলে আলিপুর রহমানিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, কিছুদিন আগে স্কুলে কয়েকজন শিক্ষার্থীর মধ্যে সৃষ্ট বিরোধ মেটানোর চেষ্টায় তানভীর অংশ নেয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে একপক্ষ তানভীরের ওপর হামলা করেছে। এতে গুরুতর আহত হয়ে সে মারা যায়।

জানতে চাইলে হাটহাজারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) তারেক আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, স্কুলছাত্রদের দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা থেকে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পুলিশ এ ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।

উল্লেখ্য, হাটহাজারী হত্যা ও হামলার ঘটনা প্রথম নয়। চলতি মাসেই আরও দুবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। চলতি ১৪ অক্টোবর উপজেলার চৌধুরীহাটে বাজারে প্রকাশ্যে একদল যুবক ছুরিকাঘাতে ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি অপু দাশ (৩০) ও ছাত্রদলের কর্মী মুহাম্মদ তানিমকে (২৫) হত্যা করেন। এর আগে ৮ অক্টোবর উপজেলার মদুনাঘাট পুলিশ ফাঁড়ির কাছে রাউজানের এক বিএনপি কর্মীকে প্রকাশ্যে সড়কে গুলি করে হত্যা করা হয়। স্বজনেরা জানান, ওই দুটি হত্যাকাণ্ডের মূল আসামিদের এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ কারণে তাঁরা বিচারহীনতায় ভুগছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাতে উত্তাল বুয়েট: দাবির মুখে এক শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার

এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত উত্তাল ছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ক্যাম্পাস। বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

পরে রাতে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক (ডিএসডব্লিউ) অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি বহিষ্কার আদেশ জারি করেছে। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়কে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

তবে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা এই ঘোষণা শোনার পর ‘না না’ বলে ওঠেন। তাঁরা ওই শিক্ষার্থীর স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি তোলেন। তখন অধ্যাপক এ কে এম মাসুদ বলেন, ‘স্থায়ীভাবে ছাত্রত্ব বাতিল করার ক্ষমতা আমার নেই, আমি উপাচার্যের নির্দেশক্রমে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে তাঁর নামে মামলা করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে এবং তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘যদিও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মামলা করার কথা, তবে আমরা ছাত্রদের কথা বিবেচনায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেই মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

উল্লেখ্য, বুয়েট ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ