জুয়ার বিজ্ঞাপন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। রবিবার (১৯ অক্টোবর) থেকে যদি কোনো সংবাদপত্র (অনলাইন ভার্সনসহ), নিউজ পোর্টাল, ইলেকট্রনিক মিডিয়া বা ওয়েবসাইটে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কনটেন্ট প্রচারিত হয় তবে বিনা নোটিশে সেই সাইট ব্লক করে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। 

শনিবার (১৮ অক্টোবর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন সাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জুয়া, বেটিং ও পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন ও প্রমোশনাল কনটেন্ট প্রচার করা হচ্ছে যা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২-এর পরিপন্থি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

এই ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার জন্য সরকার একাধিক প্রজ্ঞাপন ও প্রেস রিলিজ দিয়ে সবাইকে সতর্ক করেছে। সরকারের সতর্কতার পর এরইমধ্যে ক্রিকইনফোসহ কিছু পত্রিকা ও অনলাইন তাদের এডসেন্স পরিবর্তন করেছে উল্লেখ করে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ জানানো হয়। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার দেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্ম বান্ধব রাখতে সর্বোচ্চ সতর্কতা এবং কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখবে এবিষয়ে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ), জাতীয় টেলিযোগাযোগ পযবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই)  এবং বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যৌথভাবে কাজ করছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লেবাননে এক দশক ধরে বন্দী গাদ্দাফিপুত্রকে ১ কোটি ১০ লাখ ডলার জামিনে মুক্তির নির্দেশ

লেবাননের একজন বিচারক হানিবাল গাদ্দাফিকে জামিনে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন ও তাঁর ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন। হানিবাল লিবিয়ার নিহত নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির ছোট ছেলে। প্রায় এক দশক ধরে লেবাননে বিচারপূর্ব আটকাবস্থায় আছেন তিনি।

লেবাননের ন্যাশনাল নিউজ এজেন্সি গতকাল শুক্রবার খবর দিয়েছে, গাদ্দাফিকে জামিনে মুক্তির এ রায় মুসা আল-সদরের অপহরণ ও লিবিয়ায় নিখোঁজ হওয়ার মামলায় দেওয়া হয়েছে। আল-সদর লেবাননের প্রখ্যাত শিয়া নেতা ছিলেন।

গাদ্দাফির আইনজীবী লরাঁ ব্যায়ন এ রায়কে বিদ্রূপাত্মক বলে আখ্যায়িত করেছেন।

ব্যায়ন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রাখার মামলায় জামিনে মুক্তি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করব।’

এই আইনজীবী আরও বলেন, তাঁর মক্কেল ‘আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন’ এবং বড় অঙ্কের জামিনের অর্থ দিতে পারবেন না।

ব্যায়ন প্রশ্ন করেন, ‘আপনি চান, তিনি ১ কোটি ১০ লাখ ডলার কোথাও গিয়ে খুঁজে আনুক?’

লেবানন কর্তৃপক্ষ ২০১৫ সালে গাদ্দাফিপুত্রকে গ্রেপ্তার করে। তাদের অভিযোগ, তিনি ১৯৭৮ সালে লিবিয়ায় মুসা আল-সদরের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে তথ্য লুকিয়েছিলেন। এ মামলা আজও লেবাননের মানুষের কাছে ব্যাপক আগ্রহের বিষয় হয়ে আছে।

হানিবাল গাদ্দাফিকে জামিনে মুক্তির রায় মুসা আল-সদরের অপহরণ ও লিবিয়ায় নিখোঁজ হওয়ার মামলায় দেওয়া হয়েছে। মুসা আল-সদর লেবাননের প্রখ্যাত শিয়া নেতা ছিলেন।

মুসা আল-সদর যখন লিবীয় নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির সঙ্গে দেখা করতে যান, তখন লেবাননের একজন আদর্শিক নেতা ছিলেন তিনি।

আল-সদর ছিলেন আমাল আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, যা এখন লেবাননের শিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহর সঙ্গে জোটবদ্ধ রয়েছে। ওই সফরে নিখোঁজ হন তিনি। সফরে তাঁর সঙ্গে ছিলেন একজন সহকারী ও একজন সাংবাদিক। তবে সফরের পর থেকে তাঁদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।

আল-সদরের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা বহু বছর ধরে নানা অনুমান ও অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে আছে। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের উত্তেজনা এ ঘটনা থেকে শুরু। গাদ্দাফি ২০১১ সালে বিপ্লবের সময় উৎখাত ও নিহত হন।

লেবাননের পার্লামেন্টের স্পিকার নাবিহ বেরি আল-সদরের পর আমাল আন্দোলনের প্রধান হয়েছেন। লিবিয়ার নতুন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা আল-সদরের নিখোঁজ হওয়া বিষয়ে সহযোগিতা করছে না। তবে লিবিয়া এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রাখার মামলায় জামিনে মুক্তি মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করব। —লঁরা ব্যায়ন, হানিবাল গাদ্দাফির আইনজীবী

অনেকের মতে, আল-সদরের কী হয়েছে, তা জানতে হানিবাল গাদ্দাফিকে ২০১৫ সাল থেকে লেবাননে বিনা বিচারে আটক করে রাখা হয়েছে।

হানিবালের আইনজীবী বলেছেন, তাঁর মক্কেল এখন ৪৯ বছর বয়সী। এর মানে, আল-সদরের নিখোঁজ হওয়ার সময় তিনি মাত্র প্রায় দুই বছর বয়সী ছিলেন।

গতকালের ওই রায়ের পর আল-সদরের পরিবার একটি বিবৃতি দিয়েছে। তাতে হানিবালের মুক্তির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করা হয়। তবে বলেছে, তারা এ সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করবে না।

আরও পড়ুনলেবাননের কারাগারে কেন অনশনে গাদ্দাফির ছোট ছেলে০৯ জুন ২০২৩

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হানিবাল গাদ্দাফির গ্রেপ্তার বা মুক্তি আমাদের লক্ষ্য নয়। মূল বিষয় হলো, ইমাম আল-সদরের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার নিষ্পত্তি হওয়া।’

গত আগস্ট মাসে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লেবাননকে হানিবাল গাদ্দাফিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায়। মানবাধিকার সংগঠনটি বলেছে, তাঁকে ভুলবশত আটক করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য লুকানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

গত আগস্ট মাসে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ লেবাননকে হানিবাল গাদ্দাফিকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানায়। মানবাধিকার সংগঠনটি বলেছে, তাঁকে ভুলবশত আটক করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে তথ্য লুকানোর অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

গত সপ্তাহে হানিবালের স্বাস্থ্যের বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। বলা হয়, তিনি মানসিক চাপে ভুগছেন এবং পেটব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

আরও পড়ুনগাদ্দাফির ছেলে 'অপহরণের পর মুক্ত'১২ ডিসেম্বর ২০১৫

হানিবাল গাদ্দাফিকে মুক্তি দিতে লিবিয়ার কর্তৃপক্ষ ২০২৩ সালে লেবাননের প্রতি আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায়। কারণ হিসেবে বিচারবহির্ভূতভাবে কারাবন্দী থাকার প্রতিবাদে অনশন করায় তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

লিবিয়ার প্রসিকিউটর জেনারেল আল-সাদিক আল-সুর লেবাননের প্রসিকিউটর জেনারেল ঘাসান উয়েদাতকে ওই অনুরোধ পাঠিয়েছিলেন। আল-সুর অনুরোধে উল্লেখ করেন, হানিবালকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে লেবাননের সহযোগিতা আল-সদরের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় সত্য উদ্‌ঘাটনে সাহায্য করতে পারে।

আরও পড়ুনগাদ্দাফি হত্যার এক দশক, ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন লিবিয়াবাসীর১৯ অক্টোবর ২০২১

সম্পর্কিত নিবন্ধ