চট্টগ্রামে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) কার্যালয় ভাঙচুর ও দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। আজ বুধবার এ নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির নেতারা বলেন, কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা যাতায়াত করতেন। কার্যক্রমও চলত। প্রশাসন এ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়নি। স্থানীয় লোকজনের আহ্বানে এনসিপির নেতা-কর্মীরা ওই কার্যালয়ে যান।

আজ বিকেল সাড়ে পাঁচটায় নগরের বিপ্লব উদ্যানে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এনসিপির চট্টগ্রাম নগর সমন্বয় কমিটি। এতে বক্তব্য দেন এনসিপি চট্টগ্রাম নগরের যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফ মঈনুদ্দিন ও মোহাম্মদ এরফানুল হক। উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সমন্বয়কারী মো.

রাফসান জানি ও মো. জসিম উদ্দিন। এ ছাড়া কমিটির সদস্য, সংগঠক ও থানা পর্যায়ের কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।

এনসিপি নেতা আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘গত বছরের ৫ আগস্টের পর চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগের অফিসগুলো পরিত্যক্ত ছিল। কিন্তু দুই মাস ধরে খবর পাচ্ছি অফিসগুলোতে কার্যক্রম চলছে, দরজা-জানালা লাগানো হচ্ছে, লোকজন আসা-যাওয়া করছে। আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রশাসন ব্যবস্থা নেয়নি।’

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নগরের নিউমার্কেটের দোস্ত বিল্ডিংয়ে অবস্থিত আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার কার্যালয় দখল ও ভাঙচুর করেন একদল তরুণ। এর নেতৃত্ব দেন এনসিপি নেতা আরিফ মঈনুদ্দিন। তাঁর সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও কর্মীরাও ছিলেন।

ভাঙচুরের বিষয়ে যুগ্ম সমন্বয়কারী মোহাম্মদ এরফানুল হক বলেন, আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হলেও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড থেমে নেই। ওই ভবন আওয়ামী লীগ বিনা ভাড়ায় দখল করে ছিল। পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন অপকর্ম পরিচালনা করা হতো।

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ভাঙচুরের অভিযোগ প্রশ্নে যুগ্ম সমন্বয়কারী আরিফ মঈনুদ্দিন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু অবশ্যই স্বাধীনতার একজন অন্যতম স্থপতি। কিন্তু গত ১৬ বছরে শেখ মুজিবকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে মানুষের ক্ষোভ আছে। সেখানে ছাত্র–জনতা ম্যুরাল ভাঙচুর করে। আমরা সেখানে শুধু সেটআপটা নষ্ট করে দিয়েছি, দখল করিনি।’

আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় দখলে নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একদল তরুণ কার্যালয়ের সামনের দেয়ালে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর করছেন। এতে আরিফ মঈনুদ্দিনসহ এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের দেখা গেছে।

আজ বিকেলে ওই ভবনে গিয়ে দেখা যায়, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের দুটি কক্ষেই তালা দেওয়া। তালা দুটি নতুন। সেখানে কাউকে দেখা যায়নি। আগের দিন রাতে কার্যালয়ের সামনে চেয়ার-টেবিল রাখা হলেও তা আর দেখা যায়নি।

কার্যালয়ের পাশের একটি কক্ষে থাকেন দোকান কর্মচারী আবদুল লতিফ। তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টায় ঘুমিয়ে যাওয়ার সময়েও অনেকজন ছিল। তাঁরা আড্ডা ও গল্পগুজব করছিলেন। তবে সকালে ঘুম থেকে উঠে আর কাউকে দেখেননি। সারা দিন তালা দেওয়া ছিল।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য গ ম সমন বয়ক র এনস প র কর ম র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অ্যামনেস্টি

গুম–নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে সেনাবাহিনীর ১৫ কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করার বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে লন্ডনভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিগত সরকারের আমলে এসব অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ করা হচ্ছে।

আজ বুধবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল দক্ষিণ এশিয়ার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়, বাংলাদেশে গুমের ঘটনায় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযুক্ত করার এটিই প্রথম উদাহরণ। ভুক্তভোগীদের জন্য জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার পথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

এই বিচারিক প্রক্রিয়াজুড়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের মানদণ্ড পুরোপুরি মেনে চলার ওপর জোর দিয়েছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এর মধ্যে রয়েছে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া ও সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তা বিধান করা, বিচার কার্যক্রম বেসামরিক আদালতে পরিচালনা করা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা অনুসারে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া থেকে বিরত থাকা।

মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক তিন মামলায় সাবেক-বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৩২ আসামির বিরুদ্ধে সম্প্রতি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তাঁদের মধ্যে কর্মরত ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।

আরও পড়ুন১৫ সেনা কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ট্রাইব্যুনালের১৩ ঘণ্টা আগে

এ ছাড়া ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক-বর্তমান ১০ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদার নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১।

মামলা তিনটির মধ্যে দুটি বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনার। অন্যটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।

আরও পড়ুনসাবেক-বর্তমান ১০ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ আসামিকে হাজির হতে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ৮ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ